এস ইউ সি আই (সি)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২৯ মে এক বিবৃতিতে বলেন, বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক, গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী, লাক্ষাদ্বীপের বর্তমান প্রশাসক প্রফুল খোড়া প্যাটেলের প্রস্তাবিত চূড়ান্ত জনবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক বিলগুলি ৩৬টি দ্বীপ ও একটি কেন্দ্রীয় অঞ্চল নিয়ে গঠিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় এই দ্বীপপুঞ্জটির স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে। আমরা এই জনবিরোধী বিলগুলির তীব্র নিন্দা করি।
প্রস্তাবিত লাক্ষাদ্বীপ প্রাণী সংরক্ষণ আইনে দ্বীপপুঞ্জে গোমাংস নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রশাসিত এই এলাকাটিতে অপরাধের হার দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। তা সত্ত্বেও ইউএপিএ-র মতো কালা-আইনের ঢঙে তৈরি, প্রস্তাবিত অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে যে কাউকে এক বছর পর্যন্ত গ্রেফতার করে রাখার একতরফা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে প্রশাসককে। ঢোলেরা স্মার্ট সিটি তৈরি ও স্ট্যাচু অফ ইউনিটি স্থাপন করার জন্য গুজরাটে যে আইন আনা হয়েছিল, তারই অনুকরণে আনা হয়েছে প্রস্তাবিত লাক্ষাদ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন। এতে পরিকল্পনা ও উন্নয়নের নামে দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দাদের জমি গ্রাস করার ক্ষমতা প্রশাসককে দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর পদে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে বিজেপির এই প্রশাসক, দুটির বেশি সন্তান থাকলে পঞ্চায়েত ভোটে লড়া যাবে না, স্কুলে নিরামিষ খাবার চালু করা, শত শত অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই করা, মৎস্যজীবীদের আশ্রয়স্থলগুলি ধ্বংস করা, এনআরসি ও সিএএবিরোধী আন্দোলনকারীদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করার মতো তুঘলকি আইন একের পর এক জারি করে চলেছেন। তিনি পর্যটকদের নিভৃতবাসের ব্যবস্থাও তুলে দিয়ে কোভিডের বিপদ বাড়িয়েছেন। এর আগে প্যাটেল যখন দিউ-এর প্রশাসক ছিলেন, সেখানেও তিনি একই ধরনের নির্মম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এই সমস্ত পদক্ষেপ শুধু যে স্বৈরাচারী তাই নয়, মুসলিম সংখ্যাধিক্যের এই দ্বীপপুঞ্জে এগুলি সাম্প্রদায়িক বার্তাবহও বটে। পর্যটন ব্যবসা থেকে মুনাফা লুট করতে একচেটিয়া পুঁজিপতিদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য নিয়ে আসা, এলাকার সামাজিক বুনন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য ধ্বংসকারী এই পদক্ষেপগুলি স্বাভাবিক কারণেই প্রবল বিক্ষোভ ধ্বনিত হয়েছে দ্বীপপুঞ্জে।
এই পরিস্থিতিতে আমাদের দাবি,
১) অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারকে লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসকের পদ থেকে প্রফুল খোড়া প্যাটেলকে অপসারণ করতে হবে এবং
২) একচেটিয়া পুঁজিপতিদের স্বার্থবাহী পদক্ষেপগুলি প্রত্যাহার করে স্থানীয় বাসিন্দাদের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে হবে যাতে তাঁরা জীবিকা নির্বাহের জন্য অবাধে মাছ ধরা সহ অন্যান্য কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারেন।