উত্তর ২৪ পরগণার শ্যামনগরে ওয়েভারলি জুটমিলের মালিক ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সাসপেনসন অফ ওয়ার্ক নোটিশ দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেন। ফলে প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক কাজ হারান। মালিকের এই স্বেচ্ছাচারী নোটিশ দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। গেটের সামনে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এবং ঘোষপাড়া রোড অবরোধ করেন।
মিলের মালিক খুবই সুচতুরভাবে এই কাজ করেছে প্রশাসন ও তথাকথিত বৃহৎ ট্রেড ইউনিয়নগুলির দালাল নেতাদের সহায়তায়। এই মালিক শ্রমিকদের কাছ থেকে ১৮ কোটি টাকা তুলে পিএফ দপ্তরে জমা দেয়নি। অবসরের পর গ্র্যাচুইটির কয়েক কোটি টাকা শ্রমিকদের দেয়নি। শুধু তাই নয় সাপ্তাহিক বেতনের টাকাও না দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে।
কাঁচা পাটের অভাব দেখিয়ে প্রথমে মালিক ২৯ জানুয়ারি লে-অফ ঘোষণা করে। ১২ ফেব্রুয়ারি মিল চালু করলেও শ্রমিকরা বেতন পাননি। ১৮ ফেব্রুয়ারি মালিকপক্ষ জানিয়েছিল তিন দিনের মধ্যে বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু মালিক কারখানার ভিতরে থাকা সমস্ত উৎপাদিত সামগ্রী এই তিন দিনে বিক্রি করে দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ কারখানা বন্ধ করে দেয়। ওই দিন এআইইউটিইউসি-র রাজ্য সম্পাদক কমরেড অশোক দাস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মালিক ও সরকারকে অবিলম্বে কারখানা খুলতে হবে ও সমস্ত শ্রমিককে কাজ দিতে হবে এবং বকেয়া প্রাপ্য বেতন ও গ্র্যাচুইটির টাকা অবিলম্বে শ্রমিকদের দিতে হবে। শ্রমিকদের দেওয়া পিএফ-এর টাকা অবিলম্বে পিএফ দপ্তরে জমা করতে হবে।’
২৩ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সম্পাদক অশোক দাস, রাজ্য সহসভাপতি ও বেঙ্গল জুটমিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক অমল সেন, রাজ্য নেতা বঙ্কিম বেরা, প্রদীপ চৌধুরী, চন্দ্রশেখর চৌধুরী, চটকল শ্রমিক আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা রামজি সিং, করুণ দত্ত সহ ১২ জনের প্রতিনিধি দল বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের সাথে দেখা করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন (ছবি)। সিদ্ধান্ত হয়, শ্রমিকদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ২৭ ফেব্রুয়ারি ব্যারাকপুর এসডিওতে বিক্ষোভ ও ডেপুটেশন দেওয়া হবে। এই আন্দোলনকে দীর্ঘস্থায়ী ও শক্তিশালী করার জন্য সংগ্রাম কমিটি গঠন করার আহ্বান জানান তাঁরা।