কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এ, বি এস সি (অনার্স, জেনারেল, মেজর) পরীক্ষার ৬ মাস বাদে প্রকাশিত ফলে দেখা গেল ৫৭ শতাংশের বেশি পরীক্ষার্থীই ফেল করেছেন৷
এদিকে রেজাল্ট প্রকাশ করার কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙতে ভাঙতে পরের বছরের পরীক্ষার সময় প্রায় উপস্থিত৷ পরীক্ষার পর এতদিন কোনও ছাত্রছাত্রী বসে থাকেন না – তাঁরা ইতিমধ্যেই পরের বর্ষের পড়ার মাঝপথে৷ এখন তাঁদের বলা হচ্ছে নতুন করে প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিতে হবে৷ অর্থাৎ আবার প্রায় নিশ্চিত ফেলের পথে হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে ঠেলে দেওয়া হল৷ এখানেই শেষ নয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘পারদর্শিতা’ এমন যে হাজার হাজার রেজাল্ট অসম্পূর্ণ৷
ইতিমধ্যেই এই ফলের ধাক্কায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে কলকাতার নিউ আলিপুর কলেজের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন৷ এআইডিএসও ২৯ জানুয়ারি এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বিক্ষোভ দেখায়৷ উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেয়৷
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এখন ব্যগ্র ছাত্র ইউনিয়নের বদলে ছাত্র কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতে৷ শিক্ষার দাবিতে আন্দোলন থেকে ছাত্রদের দূরে সরাতে পারলেই নাকি শিক্ষার চূড়ান্ত উন্নতি হবে আন্দোলনের ‘ঘুণপোকা’ নাকি ছাত্রছাত্রীদের গ্রাস করেছে৷ আর তাই নিয়েই তিনি আতঙ্কিত৷
বাস্তবটা ঠিক উল্টো৷ দলবাজির যে ঘুণপোকা সিপিএম সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে ছেড়ে দিয়ে গেছে, বর্তমান সরকারের আমলেও গোটা শিক্ষাক্ষেত্রই সেই ঘুণপোকার আক্রমণেরই শিকার৷ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে কারণে একজন পূর্ণ সময়ের উপাচার্য পর্যন্ত পেল না বশংবদ কর্মচারীর মতো উপাচার্যকে তাঁর চেয়ারের সম্মান বিসর্জন দিয়ে ফাইল বগলে ছুটতে হচ্ছে মন্ত্রীর দরজায়৷ প্রেসিডেন্সির উপাচার্যের অভিজ্ঞতা আরও করুণ৷ মন্ত্রীমশাই ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে দরজায় বসিয়ে রেখেছিলেন, দেখা করেননি৷
এই যখন পরিস্থিতি তখন শুধু রেজাল্ট বিপর্যয় কেন আরও অনেক কিছু ঘটবে৷ আর এই অপদার্থতা, দলবাজি, স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে সচেতন ছাত্রদের কর্তব্যই হল প্রতিবাদ করা, আন্দোলন করা৷