গত তিন মাস ধরে একের পর এক গণবিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠছে হাইতি৷ নতুন বাজেটে কর ও বিভিন্ন ফি ব্যাপক ভাবে বাড়ানোর সুপারিশ করেছে হাইতির সরকার৷ এর বিরুদ্ধে দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে হাইতির খেটে খাওয়া মানুষ৷ চলেছে ধর্মঘট৷
আমেরিকা লাগোয়া ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ছোট্ট দ্বীপ হাইতি এই এলাকার সবচেয়ে দরিদ্র দেশ৷ বছরের পর বছর ধরে স্পেনীয়, ফরাসি এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের শোষণ ছিবড়ে করে দিয়েছে ছবির মতো সুন্দর এবং প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হাইতিকে৷ এখন শোষকের ভূমিকায় সামিল দেশের বুর্জোয়া সরকার৷ এমনিতেই গত ২০১০ সালে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছিল হাইতি৷ মৃত্যু হয়েছিল হাজার হাজার মানুষের৷ ৩০ লক্ষ মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল৷ গত বছর হারিকেন ঝড়েও বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে হাইতির মানুষ৷ এর উপর গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো কর ও ফি বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তে খেপে উঠেছে সেখানকার জনগণ৷
সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস জুড়ে রাজধানী পোর্ট অ প্রিন্স সহ পেটিট–গোয়াভে, সেন্ট মার্ক ইত্যাদি শহরে দিনের পর দিন ব্যাপক বিক্ষোভ দেখায় মানুষ৷ ধর্মঘটে স্তব্ধ হয়ে যায় দোকান–বাজার, স্কুল–কলেজ৷ সরকারি দপ্তরগুলির দরজা খোলা থাকলেও কর্মচারীরা কাজ বয়কট করেছেন৷ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ধুন্ধুমার বাধিয়েছে পুলিশ৷ গ্রেপ্তার হয়েছে অসংখ্য আন্দোলনকারী৷ আহত বহু জন৷ হাইতির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ক্যাপ–হাইতিয়েনে গত দু’ মাস ধরে বেতন পাননি শিক্ষকরা৷ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে ছাত্রছাত্রীরা৷ ক্লাসঘরের বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিল দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তারা৷ স্লোগান উঠেছে– ‘সেনা খাতে খরচ কমাও, শিক্ষা খাতে খরচ বাড়াও’৷ বিক্ষোভ ঠেকাতে শুধু কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করেই ক্ষান্ত হয়নি পুলিশ, গুলিও চালিয়েছে৷
বিশ্ব জুড়ে পুঁজিবাদ–সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে চলছে বিদ্রোহের মিছিল৷ তাতে সামিল হাইতিও৷