১৫ দিনের নার্সিং ও ডাক্তারিতে ডিপ্লোমা কোর্সের প্রস্তাব তীব্র প্রতিবাদ এম এস সি-র

মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র ১১ মে এক বিবৃতিতে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আবারও ১৫ দিনের নার্স এবং ডাক্তারির ডিপ্লোমা কোর্স চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সেই সমস্ত ডিপ্লোমাধারী ডাক্তারদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজে লাগানোর কথা বলেছেন। আমরা এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছি।

অনেক বিজ্ঞানভিত্তিক পর্যালোচনার পর এবং ভোর কমিটির সুপারিশে ভারতে একজন এমবিবিএস ডাক্তার হতে ন্যূনতম সময় ধার্য হয়েছে সাড়ে পাঁচ বছর এবং তা চিকিৎসা বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ কোর্স সম্পন্ন করতে অত্যন্ত জরুরি। এ ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী অবিবেচকের মতো অবৈজ্ঞানিকভাবে যে ডিপ্লোমা চিকিৎসকের প্রস্তাব দিলেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং গ্রামীণ মানুষদের স্বাস্থ্য থেকে বঞ্চিত করবে। এর সাথে ১৫ দিনের নার্সিং চালু করার ভ্রান্ত নীতিরও আমরা বিরোধিতা করছি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার প্রবর্তিত স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিষয়ক সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন গ্রামের মানুষের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরিবর্তে বিএসসি নার্সদের দিয়ে কমিউনিটি হেলথ অফিসার পোস্টে নিয়োগ করে ডাক্তারের দায়িত্ব সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করে গ্রামীণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকার তা পুরোপুরি কার্যকর করেছে। আমরা এরও প্রতিবাদ করছি।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে ডাক্তারিতে প্রায় ৪০০০ আসন আছে। পাস করার পরেও অনেকে জেনারেল ডিউটি মেডিকেল অফিসার হিসাবে নিযুক্ত হতে পারছেন না। সাম্প্রতিক হিসাব বলছে, সরকারি চাকরিতে নিয়োগে প্রয়োজনীয় ডাক্তারের থেকে আবেদনকারী ডাক্তারের সংখ্যা বেশি। ফলে এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তাররা গ্রামে বা সরকারি চাকরিতে যেতে চান না– এই সরকারি প্রচার একেবারেই সত্য নয়। আসলে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সরকারি পরিকাঠামোর অভাব এবং প্রয়োজনীয় কর্মী নিয়োগ না করার অভিসন্ধিই এই প্রস্তাবে স্পষ্ট।

উল্লেখ্য ‘বেয়ার ফুটেড ডক্টর’ নামে আশির দশকে সিপিএম সরকার, ২০০৮-২০০৯ সালে কেন্দ্রে কংগ্রেস পরিচালিত ইউপিএ সরকার ও রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার নানা নামে নানা অছিলায় ডাক্তারিতে সাড়ে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ডাক্তারি ছাত্র, চিকিৎসক সমাজ সহ সর্বস্তরের মানুষের আন্দোলনের চাপে সেই অবৈজ্ঞানিক বিল বাতিল করতে বাধ্য হয়।

এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের এই ভ্রান্তনীতির প্রতিবাদে মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার বৃহত্তর জনস্বাস্থ্য আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করছে ও অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবিত নীতি প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছে।