মেট্রো রেল থেকে টিভির পর্দা–চোখে না পড়ে উপায় নেই। ঝকঝকে বিজ্ঞাপন–‘দুনিয়া যেভাবে পড়ে আজ বাংলার ঘরে ঘরে’। স্মার্টফোন হাতে স্কুল ইউনিফর্ম পরা হাসিমুখ, দিগন্তছোঁয়া সবুজ মাঠ। এক ঝলক দেখলে মনে হয়, আহা কী সুন্দর, দুনিয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে আমাদের পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম-শহরেও কেমন জ্ঞানের আলো জ্বলে উঠেছে।
কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে শিক্ষা-অ্যাপ টিউটোপিয়ার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর কেটে গেছে প্রায় এক বছর। ওয়েবসাইট খুললেই দেখা যাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি সহ সরকার ঘনিষ্ঠ অনেক বিশিষ্ট জনই আছেন টিউটোপিয়ার শুভাকাঙ্খী লিস্টে। অন্য দিকে আছে বাইজু-বেদান্টু-স্কুল ট্রি। টিভি চ্যানেলে সোসাল মিডিয়ায় তাদের ঢালাও বিজ্ঞাপন। লকডাউনে ঘরে আটকে পড়া পড়ূয়াদের সাহায্য করার জন্য তারা সকলেই নাকি উন্মুখ। এর সাথে রাজ্য সরকারের বাংলার শিক্ষা পোর্টাল, প্রতি মাসে সেখানে আপলোড করা মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক, ফোনে পড়া জেনে নেওয়ার জন্য হেল্পলাইন নম্বর আরও কত কী। অথচ বহু টালবাহানার পর শেষপর্যন্ত যখন স্কুল খুলল, বলা ভাল, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের প্রবল বিক্ষোভ-আন্দোলনের চাপে সরকার খুলতে বাধ্য হল, তখন দেখা যাচ্ছে, ‘হাতে রইল পেন্সিল’। একের পর এক সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্য এবং স্কুলে স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিজ্ঞতা বলছে, অধিকাংশ পড়ূয়াই পড়াশুনা থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আগে যেটুকু শিখেছিল তা-ও সম্পূর্ণ ভুলতে বসেছে একটা বিরাট সংখ্যক ছাত্রছাত্রী। ১০ ফেব্রুয়ারির সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার সমীক্ষার রিপোর্ট। রাজ্যের তিন থেকে ষোলো বছরের ১১ হাজার ১৮৯ জন পড়ুয়ার ওপর করা এই সমীক্ষার ফল বলছে, ২০১৮ থেকে ২০২১– এই তিন বছরের মধ্যে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার মানের শোচনীয় অবনতি হয়েছে। ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত বহু পড়ূয়া অক্ষর চিনতে, পড়তে পারছে না। ক্লাস থ্রি’র অনেকেই ১ থেকে ৯, ১০ থেকে ৯৯ সংখ্যা চিনতে পারেনি। থ্রি, ফাইভ এবং এইটের ছাত্ররা পড়তে পারছে না ক্লাস টু-এর বই, বিয়োগ এবং ভাগ করতে ভুলে গেছে অনেকেই। সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে পড়া পড়ূয়ার সংখ্যা শতাংশের বিচারে কয়েক গুণ বেড়ে গেছে এই তিন বছরে। ১৭ ফেব্রুয়ারির সংবাদপত্রে প্রকাশ পেয়েছে খোদ কলকাতার বুকে কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিজ্ঞতা, যা একেবারে দুয়ে দুয়ে চারের মতো মিলে যাচ্ছে ওই সমীক্ষার সাথে। দেখা যাচ্ছে, প্রি প্রাইমারির পড়া নতুন করে শেখাতে হচ্ছে ক্লাস টু-কে, এবিসিডি ভুলতে বসেছে অনেকেই। টু, থ্রি’র ছাত্রছাত্রীরা বোর্ড দেখে বাংলা লিখতে পারছে না। অর্থাৎ, এক কথায়, সরকারি বেসরকারি বিজ্ঞাপনের জৌলুস যতই থাক, অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর কোনও কাজে আসেনি স্মার্টফোন নির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা। কাজে যে আসবে না, স্কুলের পড়াশুনা থেকে এই দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতা যে একটা গোটা প্রজন্মের গড়ে ওঠাকে ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এমনটা কি অপ্রত্যাশিত ছিল? করোনার প্রকোপ অনেকটা কমে আসার পর চিকিৎসক-বিজ্ঞানী-শিক্ষাবিদরা বারবার স্কুল খুলে দেওয়ার কথা বলেছেন, ঘরবন্দি অবস্থায় স্মার্টফোন কম্পিউটারের অতিরিক্ত ব্যবহারে ছোটদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতির কথা উঠেছে, সমস্ত শিক্ষার্থীদের ভ্যাক্সিন সুনিশ্চিত করার দাবি উঠেছে– কার্যত বধির হয়ে থেকেছে সরকার। যখন সরকার চাইলেই মাসের পর মাস বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি স্যানিটাইজ করে খুলে দেওয়া যেত, কোভিড বিধি মেনেই শুরু হতে পারত পড়াশুনা, তখনও দিনের পর দিন স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অনলাইনে পড়াশুনা কদ্দুর কী হয়, তারও আগের কথা হল, অনলাইনের সুবিধা পেতে গেলে সবার আগে দরকার সর্বক্ষণের একটি স্মার্টফোন এবং অবিচ্ছিন্ন নেট সংযোগ। সরকারি স্কুলেযেসব সাধারণ নিম্নবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে শিক্ষার্থীরা আসে, তেমন বহু পরিবারেই স্মার্টফোন নেই অথবা একটিমাত্র স্মার্টফোন, সেটাও স্বভাবতই বাড়ির বড়দের ব্যবহারের জন্য। মনে রাখা দরকার এই দু বছরেই নতুন করে ভয়াবহ ধস নেমেছে দেশের অর্থনীতিতে, দেশ জুড়ে কয়েক কোটি মানুষের কাজ চলে গেছে, দারিদ্রসীমার নিচে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। স্কুলবাড়ির জল-হাওয়ায় বিকশিত হওয়ার আগেই পেটের টানে কর্মজগতে পাড়ি দিয়ে স্কুলের খাতা থেকে চিরতরে সরে গেছে কত নাম। মুর্শিদাবাদের একটি গ্রামে ক্লাস এইটের স্কুলছুট ছাত্রীর খোঁজ নিতে গিয়ে দিদিমণিরা দেখেছেন, সে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মদ্যপ বাবার অত্যাচার আর শ্বশুরবাড়ির অবহেলা থেকে তাকে কোনও মতে বাঁচিয়ে আগলে রেখেছেন মা। মালদার ক্লাস নাইনের মেধাবী ছাত্র অমিত মণ্ডল রাজস্থানে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এই অবস্থায় কতজন অভিভাবক ছেলেমেয়ের পড়াশুনার জন্য সর্বক্ষণের ফোন এবং নেটের ব্যবস্থা করে দিতে পেরেছেন? পারলেও, তার কতটুকু সুফল পৌঁছেছে ছাত্রছাত্রীদের কাছে? সরকারি হেল্পলাইনে ফোন করে লাইন পাওয়াই দুষ্কর, পেলেও সরাসরি শিক্ষকের সাথে কথা বলার সুযোগ মিলেছে খুব অল্প ক্ষেত্রে। পোর্টালে মাসে মাসে মডেল অ্যাকটিভিটি টাস্ক এসেছে, কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা কী ভাবে সেই টাস্ক হাতে পাবে, কী ভাবেই বা সেগুলোর মূল্যায়ন হবে, তার কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা পাওয়া যায়নি। যেসব স্কুলে অনলাইনে পড়ানো হয়েছে, শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা বলছে সেখানে উপস্থিতির হার খুবই কম, খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়গুলো পড়ূয়াদের ভাল ভাবে বোঝানোও সম্ভব হয়নি। আর বহু স্কুলে দিনের পর দিন কোনও ক্লাসই হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ক্লাসরুম পঠন-পাঠন দ্রুত ফিরিয়ে আনার বিন্দুমাত্র চেষ্টা না করে টাস্ক দিয়ে যাওয়ার অর্থ দাঁড়ায় ছাত্রছাত্রীদের পুরোপুরি প্রাইভেট টিউশন নির্ভরতার দিকে ঠেলে দেওয়া এবং সেটাই সরকারি কর্তাব্যক্তিরা করেছেন।
অন্য দিকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সরকারি মদতে রমরম করে বেড়েছে লার্নিং অ্যাপের ব্যবসা। তথ্য বলছে, গত দু বছরে বাইজুর মূল্যমান বেড়েছে প্রায় তেরো হাজার কোটি টাকা। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রিক টিউটোপিয়া পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটিতে। অন্যান্য অ্যাপের ক্ষেত্রেও যে বিষয়টা কমবেশি একই হবে সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অর্থাৎ হিসেব সোজা– অনলাইন ব্যবস্থায় শিক্ষার সুযোগ যদি কিছু পৌঁছে থাকে, তা পৌঁছেছে শুধুমাত্র সমাজের উচ্চবিত্ত অংশের কাছে। আবার সন্তানের একটু ভাল পড়াশুনার আশায় কার্যত দিশেহারা বহু অভিভাবক সাধ্যের বাইরে গিয়েও এসব অ্যাপের ফাঁদে পা দিয়েছেন, এমনকি আর্থিক প্রতারণার অভিযোগও উঠেছে বেশ কিছু অ্যাপের বিরুদ্ধে। কিন্তু এ তো গেল আর্থিক সক্ষমতার প্রশ্ন। আসল প্রশ্ন হল, শিক্ষার ক্ষেত্রে আর পাঁচটা বাজারের পণ্যের মতো ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ বা ‘একটা কিনলে একটা ফ্রি’র মতো জিনিস চলতে পারে কি? শিক্ষায় সরকারি উদ্যোগ কমিয়ে নেওয়া, সরকারি শিক্ষা-পরিকাঠামোকে দুর্বল করে দেওয়া এবং বেসরকারি উদ্যোগ ডেকে আনার মানেই হচ্ছে সমাজের বিরাট অংশের মানুষকে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা।
একের পর এক ক্ষমতাসীন সরকার নানা কমিশন, নীতি, গালভরা বুলির আড়ালে ধর্মনিরপেক্ষ, বৈজ্ঞানিক, গণতান্ত্রিক শিক্ষার ওপর আক্রমণ নামিয়ে এনেছে যার একটা চূড়ান্ত পদক্ষেপ হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০। প্রচুর ভাল ভাল শব্দবন্ধের আড়ালে, স্বায়ত্তশাসন সুশাসন সক্ষমতার নামে, প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করার নামে, শিক্ষার সর্বজনীনতার নামে, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধা করতে শেখানোর নামে আসলে কী কী চাওয়া হয়েছে বা হবে, গত আট বছরের বিজেপি শাসনে তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার।
প্রযুক্তির ব্যবহার কথাটা শুনতে বেশ ভালো, পড়াশুনায় ইন্টারনেট সহ নানা নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে কারও আপত্তি থাকারও কথা নয়। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দল যেটা চাইছেন সেটা নিছক প্রযুক্তিকে উৎসাহদান নয়। মৌলিক বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্দ কমিয়ে, গবেষণার সুযোগ ক্রমশ সঙ্কুচিত করে, বৈজ্ঞানিক মনন গড়ে ওঠার যাবতীয় পথকে রুদ্ধ করে যখন প্রযুক্তির ওপর জোর দেওয়া হয়, তার মানে দাঁড়ায় বিজ্ঞানের প্রকৃত অগ্রগতি তারা চাইছেন না, চাইছেন অন্ধবিশ্বাস আর প্রযুক্তির কলাকৌশলের মিশেল, যা দেশে ফ্যাসিবাদ গড়ে ওঠার অন্যতম পূর্বশর্ত। আর শিক্ষাব্যবস্থাকে আগাগোড়া প্রযুক্তিনির্ভর করতে চাওয়ার মানে শিক্ষার পরিসর থেকে এই গরিব দেশের গরিষ্ঠসংখ্যক জনগণকে বের করে দেওয়া, যেটা সর্বজনীন শিক্ষার ঠিক বিপরীত জিনিস। আপত্তি এখানেই। গণআন্দোলনের চাপে এ রাজ্যে আংশিক ভাবে স্কুল খোলার ঘোষণা হল, তার ঠিক পর পরই কেন্দ্রীয় বাজেটে দেখা গেল সেই ডিজিটাল শিক্ষার কচকচানি। করোনায় স্কুলশিক্ষার যে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণের জন্য অর্থমন্ত্রী শিক্ষায় বাজেট বাড়ানোর কথা, আরও বেশি করে সরকারি স্কুল স্থাপনের কথা, গরিব মানুষকে বিনামূল্যে শিক্ষা দেওয়ার কথা বললেন না, বললেন ২০০টি টিভি চ্যানেলের কথা, বললেন ‘ওয়ান ক্লাস ওয়ান চ্যানেল’, ই-বিদ্যা, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা। অর্থাৎ জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করে গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে অনলাইন নির্ভর করে ফেলা এবং স্কুলের মাঠ, কলেজ ক্যাম্পাস সহ লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতকে কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের মুনাফা লোটার সোনার খনি করে তোলাই এদের পাখির চোখ।
দেশের সংবিধানে শিক্ষা যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। অথচ দেখা যাচ্ছে শিক্ষার আগাগোড়া পণ্যায়ন এবং বেসরকারিকরণের স্কিম চালু করার প্রশ্নে রাজ্যের কোনও বিরোধিতা নেই, বরং এ বিষয়ে তারা কেন্দ্রের সহায়ক হয়েই সমান তৎপরতা দেখাচ্ছেন। প্রমাণ হচ্ছে, নির্বাচনসর্বস্ব এই দলগুলো মুখে যতই জনদরদের প্রতিযোগিতা করুক, যে কোনও উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য কে কত ভাল করে পুঁজির দাসত্ব করতে পারে, সেটাই এদের প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য। আর ঠিক সেই কারণেই দরকার দেশের মানুষকে অশিক্ষিত করে রাখা এবং শিক্ষার খোলনলচেও এমনভাবে পাল্টে ফেলা যা মানুষ তৈরির পরিবর্তে কিছু ডিগ্রিধারী রোবট তৈরি করবে। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেনঃ ‘‘ঘুরিয়া ফিরিয়া যেমন করিয়াই চলি না কেন শেষকালে এই অলঙ্ঘ্য সত্যে আসিয়া ঠেকিতেই হয় যে, শিক্ষকের দ্বারাই শিক্ষাবিধান হয়, প্রণালীর দ্বারা হয় না।” খেয়াল করলে দেখা যাবে এই শিক্ষকই সবচেয়ে গুরুত্বহীন অনলাইন শিক্ষাব্যবস্থায়। ক্লাসরুমে শিক্ষক-ছাত্রের আদান প্রদানের যে পরিসর, সেখানে পাঠ্য বিষয়ের প্রতি যেমন ভালোবাসা তৈরি হয়, গভীরে জানার-বোঝার ইচ্ছে তৈরি হয়, তেমনই পাঠ্যের সীমানা ছাড়িয়েও বহু কিছু উঠে আসে। প্রকৃত শিক্ষক ক্লাসরুমে পড়ানোর ফাঁকে ফাঁকেই গড়ে দিতে পারেন যুক্তিবাদী মন, মানবিক মূল্যবোধ, সামাজিক দায়বদ্ধতার বোধ। অনলাইন শিক্ষায় নেই একসাথে ক্লাস করা, টিফিন ভাগ করে খাওয়া, খেলা-গল্প-গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া–যৌথ জীবনের যে বুনিয়াদী শিক্ষাগুলো আমরা স্কুলেই পাই। কাজেই, অনলাইন শিক্ষার ব্লু প্রিন্ট শুধু সাধারণ মানুষকে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে সমাজের অন্যায় বৈষম্যকেই আরও প্রকট করবে না, শিক্ষার মূল কথা যে মনুষ্যত্বের সার্বিক বিকাশ– তার পথটাও বন্ধ করে দেবে। এই সর্বনাশ রুখতে চাইলে একমাত্র উপায়–সঠিক নেতৃত্বে লাগাতার দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন।