সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের প্রস্তাব, তীব্র বিরোধিতা এ আই ইউ টি ইউ সি-র

ফাইল ফটো

শ্রমিকদের সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে– লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এন সুব্রহ্মনিয়মের এই প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা করে শ্রমিক সংগঠন এআইইউটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড শংকর দাশগুপ্ত এক বিবৃতিতে বলেন, এই অমানবিক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এআইইউটিইউসি-র সর্বভারতীয় কমিটি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টা (অর্থাৎ দৈনিক আট ঘণ্টা) কাজের অধিকার বিশ্ব জুড়ে শ্রমিক শ্রেণি অর্জন করেছে দশকের পর দশক ধরে বহু লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। এই সংগ্রামের সঙ্গে ঐতিহাসিক মে দিবসের ইতিহাসও অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত হয়ে আছে। আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংঘের কনভেনশনেও বলা হয়েছে, জাতি গঠনে দেশের মানব শক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করা একটি রাষ্ট্রের প্রাথমিক দায়িত্ব। উল্লেখ্য, এই কনভেনশনের অন্যতম স্বাক্ষরকারী আমাদের দেশ ভারত।

বর্তমানে এমন ভাবেই নীতিগুলি নির্ধারিত হচ্ছে যে কাজের সুযোগ দ্রুত কমছে এবং তার অবশ্যম্ভাবী ফল হিসাবে নিযুক্ত শ্রমিকদের উপর কাজের বোঝা বাড়ছে। উত্তরোত্তর বেকার সমস্যা বৃদ্ধিতে কর্মহীন সাধারণ যুবক-যুবতীরা অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে পড়ছে।

এই পরিস্থিতিতে জাতি গঠনের দোহাই দিয়ে সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজের কথা বলার আসল উদ্দেশ্য কর্পোরেট মালিকদের মুনাফা বৃদ্ধি করা। তাদের এই উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে তারা শ্রমিক শ্রেণিকে ঠেলে দিতে চাইছে মধ্যযুগীয় শোষণের দিকে, যা শ্রমিকদের দুর্দশা শুধু বাড়িয়ে তুলবে তাই নয়, একটা বিরাট অংশের বেকার যুবক ও শ্রমজীবী মানুষের কাছ থেকে কাজের সুযোগ ছিনিয়ে নেবে।

দেশের ক্রমবর্ধমান বেকার সমস্যার ভয়াবহ প্রেক্ষিতে যেখানে প্রয়োজন ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে অবিলম্বে ৩৬ ঘণ্টা শ্রমসময় নির্ধারণ করা, সেখানে পুঁজিপতিরা ৯০ ঘণ্টা শ্রমসময়ের কথা শোনাচ্ছে। আমরা সমস্ত শ্রমজীবী মানুষ এবং কর্মসন্ধানী বেকার যুবক-যুবতীদের কাছে সপ্তাহে ৩৬ ঘণ্টা কাজের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।