আহত ৩৪, গুরুতর ৬, গ্রেফতার ৯০
নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা পাচার, গোরু পাচারের মাথাদের আড়াল করা চলবে না– এই দাবিতে ৪ ডিসেম্বর বিধানসভার গেটে আছড়ে পড়ল তুমুল বিক্ষোভ। দুশোর বেশি এস ইউ সি আই (সি) কর্মী-সমর্থক ওই দিন দুপুরে বিধানসভার উত্তর গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করা মাত্র ঝাঁপিয়ে পড়ে বিরাট পুলিশ বাহিনী। বিক্ষোভকারীরা শান্তিপূর্ণভাবে স্লোগান তোলেন– দুর্নীতিগ্রস্তদের গ্রেফতার করো, মূল্যবৃদ্ধি রদ করো, সারের কালোবাজারি বন্ধ করো, বিদ্যুৎ গ্রাহকদের লুঠের যন্ত্র স্মার্ট মিটার চালু করা চলবে না, শিক্ষক ও সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য ডিএ দিতে হবে ইত্যাদি। শান্তিপূর্ণ এই বিক্ষোভে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ভূমিকা নেয় পুলিশ। তারা যথেচ্ছভাবে বিশেষত বিক্ষোভকারীদের তলপেট লক্ষ্য করে লাথি ঘুসি মারতে থাকে, তিনজন মহিলা কর্মীর জামা ছিঁড়ে দেয়। এরপরেও বিক্ষোভ দমাতে না পেরে লাঠির ঘায়ে অনেককে আহত করে। আহত হন ৩৪ জন বিক্ষোভকারী। তাদের মধ্যে ৬ জনের আঘাত গুরুতর, একজনকে কলকাতা মেডিকেল কলেজে পুলিশই নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পুলিশ ৯০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ যেভাবে মহিলাকর্মীদের জামাকাপড় ছিঁড়ে দিয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে দলের পক্ষ থেকে জাতীয় ও রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের কাছে দাবি জানানো হয়, বিক্ষোভরত মহিলাদের সাথে অশালীন আচরণকারী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই অত্যাচারকে ধিক্কার জানিয়ে ওই দিনই কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এস ইউ সি আই (সি)-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ৫ ডিসেম্বর রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ দিবস পালনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, জনজীবনের সংকট নিয়ে ভোটবাজ দলগুলির কোনও মাথাব্যথা নেই। তারা সংকীর্ণ নির্বাচনী স্বার্থে একে অপরের বিরুদ্ধে গরম গরম স্লোগান দেয়। ক্ষমতাসীনরা সরকারি এজেন্সিকে বিরোধীদের শায়েস্তা করার কাজে লাগায়। দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে দল বদলে শাসকদলে নাম লেখানোর হিড়িক পড়ে যায়। আসলে বুর্জোয়া ব্যবস্থার কল্যাণে সমস্ত ভোটবাজ দলই আজ দুর্নীতিগ্রস্ত, তাই এরা কেউই দুর্নীতির উচ্ছেদ করতে পারে না। এর বিপরীতে জনজীবনের জ্বলন্ত সমস্যাগুলি নিয়ে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এস ইউ সি আই (সি) সংগ্রামী বামপন্থার লাইনে আন্দোলন করে চলেছে। কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারের বিরুদ্ধেই আন্দোলন গড়ে তুলছে। তিনি আগামী আন্দোলনের কর্মসূচিগুলি ঘোষণা করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পলিটবুরো সদস্য কমরেড অমিতাভ চ্যাটার্জী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড অশোক সামন্ত ও প্রাক্তন সাংসদ কমরেড তরুণ মণ্ডল।