বিজেপির মুখপাত্রদের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১২ জুন এক বিবৃতিতে বলেন,
বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারা নিযুক্ত দলের দুই জাতীয় মুখপাত্র চরম নিন্দনীয় এবং ক্ষমার অযোগ্য যে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন তা তাঁদের ব্যক্তিগতও নয়, আকস্মিকও নয়। এটা জনসাধারণকে ধর্মের ভিত্তিতে বিভক্ত করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি ও দাঙ্গায় উস্কানি দিয়ে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ক তৈরির হীন প্রচেষ্টা। সংঘ পরিবার এবং বিজেপি তাদের নির্বাচনী স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুত্বের ‘গৌরবগাথা’ প্রচার এবং ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক ঘৃণা সৃষ্টির যে চেষ্টা চালাচ্ছে এটা তারই ফসল। উপরন্তু এর মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সংস্কৃতি সৃষ্টির লক্ষ্যে ধর্মান্ধ হিন্দু মৌলবাদকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। একই সাথে এর দ্বারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে প্ররোচিত করে তাদের ইসলামিক মৌলবাদের শিকারে পরিণত করার অপচেষ্টা চলছে, যাতে তা বিজেপি-সংঘ পরিবারের পক্ষে হিন্দু মৌলবাদকে আরও শক্তিশালী করার কাজে সহায়ক হয়। বর্তমানে, যাঁরা এখানে সেখানে বিচ্ছিন্ন ও অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটাচ্ছেন তাঁরা কার্যত বিজেপি-সংঘ পরিবারের এই ষড়যন্ত্রকেই সাহায্য করছেন।
লক্ষণীয়, যে সব ইসলামিক দেশের সঙ্গে ভারতীয় বহুজাতিক পুঁজিমালিকদের ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত এবং ভারতীয় অর্থনীতি বাণিজ্যিক ভাবে যে দেশগুলি থেকে লাভবান হয় তাদের দ্বারা তীব্র সমালোচিত হওয়ার পরও বিজেপি নেতাদের ঘুম ভাঙতে বেশ কয়েক দিন সময় লেগেছে এবং তারা তাদের মুখপাত্রদের ‘নগণ্য ব্যক্তি’ হিসাবে দেখিয়ে লঘুদণ্ড দিয়েছেন। এটা সাধারণ মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।
শুধু ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপরেই নয়, এই পরিকল্পিত এবং ভয়াবহ আক্রমণ চালানো হচ্ছে সেকুলার মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপরেও, যা আরও ভয়ঙ্কর।
এই ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের নিন্দা জানানোর জন্য কোনও ভাষাই যথেষ্ট নয়। এই সঙ্কটজনক সময়ে প্রয়োজন সকল স্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ও সংগঠিত করে এই ভয়াবহ বিপদকে প্রতিহত করা।