আলুর উপযুক্ত দাম না পেয়ে রাজ্যের আলুচাষিরা গভীর সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন। ৭ মার্চ হুগলির তারকেশ্বরে চাউলপট্টি মোড়ে কৃষক সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে আলুর দাম নূ্যনতম ৬০০ টাকা প্যাকেট (৫০কেজি) করার দাবিতে আলুচাষিরা রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ দেখান ও পথ অবরোধ করেন।
আলুচাষি মহাদেব কোলে, নুর মোহম্মদ বলেন, এ বছর পাঁচ হাজার থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা দামে আলুর বীজ কিনতে হয়েছে। সেচের জল, কীটনাশক, সারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যেখানে অন্য বছর এক বিঘা আলু চাষ করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হত, এ বছর সেখানে বিঘা প্রতি আলু চাষে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন আলু ওঠার সময় তাঁরা আলুর দাম পাচ্ছেন না। বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লোকসান করে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। তারকেশ্বরের আলুচাষি অমর সামন্ত বলেন, ৭ বিঘা জমি লোন নিয়ে আলু চাষ করেছি, এখন ৩-৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। কী ভাবে ধার শোধ করব জানি না। আলুর দাম না পেলে বাঁচব কী করে জানি না। ভাগচাষি সুনীল সানা বলেন, নেতারা শুধু ভোটের সময় ভোট চাইতে আসে। আমাদের মতো গরিব কী খাবে, কী ভাবে বাঁচবে তা নিয়ে কারও মাথাব্যাথা নেই।
সংগঠনের আহ্বায়ক অমিতা বাগ বলেন, অন্যান্য বছরের মতো এবারও আলুচাষিরা দাম পাচ্ছেন না। অথচ চাষির হাত থেকে আলু চলে যাওয়ার পর বাজারে আলুর দাম ব্যাপক বাডে, সাধারণ মানুষকে দশগুণ দামে আলু কিনে খেতে হয়। এই বছরও সাধারণ মানুষকে ৪০ টাকা কেজি দরে আলু কিনে খেতে হয়েছে। এই অবস্থায় চাষিদের দাবি, সরকারকে উপযুক্ত দামে কৃষকের কাছ থেকে আলু কিনে সাধারণ মানুষকে গণবণ্টনের মাধ্যমে ন্যায্য দামে তা বিক্রি করতে হবে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইন চালু হলে কালোবাজারি-মজুতদারি ও চাল-ডাল-সব্জির দাম ব্যাপক ভাবে বাড়বে। চাষি সহ সাধারণ মানুষ মরবে, পকেট ভরবে কেবল আম্বানি-আদানিদের। এর বিরুদ্ধে দিল্লিতে যে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন চলছে, আমরা তার প্রতি সংহতি জানাচ্ছি।