শিক্ষার সামগ্রিক বেসরকারিকরণের নীলনক্সা জাতীয় শিক্ষানীতি ও রাজ্য শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে এবং সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে বাঁচাতে ৩০ সেপ্টেম্বর এআইডিএসও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে কলকাতার বীরেন্দ্র মঞ্চে রাজ্যস্তরের শিক্ষা কনভেনশন সংগঠিত হয়। ৮২০৭টি সরকারি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার অপচেষ্টা, প্রাক প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষাকে পরিকাঠামোহীন অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের হাতে তুলে দেওয়া, নবম শ্রেণি থেকে সেমিস্টার সিস্টেম চালু, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা তুলে দেওয়া, তিন বছরের পরিবর্তে ৪ বছরের ডিগ্রি কোর্স চালু, ইতিহাস বিকৃত করে সাম্প্রদায়িক চিন্তার অনুপ্রবেশ ঘটানো, ইন্ডিয়ান নলেজ সিস্টেমের নামে অবৈজ্ঞানিক চিন্তার প্রসার ইত্যাদি শিক্ষা স্বার্থবিরোধী নীতির প্রতিবাদে, প্রথম শ্রেণি থেকেই পাশ ফেল প্রথা চালু, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র খুনের বিচার, অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও ক্যাম্পাসগুলিতে পঠনপাঠনের সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে এই কনভেনশন সংগঠিত হয়।
যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলা থেকেই ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়, ২৫০টি কলেজ ও শতাধিক স্কুল থেকে ৭০০ জন প্রতিনিধি কনভেনশনে উপস্থিত হন। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা কনভেনশনের মূল প্রস্তাবের সমর্থনে এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের সমস্যাগুলি বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন। কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন আইআইএসিআর (কলকাতা)-এর অধ্যাপক সৌমিত্র ব্যানার্জী, অধ্যাপক অম্বরনাথ চক্রবর্তী (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়), বিশিষ্ট স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ ডি পি চক্রবর্তী, এআইডিএসও-র সর্বভারতীয় নেত্রী কমরেড শ্রুতি শিবহারে, সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড বিশ্বজিৎ রায়। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কমরেড মণিশঙ্কর পট্টনায়ক। শিক্ষার উপর সরকারের আক্রমণ যে প্রতিদিন বাড়ছে, তা নিয়ে বিশদভাবে বক্তারা আলোচনা করেন। বক্তারা বলেন, সরকারি শিক্ষা বাঁচানোর দাবিতে দুর্বার ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। একমাত্র শক্তিশালী ছাত্র আন্দোলনই পারে সরকারি শিক্ষা বাঁচাতে।
উপরোক্ত একই দাবিতে ২৮ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়ি শহরের এইচএমএ হলে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি নিয়ে অপর এক রাজ্যস্তরের কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরবঙ্গে সব বিশ্ববিদ্যালয়, ৫৬টি কলেজ এবং ৫০টির বেশি স্কুল থেকে ৪৬৫ জন প্রতিনিধি কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক দেবব্রত বেরা (যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক সমর কুমার বিশ্বাস (উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়), বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ চন্দন শীট, জেএনইউ-এর ছাত্রনেত্রী সুমন, সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড বিশ্বজিৎ রায়। সভাপতিত্ব করেন রাজ্য সভাপতি কমরেড মণিশঙ্কর পট্টনায়ক। শেষে এয়ারভিউ মোড় থেকে জংশন পর্যন্ত একটি সুসজ্জিত মিছিল হয়।