এক জনের নাম শুনলেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠছেন অন্য জন৷ নিন্দে–মন্দ তো আছেই, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’কে তাক করে বাদ যাচ্ছে না গালিগালাজও৷ এমনকি হত্যার চক্রান্তের অভিযোগও উঠছে রাম মন্দির নির্মাণের দাবিতে এত দিন কোমর বেঁধে লড়াইয়ের পরে এ বার তার চাবির দখল নিয়ে অযোধ্যার সাধুদের মধ্যে যুদ্ধ ক্রমশ তিক্ত হচ্ছে৷
তপস্বী ছাউনির মহন্ত পরমহংস দাসের অভিযোগ, রামমন্দির তৈরির দাবিতে তিনি জেলে গিয়েছেন, আমরণ অনশনেও বসেছেন৷ কিন্তু এখন মন্দিরের জন্য সরকারের গড়া অছি পরিষদে (ট্রাস্ট) তাঁর সামিল হওয়া রুখতে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছে রাম মন্দির ন্যাস৷ পরমহংস দাসের কথায়, ‘আমাকে হত্যার জন্যই লোক পাঠিয়েছিলেন ন্যাসের প্রধান নিত্যগোপাল দাস৷ তারা এসে ভাঙচুর চালিয়েছে৷ বাদ রাখেনি গালিগালাজও৷’ ন্যাসের সদস্য রামবিলাস বেদান্তী পরিষদের মাথায় বসতে চান বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি৷
যে নির্মোহী আখড়া ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৯ পর্যন্ত বিতর্কিত চত্বর পুজা চালিয়ে গিয়েছে, তাদেরও পরিষদে সামিল করার বিরোধী ন্যাস৷ আবার নির্মোহী আখড়ার মহন্ত দীনেন্দ্র দাসদের পাল্টা ইঙ্গিত, ন্যাসের চোখ মন্দিরের তহবিলে৷ এর আগে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিরুদ্ধে যে ওই তহবিলের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিল, এখন তা–ও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা৷ করসেবকদের কেউ চান ট্রাস্টে থাকুন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী৷ আবার কেউ বলছেন, ট্রাস্টে থাকুন শুধু সাধুসন্তরা৷
স্থানীয় সূত্রে শোনা যাচ্ছে, সাধুরা জানেন, বিতর্কিত ২.৭৭ একরের বাইরে আরও ৬৭ একর জমি রামমন্দিরের হাতে আসার সম্ভাবনা৷ তার উপরে এত প্রচারের আলোয় থাকা মন্দির৷ দেশে–বিদেশে এত ভক্ত৷ সব মিলিয়ে মন্দিরের কোষাগার দ্রুত ফুলেফেঁপে ওঠার বিপুল সম্ভাবনা৷
প্রশ্ন উঠছে, সেই কারণেই কি এক ইঞ্চি জায়গাও ছাড়তে নারাজ কোনও পক্ষ?
(আনন্দবাজার পত্রিকা : ১৭ নভেম্বর ২০১৯)