বিজেপির কাছে মানবসম্পদের চেয়ে গো–সম্পদের মূল্যই যে বেশি তার প্রমাণ এবারের বাজেটের ছত্রে ছত্রে৷
বিজেপি সরকার রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন, রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ অর্থাৎ গরু কল্যাণ প্রকল্পে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে৷ কিন্তু শিক্ষার ক্ষেত্রে বরাদ্দ ছাঁটাই করা হয়েছে৷ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট (আই আই এম)–এ বরাদ্দ কমেছে ৫৯.৯ শতাংশ৷ টাকার অঙ্কে ১,০৩৬ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪১৫.৪১ কোটি টাকা৷ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আই আই টি)–গুলোর জন্য যেখানে ২০১৮–’১৯ সালে ৬,৩২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল, তা কমে হয়েছে ৬,২২৩.০২কোটি টাকা৷
এটাই শুধু প্রথমবার নয়, দেশের এই শীর্ষ স্থানীয় টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউশনের জন্য এর আগেও বাজেটে বরাদ্দ ছাঁটাই হয়েছে৷ ২০১৭–’১৮ সালের বরাদ্দ ৮,৩৩৭.২১ কোটি টাকা, ২০১৮–’১৯ সালে কমে হয়েছে ৬,৩২৬ কোটি টাকা৷ এ ছাড়াও ইউজিসি/এ আইসিটিই–র মতো সংস্থা উচ্চশিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সে ক্ষেত্রেও বরাদ্দ কমানো হয়েছে৷
ইউ জি সি–র ক্ষেত্রে ২০১৮–’১৯ সালে বাজেটে যেখানে ৪, ৭২২.৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল, বর্তমানে তা কমে হয়েছে ৪,৬০০.৬৬ কোটি টাকা৷ এ আই সি টি ই–র ক্ষেত্রেও ২০১৮–’১৯ সালে ৪৮৫ কোটি টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪৬৬ কোটি টাকা৷ সামগ্রিকভাবে সমগ্র বাজেটের অতি সামান্য–৩.৪৮ শতাংশ এতদিন যা খরচ হত শিক্ষা খাতে, এবার তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে–৩.৩ শতাংশ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই ভাবে শিক্ষা বাজেটে বরাদ্দ কমানোর ফলে স্কুল স্তর থেকে কলেজ স্তর পর্যন্ত পরিকাঠামোর অভাবে ধুঁকছে শিক্ষা ব্যবস্থা৷ বহু স্কুলের বিল্ডিং নেই, পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, শৌচালয় পর্যাপ্ত নেই৷ নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক৷ কলেজগুলিতেও একই অবস্থা৷ সামান্য পাশ কোর্সে ভর্তির জন্য হাজার হাজার টাকা গুনতে হয় ছাত্রছাত্রীদের৷ বাড়তি টাকা খরচ করে পড়তে হচ্ছে, যার গালভরা নাম ‘সেল্ফ ফিনান্সিং কোর্স’৷ গবেষণা ক্ষেত্রে অনুদান পর্যাপ্ত নয়৷ ইতিমধ্যেই ঘোষণা হয়েছে ইউ জি সি–র মতো সংস্থাকে তুলে দেওয়া হবে৷ সম্প্রতি সিএজি রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে, গত ২০০০–’০৭ সাল পর্যন্ত নানা পণ্য ও পরিষেবা থেকে আদায় হওয়া এডুকেশন সেস বাবদ ৮৩, ৪৯৭ কোটি টাকা শিক্ষাখাতে খরচ করা হয়নি৷
মোদি সরকারের এই শিক্ষা স্বার্থ বিরোধী বাজেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্র সংগঠন ডিএসও৷ ডিএসও দাবি করেছে শিক্ষার আর্থিক দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে৷ কেন্দ্রীয় বাজেটের ১০ শতাংশ এবং রাজ্য বাজেটের ৩০ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করতে হবে৷