রেহাই পেলেন না কর্তব্যরত চিকিৎসকও কাকে আড়াল করতে তদন্তে টালবাহানা

কর্তব্যরত মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ ও নৃশংস খুনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আর জি কর হাসপাতালে চলা লাগাতার বিক্ষোভ

নিজের হাসপাতাল, নিজের ডিপার্টমেন্টের মধ্যেই ধর্ষিতা হয়ে খুন হতে পারেন তা ভাবতেও পারেননি কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত তরুণী চিকিৎসক। ভাবতে পারেননি কোনও মানুষই বোধহয়। একজন চিকিৎসক তাঁর নিজের হাসপাতালে, নিজের পরিবেশেও যদি নিরাপদ না হন, তা হলে এ দেশে কোথায় নিরাপদ মেয়েরা? শিউরে উঠেছে সারা দেশ। মানুষের প্রাণ রক্ষার কাজে যিনি রাত জাগছিলেন, নারকীয় আক্রমণে তাঁকেই ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। চিকিৎসক তরুণীর বিধ্বস্ত প্রাণহীন দেহটা তীব্র যন্ত্রণায় নাড়িয়ে দিয়েছে প্রতিটি বিবেকবান মানুষকে। দল-মত নির্বিশেষে তীব্র ক্ষোভে তাঁরা ফেটে পড়েছেন। সারা দেশের চিকিৎসকরাও সামিল হয়েছেন বিক্ষোভে।

‘তদন্ত চলছে’– পুলিশ যথারীতি এই বয়ানে অনড়। জনগণের মধ্যে প্রবল বিক্ষোভ লক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী আগবাড়িয়ে বলে দিয়েছেন, মৃতার পরিবার সিবিআই তদন্ত চাইলেও তাঁর আপত্তি নেই। তাঁর দলের দ্বিতীয় সর্বাধিনায়ক আবার জনরোষ এড়াতে অপরাধীকে ‘এনকাউন্টার’-এর পক্ষেও সওয়াল করেছেন। চিকিৎসক-ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের তীব্র প্রতিবাদের সামনে সরকার মুখ বাঁচাতে হাসপাতালের সুপার ও হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত থানার এসিপি-কে বদলি করেছে, চরম অপদার্থতার নজির সৃষ্টিকারী শাসক দলের নেতাদের পেটোয়া হিসাবে পরিচিত প্রিন্সিপাল পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু এখনও চেস্ট মেডিসিন বিভাগের প্রধান, রোগী কল্যাণ সমিতি আলো করে বসে থাকা সরকারি দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা স্বপদেই বর্তমান।

ভবানীপুর

মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুলিশের কর্তারা সকলেই নাকি প্রচণ্ড দুঃখিত! কিন্তু এমন ‘দুঃখের’ ঘটনা যাতে না ঘটতে না পারে সেটা দেখার যে দায়িত্ব তাঁদের ওপর ছিল, তা পালনে কী করেছেন তাঁরা? হাসপাতালের ভিতরের পরিস্থিতি যতটা অরাজক হলে এমন ঘটনা ঘটা সম্ভব হয়, সে পরিস্থিতি তো তাঁদের অপদার্থতাতেই জাঁকিয়ে বসেছে! স্বাস্থ্য প্রশাসনকে পুরোপুরি দলীয় প্রশাসনে পরিণত করে যে সর্বনাশ এঁরা ডেকে এনেছেন, তার দায় স্বাস্থ্যকর্তারা নেবেন না কেন? খোদ মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘদিন স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বে। তা সত্ত্বেও কী করে হাসপাতালগুলোতে মদের ঠেক, বহিরাগতদের নেশার আখড়া, দুষ্কৃতী-চক্র, দালাল রাজ এ ভাবে গভীরে শিকড় গেড়ে বসতে পারল? তিনি এর জবাব দেবেন না কেন?

ডাক্তারি ছাত্র, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা চাইছেন, বিচারবিভাগের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে স্বচ্ছ তদন্ত হোক। অথচ, সেই দাবি এড়িয়ে গিয়ে সিবিআই, এনকাউন্টার ইত্যাদি বিষয়ের অবতারণা করে সরকারের শীর্ষ কর্তারা যে আসলে বিষয়টাকে ধামাচাপা দিতে চাইছেন তা পরিষ্কার। কে কী তদন্ত চাইবে, তার উপর কেন নির্ভর করবেন মুখ্যমন্ত্রী? তিনি নিজেই তো বিচারবিভাগীয় তদন্ত বা সিবিআই তদন্তের ব্যবস্থা করে দিতে পারতেন! কেন কলেজ প্রশাসন এবং পুলিশের পক্ষ থেকে মৃতার বাবা-মা কে ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলা হল? মৃতার শরীরের ভয়াবহ আঘাতের ধরন দেখে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা সকলেই একাধিক দুষ্কৃতীর জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা বলছেন। পুলিশ কমিশনার সেই সম্ভাবনাকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত পরিচালনার বদলে জুনিয়র ডাক্তার ও ছাত্রদের উপরে, কেউ জড়িত থাকলে তার নাম জানানোর দায়িত্ব দিলেন কেন? তাঁর পুলিশের তবে কী কাজ? তাঁর চেয়ারটা কি শুধু অলঙ্কার? পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ মন্ত্রীকে তো জবাব দিতে হবে যে, গ্রেপ্তার হওয়া সিভিক ভলান্টিয়ার যে রকম প্রভাবশালী বলে সংবাদমাধ্যমেই দেখা যাচ্ছে, তা হতে পারল কী করে? যাদের মদতে তার এই রমরমা, সেই অদৃশ্য ক্ষমতাশালীকে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার কোনও ইচ্ছা পুলিশের আছে কি? সমাজমাধ্যম এবং সংবাদমাধ্যমে ইঙ্গিত আসছে আর জি কর হাসপাতালের সাথে যুক্ত, সরকারের মন্ত্রীস্তরের ঘনিষ্ঠ বিশেষ কয়েকজনের কথা, যাদের এই নারকীয় ঘটনার সঙ্গে যোগ থাকার সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কোনও বিশেষ প্রভাবশালী মহলের ঘনিষ্ঠ কারও অপরাধ চাপা দিতে তদন্তের রাশ টেনে ধরা তো এ দেশে রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। তাই বিচারবিভাগীয় তদন্ত, প্রতিদিন তদন্তের অগ্রগতি জানানো, সিসিটিভি ফুটেজ হাসপাতালের পিজিটিদের সামনে প্রকাশ করা, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দেখানোর দাবি ক্রমাগত জোরদার হচ্ছে।

কলকাতার মৌলালি মোড় থেকে চিকিৎসক ও মানবাধিকার রক্ষা আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ মিছিল। ১০ আগস্ট

প্রকৃত দোষীরা আদৌ শাস্তি পাবে কি না সময়ই বলবে। মানুষের অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, কোনও শাসক দলই নিজেদের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের শাস্তি দেয় না। পূর্বতন সিপিএম সরকারের আমলে ১৯৮২-তে কোচবিহারের নার্স বর্ণালী দত্তকে তাঁর ঘরের মধ্যেই ধর্ষণ করে খুন করেছিল তৎকালীন শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। কারও শাস্তি হয়নি। ২০০১-এ এই আর জি কর হাসপাতালেই ডাক্তারি ছাত্র সৌমিত্র বিশ্বাস তৎকালীন শাসকদলের ছাত্র-নেতাদের পর্নোগ্রাফির চক্র ধরে ফেলে প্রতিবাদ করায় হোস্টেলেই খুন হয়ে যান। খুনিদের কোনও শাস্তি হয়নি। সিপিএম সরকারের আমলেই পুরুলিয়ার শিক্ষিকা শ্রাবণী খান নিজের বাড়িতে একদল দুষ্কৃতীর পাশবিক লালসার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল শাসক দলের মদতপুষ্ট মদ্যপ বাহিনী এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। কারও কোনও শাস্তি হয়নি। একই ভাবে তৃণমূল সরকারের আমলে র‍্যাগিংয়ের শিকার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যুর এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনও বিচারই শুরু হয়নি। আর জি কর সহ সমস্ত সরকারি হাসপাতালে পর্নোগ্রাফি চক্র, নেশার ঠেক, মহিলা ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের নানা ভাবে হেনস্থা শ্লীলতাহানি প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। এই দুষ্কৃতীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শাসকদলের অতি-প্রভাবশালীদের সঙ্গী-সাথী হওয়ায় থানায় কোনও অভিযোগ পর্যন্ত নথিভুক্ত হয় না। খুব বড় কিছু ঘটনা ঘটলে কিছুটা হইচই হয়, পুলিশ কিছুটা নাড়াচাড়া করে, তারপর সব চাপা পড়ে যায়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে শাসক দলের মদতে বেশ কিছু বহিরাগত স্থায়ীভাবে বাস করেন। স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্তারা হয় পুরোপুরি দৃষ্টিহীন, না হলে ক্ষমতার পদলেহন করে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার লোভে চোখ বুজে থাকেন। পরিস্থিতি যে সত্যিই কতটা ভয়ানক, আর জি করের সাম্প্রতিক এই ঘটনা থেকে তা পরিষ্কার।

এক দিকে সমাজের মধ্যে গেড়ে বসে থাকা পুরুষতন্তে্রর দৃষ্টিভঙ্গি মেয়েদের ভোগের বস্তু হিসাবে দেখে। অন্য দিকে পর্নোগ্রাফি ও মদ-ড্রাগস-গাঁজা ইত্যাদির নেশা যৌনতা চরিতার্থ করার জন্য পাশবিক প্রবণতাকে মারাত্মকভাবে বাড়িয়ে দেয়। অথচ সরকারের মদতে মদ-মাদকের ঢালাও প্রসার চলছে। তৃণমূল কংগ্রেস শাসক দল হিসাবে পাড়ায় পাড়ায় যে সব মস্তান বাহিনী, বাহুবলীদের পুষছে, তাদের অনেকেই এই চক্রের মাথা। হাজার অপরাধ করলেও যে তাদের কোনও শাস্তি হবে না– এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। এ জন্যই তারা এমন বেপরোয়া। অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারও যে শাসক দলের মদতেই নিজের বাহুবলী ইমেজ বাড়িয়েছে তা সংবাদমাধ্যমেই দেখা যাচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, এখনও আড়ালে থেকে যাওয়া অপরাধীদের মাথার উপরেও সরকারের ওপরমহলের আশীর্বাদ আছে, এটা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।

আর জি কর হাসপাতাল চত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি মেডিকেল সার্ভিস সেন্টারের রাজ্য সম্পাদক ডাঃ বিপ্লব চন্দ্র। ৯ আগস্ট

আর জি কর সহ সমস্ত সরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল কাউন্সিল এবং স্বাস্থ্য প্রশাসনের যাঁরা কর্তা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের গদি লাভ ও রক্ষার প্রধান যোগ্যতা হল চোখ বুজে শাসক দলের দাসত্ব করা। এই গুণটি আছে বলেই দুর্নীতির ভুরি ভুরি অভিযোগ সত্তে্বও আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ দু’বার বদলি হয়ে দু’বারই এক-দুই দিনের মধ্যে ওই হাসপাতালেই ফিরে এসেছেন। এর সাথে যুক্ত হয়েছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও তাদের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দে্বর পরিণামে ডাক্তারি-নার্সিং ছাত্রছাত্রী ও চিকিৎসকদের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার। বিষয়টা এখন মাত্রাছাড়া হয়েছে। আর জি করের বর্তমান ঘটনায় চিকিৎসক, ছাত্র, স্বাস্থ্যকর্মীদের ফেটে পড়া বিক্ষোভের মধ্যে লুকিয়ে আছে এইসব নানা ক্ষোভও।

আশার কথা দলমত নির্বিশেষে নানা পেশার নানা সামাজিক স্তরের মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদে সক্রিয় ভাবে রাস্তায় নেমেছেন। ৯ আগস্ট ঘটনার কথা জানা মাত্রই তাঁরা আর জি কর হাসপাতালে সমবেত হয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। ছাত্র-যুব-মহিলা সংগঠন এআইডিএসও, এআইডিওয়াইও, এআইএমএসএস ছাড়াও চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীদের সংগঠন মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার, নার্সেস ইউনিটি সহ নানা সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভে সামিল হন। এস ইউ সি আই (সি)-র পক্ষ থেকে টালা থানায় ডেপুটেশন দিয়ে দ্রুত গ্রেপ্তার, বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও ছাত্রদের দাবি মেনে স্বচ্ছতার সাথে পোস্টমর্টেমের ভিডিওগ্রাফির দাবি জানানো হয়। সমস্ত মেডিকেল কলেজের ডাক্তারি ও নার্সিং ছাত্র-ছাত্রী, ইন্টার্ন, জুনিয়র চিকিৎসকরা মিছিল করেন। মিছিল করেন সরকারি ডাক্তারদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম ও মানবাধিকার সংগঠন সিপিডিআরএস। ১০ আগস্ট সারা রাজ্যে সমস্ত মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ও প্যারামেডিকেল কলেজে ধর্মঘটের ডাক দেয় এ আই ডি এস ও। কলকাতার আর জি কর সহ এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, এসএসকেএম, মেডিকেল কলেজে অবস্থান শুরু হয়। রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজের ছাত্র ও জুনিয়র ডাক্তাররাও আন্দোলনে কোথাও কর্মবিরতি, কোথাও অবস্থান করেন। রাস্তা অবরোধ হয়। এস ইউ সি আই (সি) দলের পক্ষ থেকে ১০ আগস্ট় সারা বাংলা প্রতিবাদ দিবসের ডাক দেওয়া হয়। কলকাতা সহ সমস্ত জেলায় অসংখ্য বিক্ষোভ মিছিল, রাস্তা অবরোধ, পথসভা ইত্যাদি হয়।

আর জি কর মেডিকেল কলেজে জুনিয়র ডাক্তার ও ছাত্ররা লাগাতার অবস্থান শুরু করেন। এই আন্দোলন ভাঙার জন্য শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি চেষ্টা চালিয়ে গেছে। কোনও অজ্ঞাত শক্তিকে দিয়ে অবস্থান মঞ্চের উপরে টাঙানো ত্রিপল ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ আর কিছু করতে না পারুক, শান্তি রক্ষার নামে অন্য হাসপাতাল থেকে আর জি করে আন্দোলনের পাশে দাঁড়াতে চাওয়া ডাক্তার ও ছাত্রদের মারধর করে রক্তাক্ত করেছে। কিছু মেডিকেল কলেজে বলা হয়েছে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা নয়, একমাত্র টিএমসিপি পরিচালিত ইউনিয়নের নামেই অবস্থান করা যাবে। নানা ভাবে তারা আন্দোলনে বাধা দিয়েছে। যদিও রাজ্যের সমস্ত মেডিকেল কলেজ, নার্সিং কলেজেই প্রতিবাদে নানা কর্মসূচি চলেছে।

১১ আগস্ট আর জি করের রেসিডেন্ট ডাক্তাররা জানিয়ে দেন– সমস্ত অপরাধীকে চিহ্নিত করা, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ করা, সিসিটিভি-র ফুটেজ আন্দোলনকারীদের দেখানো, বিচারবিভাগীয় নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করা ও চিকিৎসক সহ হাসপাতালের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তাঁরা সম্পূর্ণ কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। ১২ আগস্ট সারা দেশের চিকিৎসকরাও কর্মবিরতি পালন করেন।

প্রতিবাদের এই ঝড় না উঠলে সরকার যতটুকু পদক্ষেপ নিয়েছে তাও নিত না। সামগ্রিকভাবে হাসপাতালের নিরাপত্তা, বিশেষত মেয়েদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন চলবেই। কিন্তু যে সমাজ পরিবেশ এবং নেতাদের আখের গোছানোর যে নোংরা রাজনীতি এই সমস্ত দুষ্কৃতীর জন্ম দিয়ে চলেছে আন্দোলনের অভিমুখ ধাবিত করতে হবে সে দিকেও। না হলে এমন সম্ভাবনাময় মেধাবী কত সন্তান হারিয়ে যাবে সমাজের কোল থেকে! যারা হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারত, নতুন সমাজ আনার স্বপ্ন দেখাতে পারত, আর জি করের এই চিকিৎসক মেয়েটির মতো তারাও হয়ত এমন করেই নিথর ক্ষতবিক্ষত দেহ নিয়ে হারিয়ে যাবে চিরতরে। এই দুঃসময়ে নীরবতা ক্ষমাহীন অপরাধ। মনুষ্যত্বের দীপশিখা জ্বালিয়ে এর বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে, বিবেকবান মানুষ নিশ্চয়ই তা অস্তমিত হতে দেবেন না।