মানব ইতিহাসে সর্বপ্রথম মার্কসবাদকে হাতিয়ার করে মহান লেনিন এবং তাঁর ছাত্র সুযোগ্য সহযোদ্ধা মহান স্ট্যালিনের নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে রাশিয়ার বুকে সফল হয় পুঁজিবাদ বিরোধী সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব। প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বের প্রথম শোষণমুক্ত শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্র। বিংশ শতাব্দীর সব থেকে মহৎ ও যুগান্তকারী এই ঘটনা দেশে দেশে শোষিত মানুষকে শুধু অনুপ্রাণিতই করেনি, বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদীদের রাতের ঘুমও কেড়ে নিয়েছিল। পরবর্তীকালে মানবসভ্যতার গতিপথ নির্ধারণের ক্ষেত্রেও এই নভেম্বর বিপ্লবসৃষ্ট সমাজতন্ত্র নির্ণায়ক ভূমিকা গ্রহণ করেছিল।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই সময় ভারতে দীর্ঘদিনের ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আপসহীন বিপ্লবী ধারা ধীরে ধীরে শক্তি সঞ্চয় করছে। ক্ষুদিরাম, প্রফুল্ল, কানাই, সত্যেনের আত্মোৎসর্গ বাংলার মাটিকে উর্বর করে তুলেছিল। ভারতীয় যুবকদের মধ্যে ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের আকাঙক্ষা তীব্র হচ্ছিল। ঠিক এরকমই একটি প্রেক্ষাপটে বেজে উঠল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা। বাংলাতে ছাত্র যুবকদের মধ্যে গুঞ্জন উঠলো এই সুযোগে, দেশকে স্বাধীন করতে হলে অস্ত্র ধরতে হবে। আর অস্ত্র চালানো শিখতে হলে জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও ব্রিটিশ বাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধবিদ্যা শিখে নিতে হবে। পত্র-পত্রিকায় জোরালো লেখালেখি শুরু হল বাঙালীদেরও সৈন্য দলে ভর্তি করা হোক। কিন্তু ব্রিটিশরা বাঙালীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিতে কোনওমতেই ভরসা পাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে অধিক সংখ্যক সৈন্যের প্রয়োজনে তারা একটি বেঙ্গলি ডবল কোম্পানি গঠন করতে বাধ্য হল। দেখতে দেখতে কোম্পানির আয়তন বাড়তে বাড়তে ৪৯ নম্বর বেঙ্গলি রেজিমেন্ট গঠিত হল।
মহান মানবতাবাদী কবি নজরুল ইসলামের বয়স তখন মাত্র ১৭। তিনি যুদ্ধবিদ্যা শেখবার ইচ্ছায় নজরুলও বাহিনীতে যোগ দিয়ে পৌঁছলেন করাচিতে।
আর ঠিক এমনই একটি মুহূর্তে ঐতিহাসিক সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ছে গোটা বিশ্বে। সেনাবাহিনীতে থাকাকালীনই মহান নভেম্বর বিপ্লবের সাফল্যে ও শোষিত মানুষের মুক্তিবাহিনী লালফৌজের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের খবর এসে পৌঁছল নজরুলের কাছেও।
১৯৫৭ সালের ৬ জুন চুঁচুড়ার প্রাণতোষ চট্টোপাধ্যায়কে ব্রিটিশ বাহিনীর ৪৯ নম্বর বাঙালি রেজিমেন্টের জমাদার শম্ভু রায় একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, সে সময় করাচিতে তাঁদের ব্যারাকের প্রতি কর্তৃপক্ষের তীক্ষ® নজরের কথা। কোনওরকম রাজনৈতিক সাহিত্য বা সংবাদের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। সেন্সারিং-এর ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছিল। কিন্তু নজরুল অদ্ভুত গোপনীয়তায় ঠিক সুড়ঙ্গপথ তৈরি করে নিয়েছিলেন, যে পথে নিষিদ্ধ পুস্তক, পত্রপত্রিকা, রাওলাট বা সিডিশন কমিটির রিপোর্ট তাঁর হাতে এসে যেত। রুশ বিপ্লব সম্বন্ধেও নিষিদ্ধ সাহিত্য নজরুলের হাতে চলে আসতো। একদিন নজরুল তাঁর নিজের ঘরের সামনে ‘অন্যরকম’ একটি উৎসবের আয়োজন করেন।
শম্ভু রায় লিখছেন, ‘‘নজরুল তার বন্ধুদের মধ্যে যাদের বিশ্বাস করত, তাদের এক সন্ধ্যায় নিমন্ত্রণ করে। দেখলাম অন্যান্য দিনের চেয়ে নজরুলের চোখে মুখে একটা অন্যরকম জ্যোতি খেলে বেড়াচ্ছিল। নিত্যানন্দ দে অর্গ্যানে একটা মার্চিং গৎ বাজানোর পর নজরুল সে দিন যে সব গান গাইলেন এবং প্রবন্ধ পড়লেন তা থেকে আমরা জানতে পারলাম যে, রাশিয়ার জনগণ জারের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে। গান বাজনা প্রবন্ধ পাঠের পর রুশ বিপ্লব সম্বন্ধে আলোচনা হয় এবং লালফৌজের দেশপ্রেম নিয়ে নজরুল খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। ঠিক মনে নেই, সে গোপনে আমাদের একটি পত্রিকা দেখায়, ওই পত্রিকাতে আমরাও বিশদভাবে সংবাদটি দেখে উল্লসিত হয়ে উঠি। সেদিন সারারাতই প্রায় হৈ-হুল্লোড়ে আমাদের কেটে গিয়েছিল।”
এরপর নজরুল ব্রিটিশ ব্যারাক থেকেই ‘‘ব্যথার দান” গ্রন্থটি লেখেন। এই গল্পের নায়ক ছিল ভারতীয়, সে ছিল ব্রিটিশের সৈনিক, পালিয়ে গিয়ে লালফৌজে যোগ দেয়। ‘‘ব্যথার দান” গল্পের চরিত্র ‘‘দারা” ও ‘‘সয়ফুলমুল্ক” সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের বিরুদ্ধে লালফৌজে যোগ দিয়ে রুশ বিপ্লবকে রক্ষা করতে চলেছে। গল্পে ‘‘সয়ফুলমুল্ক” বলছে, ‘‘…ঘুরতে ঘুরতে শেষে এই লালফৌজে যোগ দিলুম। এ পরদেশীকে তাদের দলে আসতে দেখে তারা খুব উৎফুল্ল হয়েছে। মনে করেছে এদের এই মহান নিঃস্বার্থ ইচ্ছা বিশ্বের অন্তরে অন্তরে শক্তি সঞ্চয় করছে। আমায় আদর করে এদের দলে নিয়ে এরা বুঝিয়ে দিলে যে কত মহাপ্রাণতা আর পবিত্র নিঃস্বার্থপরতা প্রণোদিত হয়ে তারা উৎপীড়িত বিশ্ববাসীর পক্ষ নিয়ে অত্যাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং আমিও সেই মহান ব্যক্তিসঙ্ঘের একজন।
কিন্তু সহসা এ কী দেখলুম? দারা কোথা হতে এখানে এল? সেদিন তাকে অনেক করে জিজ্ঞাসা করায় সে বললে ‘‘এর চেয়ে ভালো কাজ আর দুনিয়ায় খুঁজে পেলুম না, তাই এ দলে এসেছি।”
দুঃসাহসী নজরুল ব্রিটিশ ব্যারাকে বসে ‘লালফৌজ’ গল্প লিখতে ভয় পাননি। তিনি সেই গল্পটি ছাপানোর জন্য তাঁর বন্ধু ও পরবর্তীকালে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুজফফর আহমেদের কাছে পাঠান। মুজফফর আহমেদ স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘‘… নজরুল যখন ‘ব্যথার দান’ গল্পটি আমাদের নিকট পাঠিয়েছিল তখন তাতে এই দু’জনের লালফৌজে যোগ দেওয়ার কথাই,…ছিল। আমি তা থেকে লালফৌজ কেটে দিয়ে তার জায়গায় ‘মুক্তিসেবক সৈন্যদের দল’ বসিয়ে দিয়েছিলাম। ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ ভারতে ‘লালফৌজ’ শব্দটি উচ্চারণ করাও দোষের ছিল। সেই ‘লালফৌজ’-এ ব্রিটিশ ভারতের লোকেরা যে যোগ দেবে তা যদি গল্পেও হয়, তা পুলিশের পক্ষে হজম করা মোটেই সহজ হত না।” অথচ এই গল্পটি সঠিকভাবে প্রকাশিত হলে তৎকালীন সময়ে এ দেশের বিশেষত বাঙালি ছাত্র-যুবকদের মধ্যে নভেম্বর বিপ্লব সম্পর্কে কী প্রবল আকর্ষণ সৃষ্টি হতে পারত! নজরুল যে সাহস দেখিয়েছিলেন মুজফফর আহমেদ সাহেবদের তা ছিল না।
যাই হোক, নজরুল যা লিখেছিলেন তা তাঁর কল্পনা ছিল না। বাস্তবিকই বহু ভারতীয়, বিশেষত ভারতীয় সৈনিকরা ব্রিটিশ সেনাবাহিনী থেকে গোপনে অথবা যুদ্ধ করে পালিয়ে গিয়ে লালফৌজে যোগ দিয়েছিলেন। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের মেহনতি জনগণের সাথে কিছু দুঃসাহসী ভারতীয়ও সোভিয়েত বিপ্লবকে তাদের নিজেদের বিপ্লব মনে করে শিশু সমাজতন্ত্রকে রক্ষার জন্য লালফৌজকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন।
১৯৫৭ সালে মস্কো থেকে প্রকাশিত ‘‘তাঁরা একত্রে লড়েছিলেন” বই দেখাচ্ছে, ‘‘লালফৌজের যে সব আন্তর্জাতিক ইউনিট দক্ষিণ রাশিয়ায় যুদ্ধ করছিল, তাতে ভারতীয়রাও ছিলেন। তাঁরা ১৯১৮ সালে দখলকার ব্রিটিশ ফৌজের সঙ্গে ইরান থেকে ট্রান্সককেসাসে এসেছিলেন। ব্রিটিশ অফিসাররা ভয় করছিলেন, এই সৈনিকদের মনে ‘লালদের ভাবধারার ছোঁয়াচ’ লেগে যেতে পারে। তাই তাঁরা ভারতীয় সৈন্যদের ওপরে কড়া নজর রেখেছিলেন। ভারতীয় সৈন্যদের বারণ করে দেওয়া হয়েছিল যে তাঁরা যেন স্থানীয় লোকেদের সঙ্গে মেলামেশা না করেন। কিন্তু ব্রিটিশ অফিসারদের এই সাবধানতা কোনও কাজেই লাগল না। পুরু দেওয়াল ঘেরা ব্যারাকের ভিতরেও বিপ্লবী ভাবধারা প্রবেশ করল। ভারতীয় সৈন্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিল এবং তাঁদের মধ্য হতে কিছু সংখ্যক সৈন্য তাঁদের বেয়োনেট ব্রিটিশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে তুলে ধরে, সোজা গিয়ে লালফৌজে যোগ দিলেন।
নিকোলাই গিকালো পরিচালিত সৈন্যদলে যে-সকল ভারতীয় সৈন্য ছিলেন তাঁরা দাগিস্তান ও কাবার্দার পার্বত্য অঞ্চলে লড়াই করতেন। এই সৈন্যদের মুর্তজা আলি নামে এক ভারতীয় অফিসারের সাহসিকতার কথা আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে। তিনি শ্বেত কসাক প্রতিবিপ্লবীদের কাছে ভয়ের প্রতিমূর্তি স্বরূপ ছিলেন। তাঁর সাহস, নির্ভীকতা ও উপস্থিত বুদ্ধির জন্যে তাঁর নাম রূপকথার পর্যায়ে পৌঁছেছিল।
পিয়াটিগরস্ক শহরে প্রকাশিত ‘কমিউনিস্ট পাথ’ পত্রিকা ১৯২২ সালে লিখেছিল যে গিকালোর গ্রুপে শেষ যাঁরা ছিলেন তাঁদের একজন ছিলেন মুর্তজা আলি। তিনি কৌশলী পার্বত্য যোদ্ধা ছিলেন, শ্বেত প্রতিবিপ্লবীদের চোখে তিনি ছিলেন মূর্তিমান ভীতিস্বরূপ। বাজপাখি যেমন তার শিকারের ওপরে ছোঁ মারে, তেমনি ছোঁ মারতেন তিনি শত্রুদের ওপরে।
গৃহযুদ্ধের বীর যোদ্ধা গিকালোর বোন ভেরা ফিয়োজবনা গিকালো তাঁর ভাইয়ের সৈন্যদলভুক্ত আন্তর্জাতিকতাবাদীদের সম্বন্ধে তাঁর স্মৃতি থেকে বলেন, ‘‘আমি যখন আজকাল সোভিয়েত দেশ ও ভারতের দুই মহান জনগণের ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের কথা পড়ি তখন আমার মনে পড়ে সেই সব সাহসী অথচ বিনয়ী আন্তর্জাতিকতাবাদী যোদ্ধাদের কথা। হতে পারে সংখ্যায় তাঁরা কম ছিলেন, কিন্তু বীরযোদ্ধা মুর্তজা আলির মতোই তাঁরা যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করতে পিছপা হননি। আমাদের বন্ধুত্ব যুদ্ধের ময়দানে রক্তের অক্ষরে চির অক্ষয় থাকবে। জাতিতে জাতিতে বন্ধুত্ব চিরজীবী হবে।”
এম এন রায় তাঁর স্মৃতিকথার ‘লাইফ ইন সেন্ট্রাল এশিয়া’ অনুচ্ছেদে আরও অনেক ভারতীয় সৈনিকদের লালফৌজে যোগদান প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘ইরানের খোরাসান প্রদেশ ব্রিটিশ সৈন্যরা দখল করে রেখেছিল। এই ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর ভিতরে ছিল অনেকগুলি ভারতীয় ইউনিটও। ভারতীয় সৈন্যরা বেশি সংখ্যায় ব্রিটিশ বাহিনী ত্যাগ করে চলে যাচ্ছিল। তাঁদের মধ্য হতে কিছু লোক তুর্কির হয়ে লড়াই করার জন্যে আনাতোলিয়া যেতে চেয়ে অসফল হয়েছিলেন। তাঁরা বাকু কংগ্রেসেও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু বাকিরা লাল ফৌজের ইন্টারন্যাশনাল ব্রিগেডে যোগ দিলেন। তাঁরা ভারতের পাঠান সৈন্য ছিলেন। রাইফেলের যুদ্ধে তো তাঁদের তুলনা ছিল না, কিন্তু ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীতে ভারতীয় সৈন্যদের আর্টিলারি ও মেশিনগান ইত্যাদি ব্যবহার করতে দেওয়া হত না। ইন্টারন্যাশনাল ব্রিগেডে যোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের এই সব হাতিয়ার ব্যবহার করতে দেওয়া হল। তাতে ভারতীয় সৈন্যদের উৎসাহ দ্বিগুণ বেড়ে গেল। এত তাড়াতাড়ি তাঁরা এই সব জটিল উচ্চপর্যায়ের অস্ত্রের ব্যবহার শিখে নিলেন যে, সকলে আচর্য হয়ে গেলেন। তা ছাড়া, গেরিলা যুদ্ধ অভিজ্ঞ রুশ সৈন্যরা তাঁদের গেরিলা যুদ্ধের শিক্ষাও দিলেন। প্রথমে রুশ অফিসাররা তাঁদের যুদ্ধে পরিচালিত করছিলেন, কিন্তু অল্পদিনের ভিতরেই ভারতীয় সৈন্যদের প্রমোশন দিয়ে অফিসারের পদ দেওয়া হল। তাতে তাঁদের উৎসাহ আরও বাড়ল। নতুন নতুন ভারতীয় সৈন্য ব্রিটিশ বাহিনী ছেড়ে আসতে লাগল। ইরানি বিপ্লবী সৈন্যরাও লালফৌজের আন্তর্জাতিক ব্রিগেড গঠন করেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ভারতীয় ব্রিগেডের যোগাযোগ হল।
ব্রিটিশ হেড কোয়ার্টার্স ছিল মাশহাদে। লালফৌজের ইন্টারন্যাশনাল ব্রিগেডভুক্ত ভারতীয় সৈন্যরা মাশহাদ-আশকাবাদ (আশকাবাদ এখন তুর্কমেনিস্তান রিপাবলিকের রাজধানী) রোডের ধারে ধারে ব্রিটিশ সৈন্যদের আচমকা আক্রমণ করে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছিলেন। তা ছাড়া, তাঁরা ক্রাসনোভস্ক-মার্চ রেলওয়েকে নিরাপদ রাখলেন যার ফলে ককেসাস থেকে সেন্ট্রাল এশিয়ায় পেট্রল পাঠানোয় সুবিধা হয়ে গেল।
এ কথা ভাবতেও আজ অবাক লাগে– তখন চারিদিকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বিধ্বস্ত পরিস্থিতি, এ দেশে তখন নেই কোনও কমিউনিস্ট পার্টির উপস্থিতি, অথচ একদল ভারতীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রকে চোখের মণির মতো রক্ষা করবার জন্য জীবন মরণ পণ করে আন্তর্জাতিকতাবাদের ঝান্ডা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছিলেন।
অত্যন্ত বেদনার হলেও তাঁদের ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের কাছে অজানা। হয়তো আগামী দিনের গবেষণায় ইতিহাসের এই অত্যন্ত গৌরবময় অথচ অনালোকিত দিকটি দেশের মুক্তিকামী মানুষের সামনে উন্মোচিত হবে।