২৭ অক্টোবর আগরতলা দক্ষিণী প্রেক্ষাগৃহে অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটির ত্রিপুরা রাজ্য শাখার পক্ষ থেকে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইনে আলোচনা করেন সংগঠনের সর্বভারতীয় কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ডঃ মৃদুল দাস এবং ডঃ প্রদীপ মহাপাত্র। প্রাথমিক স্তর থেকেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যে শিক্ষার ভিত্তি গড়ে ওঠে, এই শিক্ষানীতি কী ভাবে তাকে ধ্বংস করে এক প্রকার যান্ত্রিক মানবজাতি গড়ে তুলবে এবং অপর দিকে শিক্ষার বেসরকারিকরণকে উৎসাহিত করবে– এই বিপজ্জনক দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, এই শিক্ষানীতিতে প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা (কেজি-১, কেজি-২, কেজি-৩ এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) অঙ্গনওয়াড়ির হাতে তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি পড়ানো হবে না, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত কোনও সুনির্দিষ্ট পাঠক্রম থাকবে না। এই শিক্ষানীতিতে মাল্টিপল এন্ট্রি এবং মাল্টিপল এক্সিট, মাল্টিডিসিপ্লিনারি স্কিম চালু করে চিন্তার সংহতি নষ্ট করা হচ্ছে, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শিক্ষাকে বৃত্তিমুখী করা হচ্ছে, মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকবে না, তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স চার বছরের করা হচ্ছে। শিক্ষা হবে অনলাইনভিত্তিক। এর ফলে শিক্ষার বেসরকারিকরণের পথ প্রশস্ত করা হবে। শিক্ষার চূড়ান্ত কেন্দ্রীকরণ ঘটবে। এই নীতিতে ইতিহাসের সাম্প্রদায়িকীকরণ ও গেরুয়াকরণের পরিকল্পনা হচ্ছে। পৌরাণিক গল্পকে ইতিহাস হিসাবে চালানোর চক্রান্ত হচ্ছে, পাঠ্যসূচিতে জ্যোতিষশাস্ত্র, বাস্তুশাস্ত্র প্রভৃতি অপবিজ্ঞান ঢুকিয়ে বিজ্ঞান হিসাবে চালানো হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষতা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মিলন চক্রবর্তী এবং উদ্বোধনী ভাষণ দেন সংগঠনের ত্রিপুরা রাজ্য শাখার সহ সভাপতি হরকিশোর ভৌমিক।