গণদাবী ৭০ বর্ষ ৪৬ সংখ্যায় প্রকাশিত ‘মাশুল কমানোর দাবি এড়াতেই লোকসানের গল্প’ শীর্ষক সংবাদ প্রসঙ্গে এই চিঠি৷ বলা হয়েছে, বিদ্যুতে লোকসান কমানোর জন্য মুখ্যসচিবকে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করার পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷ বর্তমানে বিদ্যুৎ মাশুল বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন রকম৷ সর্বনিম্ন মাশুল গোয়ায়, প্রতি ইউনিট ১.৭০ টাকা এবং সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে ৮.৯৯ টাকা প্রতি ইউনিট৷ বিদ্যুৎ সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমার মনে হয়, ব্যবহারের পরিমাণ নির্বিশেষে বাস্তবসম্মত বিদ্যুৎ মাশুল হওয়া উচিত ইউনিট প্রতি ৩.৫০ টাকা৷ মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, ছত্তিশগড়, উত্তরাখণ্ড, বিহার, ঝাড়খণ্ড, গুজরাট ও কেরালায় বিদ্যুৎ মাশুল ইউনিট প্রতি ৩.৫০ টাকার আশপাশে৷
আমার মতে, বিদ্যুৎ মাশুলের বর্তমান হার কমাতে হবে– এই দাবির পরিবর্তে অ্যাবেকার পক্ষ থেকে ইউনিট প্রতি ৩.৫০ টাকা বা এই রকম একটি সুনির্দিষ্ট মাশুলের দাবি জানানো প্রয়োজন৷ মাশুলের এই হার জ্বালানির দামের মতো গোটা দেশে একইরকম হওয়াও দরকার৷ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ যদি জানায় যে তাদের পক্ষে এই দাবি মানা সম্ভব নয়, তখন তাদের সঙ্গে দর–কষাকষির কথা ভাবা যাবে৷ এছাড়া, যে সব গ্রাহক মাসে ৪০০ ইউনিটের কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে দিল্লির উদাহরণ অনুসরণ করে সর্বসম্মত অভিন্ন হারের ৫০ শতাংশ মাশুল ধার্য করা উচিত৷
প্রসঙ্গত, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দর–কষাকষির ক্ষেত্রে শ্রমিক সংগঠনগুলি সবসময় সুনির্দিষ্ট মজুরি ও বেতনের দাবি তুলে থাকে৷ অস্পষ্ট বক্তব্য নয়, সুনির্দিষ্ট দাবি–দাওয়াই সমস্যার সমাধান করতে পারে৷
ডঃ সমীর দাশগুপ্ত, সল্টলেক, কলকাতা
গণদাবীর সংযোজন
পত্রলেখকের মূল বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করে অ্যাবেকার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সুনির্দিষ্টভাবেই ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ মাশুল কমানোর দাবি করা হয়েছে, যা প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখিত হয়নি৷ বর্তমানে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানিতে গড় মাশুল প্রতি ইউনিট ৭ টাকা ১২ পয়সা এবং সিইএসসিতে ৭ টাকা ৩১ পয়সা৷ বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ কোথায় কোথায় কমেছে এবং ৫০ শতাংশ মাশুল কমানো কেন সম্ভব সেটাও অ্যাবেকার সার্বিক বক্তব্যে আছে, যা সংবাদের উদ্দেশ্যের সাথে সাযূজ্যপূর্ণ নয় বলে এখানে প্রকাশ করা হয়নি৷ যদিও গণদাবীর অন্যান্য সংখ্যায় এ বিষয়ে লেখা আছে৷
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতের বছর বছর মাশুল বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন গত দু’বছর (২০১৬–১৭, ২০১৭–১৮) বন্ধ করেছে৷ আন্দোলনের চাপেই এটা সম্ভব হয়েছে৷ যদিও এখনও মাশুল কমাতে বাধ্য করা যায়নি৷ এই আন্দোলনে পত্রলেখক সহ সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণ অ্যাবেকা প্রত্যাশা করে৷
(৭০ বর্ষ ৪৮ সংখ্যা ২০ জুলাই, ২০১৮)