স্কুলের শিশুরা মেলায় যাচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় উৎসবে সামিল হচ্ছে। একসাথে খেলছে। শুধু একসাথে পড়তে মানা। সন্দেহ হয়, যে শর্তে বিশ্বব্যাঙ্ক সরকারগুলোকে ঋণ দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে, তার মধ্যে স্কুল বন্ধ রাখাটাও কি একটা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হিসাবে আছে? কেন স্কুল বন্ধ রাখতে চাইছে সরকার? বৃহৎ পুঁজিগোষ্ঠী তাদের অলস পুঁজি নিয়ে মহা চিন্তিত। কোথায় বিনিয়োগ করবে? স্বাস্থ্য বেচায় তারা পুরোপুরি সফল। রাতারাতি ফার্মা ইন্ডাস্ট্রি তাদের সীমাহীন রিটার্ন দিয়েছে। এবার লক্ষ্য শিক্ষা। শিক্ষায় তারা পুঁজি বিনিয়োগ করতে চাইছে। ইতিমধ্যে অনলাইন অ্যাপ বাজার মাতাচ্ছে। কিন্তু বাধা একটাই। সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা। এই ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস না করতে পারলে, মানুষ বিকল্প হিসাবে অনলাইন এডুকেশন কিনবে কেন? তাই কোভিড আতঙ্ক কাজে লাগিয়ে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার মেরুদণ্ডকে তারা ভেঙে দিতে চাইছে।
দীর্ঘদিন শিক্ষার সাথে সম্পর্কহীন হয়ে অভিভাবকরা যাতে অনলাইন এডুকেশন নিয়ে ভাবতে বাধ্য হয়, তার ব্লু প্রিন্ট অনেকদিন আগেই রচিত হয়েছিল। তা হলে কি সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি উঠে যাবে? না, আপাতত উঠবে না। তা হলে গণবিক্ষোভে জেরবার হয়ে সরকারের গদি টলেযেতে পারে। তাই এমন একটা মধবর্তী কৌশল তারা নিতে পারে, যেখানে মানুষকে শান্ত রেখে ধাপে ধাপে তারা এই সরকারি শিক্ষাব্যবস্থার কবর খুঁড়ে দেবে। এমনিতেই সরকারি স্কুলে পাশ-ফেল না থাকায় বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি অনুরাগ বেড়েই চলেছে। এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে তারা স্কুলগুলোকেই স্থায়ী ভাবে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে ফেলেছে। কিছুদিন পরে হয়তো স্কুল খুলবে। কিন্তু এমনভাবে খুলবে যেখানে অভিভাবক মনে করবে, ‘এভাবে পড়াশোনা হয় না।’
সূর্যকান্ত চক্রবর্তী
পূর্ব মেদিনীপুর