সমস্ত অ-হিন্দিভাষীদের উপর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা করে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১০ এপ্রিল এক বিবৃতিতে বলেন,
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদীয় সরকারি ভাষা কমিটির ৩৭তম মিটিং-এ বলেছেন, হিন্দি হবে ভারতের একমাত্র ও সব ভাষাভাষীদের সংযোগ রক্ষাকারী সরকারি ভাষা। অথচ ১৯৬৩ সালে সংসদে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ঘোষণা করেছিলেন, হিন্দির পাশাপাশি ইংরেজিও ভারতের সরকারি ভাষা হিসাবে থাকবে। পরবর্তীকালে লালবাহাদুর শাস্ত্রী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই নীতি আবার গৃহীত হয়েছিল। বর্তমান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য এর ঠিক বিপরীত। এখন অমিত শাহ ঠিক উল্টো পথে হেঁটে ইংরেজিকে বাতিল করে হিন্দি চাপিয়ে দিতে চাইছেন। ভারতের মতো বহু ভাষাভাষী দেশে অ-হিন্দিভাষী জনগণের উপর হিন্দি চাপানোর এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ইংরেজি হল ভারতীয়দের কাছে প্রতিটি ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক জ্ঞান অর্জনের দরজা। দেশের সাধারণ মানুষ এর প্রয়োজনীয়তা বোঝেন। অথচ এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষ ইংরেজি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। বিপরীতে ধনী পরিবারের লোকেদের এই শিক্ষার সুযোগ থাকবে। ফলে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে বৈষম্য আরও বাড়বে।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান’ স্লোগানকে কার্যকর করতে এবং জনগণকে ধর্মীয়, ভাষাগত এবং আঞ্চলিকতার ভিত্তিতে বিভক্ত করতে চাইছে। মানুষ যখন পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, ট্যাক্সবৃদ্ধি, বেকারত্বের অবর্ণনীয় যন্ত্রণা ভোগ করছেন, তখন বিজেপি সরকার এই সব জ্বলন্ত সমস্যাগুলি থেকে মানুষের দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে।
আমরা বিজেপির অগণতান্ত্রিক ও অবৈজ্ঞানিক এই ভাষা নীতির তীব্র নিন্দা করছি, জনগণকে তা প্রতিরোধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। সবশেষে জনসাধারণকে সরকারের নানা জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে চলতে থাকা গণআন্দোলনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং শোষিত জনগণের দীর্ঘদিনে গড়ে ওঠা ঐক্যে কোনও ফাটল ধরাতে না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।