বিগত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে রেলে পণ্য পরিবহণের হার ২০১৯ সালের তুলনায় ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্র পাঁচটি গন্তব্যে ৩৫টি পার্সেল ট্রেন চালিয়ে ৬৫২৫ টন পণ্য পরিবহণ করা গেছে। এক মাসে আয় হয়েছে ২.১৮ কোটি টাকা। ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টায় গড়পড়তা ২০০০ কিলোমিটার যাচ্ছে এই পণ্য পরিবাহী ট্রেন। স্থলপথে অন্য যে কোনও পরিবহণে যা প্রায় অসম্ভব। ৫০ শতাংশেরও বেশি সময় তো সাশ্রয় হচ্ছেই ব্যবহারকারীদেরও খরচ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কম হচ্ছে (আনন্দবাজার পত্রিকা–১১.০২.২১)।
করোনা পরিস্থিতিতে নামমাত্র ট্রেন চালিয়ে এই লাভ দেখিয়ে দিচ্ছে রেলে লোকসানের গল্প বাস্তবে মিথ্যাচার, রেলকে মুনাফালোভী কর্পোরেটদের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার সুগভীর ষড়যন্ত্র। যাত্রী পরিবহণেও যে লোকসানের কথা বলা হচ্ছে তারও কারণ তুঘলকি সিদ্ধান্ত। সারা দেশে প্রায় ৬০০-র বেশি প্যাসেঞ্জার ট্রেনকে এক্সপ্রেস ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে একই ট্রেনের ভাড়া এক ধাক্কায় তিন গুণেরও বেশি বেড়ে গেছে এবং সাধারণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে চলে গেছে। ফলে বহু ট্রেন যাত্রীবিহীন চলছে। বেশিরভাগ ট্রেন এখনও চালু করাই হয়নি। সাধারণ মানুষের প্রয়োজনের কথা না ভেবে স্লিপার ক্লাস ও সাধারণ কামরার পরিবর্তে বাতানুকূল কামরার সংখ্যা বাড়ানো সহ রেলের স্তরে স্তরে নানা দুর্নীতির কারণে রেলে যে পরিমাণ লাভ হওয়ার কথা তা হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও রেল এখন একটি লাভজনক সংস্থা। কিন্তু মনে রাখা দরকার দেশের সর্ববৃহৎ গণপরিবহণের উদ্দেশ্য কখনও শুধুমাত্র লাভ করা হতে পারে না। জনগণের প্রয়োজনের কথা না ভেবে যে সরকার শুধু লাভ লোকসানের নিরিখেই গণপরিবহণ চালাতে চায় তার জনবিরোধী চরিত্রকেও সবার সামনে তুলে ধরা দরকার।
নিরঞ্জন মহাপাত্র, খড়গপুর