কোচবিহারের শীতলকুচির ঘটনা সম্পর্কে এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট) -এর রাজ্য সম্পাদক চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য ১০ এপ্রিল বিবৃতিতে বলেন, ‘পশ্চিমবাংলার নির্বাচনের চতুর্থ দফায় রাজ্যজুড়ে পরিকল্পিত হিংসার ঘটনা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজন সহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা করছি।
আমরা দেখেছি,নির্বাচনের প্রাক মুহূর্ত থেকেই সরকার ও বিরোধী বড় দলগুলোর নেতা-নেত্রীরা যেভাবে তাঁদের বক্তব্যে কুৎসা,কটুক্তি,ব্যক্তিগত গালিগালাজ এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক কথা বলেছেন তাতে বাংলার রাজনীতি যথেষ্ট কলুষিত হয়েছে। চতুর্থ দফার নির্বাচনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনা এবং মৃত্যুর ঘটনা প্রমাণ করছে, এত বিপুল পরিমাণে কেন্দ্রীয় ও আধাসামরিক বাহিনী মজুত করা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন করতে ব্যর্থ। কিছুদিন আগেই যখন নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ‘আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাবার’অনুমতি দিয়েছিল–আশঙ্কা সেদিন থেকেই ছিল। শীতলকুচিতে তা মর্মান্তিক সত্যে পরিণত হল। নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী কর্তৃপক্ষ ‘আত্মরক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে’বলে যে সাফাই গাইছে– তার কোনও রকম সত্যতা নেই। ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। ভোটকেন্দ্রের চারপাশে ১৪৪ ধারা থাকা সত্ত্বেও কী করে মূল প্রতিপক্ষ হিসাবে বিবদমান দু’টি দল উন্মত্ত কর্মীদের জড়ো করতে পারল,বিপুল পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও এই হিংসাত্মক ঘটনা কেন আটকানো গেল না– এ প্রশ্নের উত্তর নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় বাহিনী কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে। তবে লাঠিচার্জ,কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার,সতর্কীকরণ,শূন্যে গুলি বা হাঁটুর নিচে গুলি–এ সব কিছু না করেই সরাসরি মাথা বা বুকে গুলি করার দ্বারা এটা অত্যন্ত পরিষ্কার যে,কেন্দ্রীয় বাহিনী হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি চালিয়েছে।
এই ঘটনা আবার প্রমাণ করল পুঁজিপতি শ্রেণির স্বার্থরক্ষাকারী ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের কাছে মানুষের জীবনের কোনও মূল্য নেই। নানা অজুহাতে তারা সশস্ত্র বাহিনী দিয়ে জনসাধারণের উপর নির্যাতন চালায়। কোচবিহারের ঘটনা তারই আর একটা মর্মান্তিক দৃষ্টান্ত।
যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবাংলায় প্রায় দৈনিক হাজিরা দিচ্ছেন, সেই কেন্দ্রীয় সরকারও কি এর দায় এড়াতে পারে? আমরা এই ঘটনার নিরপেক্ষ ও উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিচার বিভাগীয় তদন্ত,নিহত ও আহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ,দোষী কেন্দ্রীয় পুলিশের শাস্তি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরপেক্ষ ও সংযত আচরণ এবং ভবিষ্যতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ও বাহিনী কর্তৃপক্ষকে জনসাধারণের সামনে গ্যারান্টি দেওয়ার কথা ঘোষণা করার দাবি করছি। সাথে সাথে কে বা কারা আনন্দ বর্মনকে গুলি করে হত্যা করল তারও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করছি এবং ১২ এপ্রিল রাজ্য জুড়ে ধিক্কার দিবস পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’
4 comments
Pingback: zithromax 250 mg australia
Pingback: hydroxychloroquine tablets 10 mg
Pingback: plaquenil price australia
Pingback: uk viagra sales online