নাগরিক প্রতিরোধ মঞ্চের রাজ্য আহ্বায়ক ডাক্তার তরুণ মণ্ডল ২৯ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেন, সরকারি অর্থের অনটনের অজুহাতে ওষুধ ছাঁটাই করে কার্যত অর্ধেক করে দেওয়া হয়েছে সেখানে পিজি হাসপাতালের মধ্যে কর্পোরেট হাসপাতালের ধাঁচে প্রাইভেট কেবিন হাসপাতাল তৈরির জন্য ৪৫ কোটি টাকার প্রাথমিক বরাদ্দ মুখ্যমন্ত্রীর এক ‘তুঘলকি বিলাসিতা’। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে সমস্ত সরকারি হাসপাতালে জীবনদায়ী অত্যাবশ্যক ওষুধের সংখ্যা বৃদ্ধি ও তার যোগান নিরবচ্ছিন্ন রাখা প্রয়োজন। যেখানে বেডের অভাবে হাসপাতালের পর হাসপাতাল ঘুরে জেলা থেকে আসা গরিব রোগী রাস্তাতেই মারা পড়ছেন, জেলা ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলি রুগ্ন পরিষেবাহীন দর্শনধারী মাত্র তখন সরকারি হাসপাতালের বরাদ্দ কেটে ধনী উচ্চবিত্ত মানুষজনের মনোরঞ্জনে সরকারি ভাবে কর্পোরেট হাসপাতাল তৈরি ও পরিষেবা প্রদান পরিকল্পনা শুধু জনবিরোধী নয়, গরিব-সাধারণ-নিম্নবিত্ত মানুষের প্রতি চূড়ান্ত অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যের নিদর্শন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় গরিবদের যেমন-তেমন পরিষেবা দিয়ে অর্থবানদের উন্নত পরিষেবার ব্যবস্থা করা নিন্দনীয় শুধু নয়, সাধারণ মানুষের প্রতি চূড়ান্ত অবমাননাকর।
এমনিতেই করোনা অতিমারীতে ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্যকর্মীর অভাবে যেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবার নাভিশ্বাস উঠেছে, সেখানে সরকারি ডাক্তার-নার্সদের নিয়মিত কাজের উপরে আবার কর্পোরেট বিভাগে অতিরিক্ত কাজ চাপানো উভয় ক্ষেত্রের পরিষেবারই বিঘ্ন ঘটাবে। উপরন্তু কর্পোরেট ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা মিলবে বলে সেদিকে কাজ করার প্রবণতা বাড়বে, সাধারণ বিভাগের রোগীর অবহেলা হবে।
অথচ রাজ্যের কর্পোরেট হাসপাতালগুলির ইনডোরে ১০ শতাংশ এবং আউটডোরে ২৫ শতাংশ রাজ্যের রোগীর চিকিৎসা বিনা পয়সায় করার কথা থাকলেও তা মানা হয় না এবং তা নিয়ে সরকারের কোনও মাথাব্যথা নেই। থাকলে বহু গরিব মানুষ উন্নত চিকিৎসা পেতেন। এই নীতি বর্জন করে রাজ্য সরকারের উচিত অবিলম্বে সমস্ত জীবনদায়ী অত্যাবশ্যক ওষুধ-পত্র সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সরবরাহ করা এবং ডাক্তার নার্স স্বাস্থ্যকর্মী সহ অন্যান্য পরিষেবার অভাব অবিলম্বে পূরণ করা।