এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)–এর রাজ্য সম্পাদক কমরেড সৌমেন বসু ৯ এপ্রিল এক বিবৃতিতে বলেন,
‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রথম দিন থেকে শেষদিন পর্যন্ত দু–তিনটি জেলার কিছু বিডিও এবং এসডিও অফিস বাদ দিলে সর্বত্র পুলিশ–প্রশাসনকে শিখণ্ডি করে রেখে সমস্ত বিডিও–এসডিও–ডিএম অফিস ঘিরে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত সশস্ত্র মস্তানবাহিনী এক সর্বাত্মক সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করেছে৷ ৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষদিনেও এস ইউ সি আই (সি) প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে পুলিসের উপস্থিতিতেই প্রার্থী, প্রস্তাবক ও দলের কর্মীরা আক্রান্ত হয়ে আহত হয়েছেন, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র, ভোটার কার্ড, কাস্ট সার্টিফিকেট কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, মোটা বাঁশ দিয়ে মেরে অফিস চত্বর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে৷ এর মধ্যেও যাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁদের সেগুলি প্রত্যাহার করার জন্য ইতিমধ্যে নানাভাবে শাসানো চলছে, ঘরবাড়ি লুঠ করার, এমনকী প্রাণে মারার পর্যন্ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে৷ এই মারাত্মক ঘটনাগুলিকে আড়াল করার জন্যই পূর্বতন সরকারের নেতাদের মতোই শাসক নেতারা রসিকতা করে বলছেন, কেউ দাঁড়াতেই চাইছে না, তাই বিরোধী–শূন্য পঞ্চায়েত হবে৷
একথাও আমাদের জানা আছে যে, আগের যে পঞ্চায়েত আইন ছিল, তাতে নির্বাচন ঘোষণার দিন থেকে পুলিশ ও সাধারণ প্রশাসন (ডিএম, এসডিও, বিডিও, এসপি, এসডিপিও, ওসি) নির্বাচন কমিশনারের অধীনে থাকত, সরকারের অধীন নয়৷ সেই আইন পূর্বতন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সিপিএম ফ্রন্ট সরকার পরিবর্তন করে নির্বাচন কমিশনারের নিয়ন্ত্রণ বাতিল করে প্রশাসন ও পুলিশকে সরকারের কুক্ষিগত করার মতো নতুন আইন বানালো, যার সুযোগ বর্তমান সরকার নিচ্ছে৷ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার পুলিশ–প্রশাসনকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে আইনকে উপেক্ষা করে গুন্ডাশাহী প্রতিষ্ঠা করে রাজ্যের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করেছে৷ রাজ্যের সমস্ত গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে গণতন্ত্র হত্যার বিপজ্জনক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে আহ্বান জানাচ্ছি৷ নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও অধিকার খর্ব করে নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার প্রতিবাদে আমাদের দল আগামী ১২ থেকে ১৮ এপ্রিল ‘প্রতিবাদ সপ্তাহ’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷’’
70 Year 34 Issue13 April, 2018