রাজ্যে বেশি আসনে জিতেছে বলেই তৃণমূলের অপকীর্তি মুছে যায় না

এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ২৯ আসন প্রাপ্তি, অর্থাৎ ৭টি বাড়তি আসন কি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সীমাহীন দুর্নীতি, গণতন্ত্র হত্যার যাবতীয় অভিযোগকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিল? বেশি আসন পেয়েছে বলেই কি তাদের অপকর্মগুলির প্রতি জনগণের সমর্থন আছে ধরে নিতে হবে? ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান সাত লক্ষ ছাড়ানোও কি তাদের প্রতি বিপুল জনসমর্থনের ঢেউয়ের ইঙ্গিত? বিচার করা দরকার।

লোকসভায় ২৯টি আসন পেয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব এমন স্বপ্নও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন যে, সারা ভারতে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁরাই চ্যাম্পিয়ন। ফলে বিজেপির এনডিএ জোটের শরিক এবং শিবির বদলে অতি দক্ষ দুই নেতা অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম (১৬ আসন) এবং বিহারের নীতিশ কুমারের জেডিইউ-কে (১২ আসন) ইন্ডিয়া জোটে ভাঙিয়ে আনতে পারলেই বিরোধীরা জোট সরকার গড়ে ফেলতে পারবে। অতি উৎসাহী কেউ কেউ সেই সরকারে মমতা ব্যানার্জীকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসানোর স্বপ্নও দেখছেন হয়ত! এই সুযোগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ‌্যোপাধ্যায় নানা আঞ্চলিক দলের নেতাদের সাথে দৌত্য চালিয়ে নিজেদের দরকষাকষির জোরটাও পরখ করছেন ও সর্বভারতীয় স্তরে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এ কথা ঠিক, সারা দেশেই এবারের নির্বাচনে সংবাদমাধ্যম কথিত কোনও বিশেষ ঢেউয়ের জোর না থাকলেও দেশের বিরাট অংশের মানুষ বিজেপির অপশাসন আবার বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কায় নীরবে কিন্তু সুস্পষ্টভাবে মূলত বিজেপির বিরুদ্ধেই রায় দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে তার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবে বিজেপির হাত থেকে আপাতত রক্ষা পাওয়ার জন্য বড় সংখ্যক মানুষ ভোট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। গোটা ভোটের প্রচার জুড়ে প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপি নেতারা মানুষের জীবনের জ্বলন্ত সমস্যা ছেড়ে হিন্দু-মুসলমান, মন্দির-মসজিদ নিয়ে প্রচার করে গেছেন। সাধারণ মানুষের প্রতি প্রবল তাচ্ছিল্য নিয়ে তাঁরা ভেবেছেন, মূল্যবৃদ্ধি-বেকারত্বের জ্বালায় প্রলেপ দিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ আর রামমন্দিরের আবেগই যথেষ্ট। এতেই মানুষ সব ভুলে থাকবে! সাধারণ মানুষ এটাকে কোনও মতেই ভাল চোখে দেখেননি। যে কারণে খোদ রামমন্দির যে কেন্দ্রে, উত্তরপ্রদেশের সেই ফৈজাবাদে বিজেপি হেরেছে। বিজেপি নেতাদের চরম ঔদ্ধত্যকেও মানুষ ভালভাবে নেয়নি। তাঁদের ৪০০ পারের স্লোগান মানুষের কাছে ঔদ্ধত্যের প্রতীক হিসাবেই দেখা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা উচ্চনাদে পশ্চিমবঙ্গে ভাষণ দিয়ে ঔদ্ধত্যের পরিচয় যত দিয়ে গেছেন তত তাঁদের প্রতি সমর্থন কমেছে। এবারে সারা ভারতেই নরেন্দ্র মোদি যেখানে বেশি ভাষণ দিয়েছেন, সেখানেই বিজেপির ফল খারাপ হয়েছে। ইডি-সিবিআইকে দিয়ে বিরোধীদের হেনস্থা করার মতো ক্ষমতার অপব্যবহার মানুষকে শঙ্কিত করেছে। এই স্বৈরাচারী হুমকি ও ঔদ্ধত্যকে কোনও দিনই সাধারণ মানুষ ভাল চোখে দেখেন না। অতীতেও শাসকদলগুলিকে এর মূল্য চোকাতে হয়েছে।

যত দিন গেছে বিজেপি নেতারা বুঝতে পেরেছেন ৪০০ পার একেবারে হাস্যকর স্লোগানে পরিণত হচ্ছে। তত বেশি করে প্রধানমন্ত্রী নিজে চরম সাম্প্রদায়িক লাইন নিয়েছেন। তাঁরা ভেবেছিলেন সিএএ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু ভোট কিনবেন। তার জন্য অনেক গলা ফাটিয়েছেন। এমনকি ভোটের ঠিক আগে কয়েকজনকে সিএএ-তে নাগরিকত্বও তাঁরা দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে তা বিরাট সংখ্যক হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে আশঙ্কারই জন্ম দিয়েছে। হরিয়ানা, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশের কৃষকদের বড় অংশ বিজেপির কৃষিনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চেয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাবের মানুষ বিজেপির স্বৈরাচারী শাসনকে হঠাতে চেয়ে ভোট দিয়েছেন। সারা ভারতেই বিজেপির বিদ্যুৎনীতি, শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে জনমত ধ্বনিত হয়েছে। বিজেপি বিরোধী এই মানসিকতার ছাপ পশ্চিমবঙ্গেও ছিল। যে কারণে এ রাজ্যের বহু গণতন্ত্রপ্রিয় সাধারণ মানুষ বলেছেন, যে জেতে জিতুক, বিজেপির হার চাই। কিন্তু তাঁরাও যখন নীতি ধরে খোঁজ করতে গেছেন, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে বিজেপির শাসন-নীতির কোনও পার্থক্য কি তাঁরা পেয়েছেন?

বিজেপির চালু করা সর্বনাশা জাতীয় শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে দেশের প্রায় সমস্ত শিক্ষাবিদ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেভ এডুকেশন কমিটি, এআইডিএসও এবং রাজনৈতিক দল হিসাবে এস ইউ সি আই (সি) এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। উল্লেখ্য, আন্দোলনের চাপে কর্ণাটক ও তামিলনাডু সরকার এই শিক্ষানীতি তাদের রাজ্যে চালু করবে না বলে ঘোষণা করেছে। কিন্তু তা চালু না করলে কেন্দ্রের টাকা পাওয়া যাবে না, এই অজুহাতে তৃণমূল কংগ্রেস সরকার পশ্চিমবঙ্গে চালু করে দিয়েছে। বিদ্যুৎনীতি, কৃষিনীতি, মূল্যবৃদ্ধি, হাজার হাজার সরকারি পদ খালি ফেলে রেখেও স্থায়ী সরকারি কাজে বেশিরভাগ ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ ইত্যাদি সমস্ত নীতিতেই কেন্দ্রের বিজেপির সাথে রাজ্যের তৃণমূলের কোনও মৌলিক পার্থক্য নেই। ভোটের স্বার্থে তৃণমূল একদিকে নরম হিন্দুত্ব অন্যদিকে মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের জন্য যা করা দরকার তাই করেছে। জাতপাতের রাজনীতিতেও তারা খামতি রাখেনি। এ সব কিছু বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিকল্প হওয়া দূরে থাক, সেই বিষ বাড়তে সাহায্য করছে।

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জনমানসে প্রবল ক্ষোভ এ রাজ্যে জনমানসে ধূমায়িত হয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি, বালি খাদান, কয়লা খাদান থেকে ব্যাপক দুর্নীতির সাথে যুক্ত হয়েছে গরু পাচার, নারী পাচার, শিশু পাচার, মদের ব্যাপক প্রসার, নারী নির্যাতন। আমফান ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি, সন্দেশখালিতে শাজাহানদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা, পুলিশ-প্রশাসনকে দলদাসে পরিণত করা– সামান্য বিবেকসম্পন্ন পশ্চিমবঙ্গবাসী মেনে নেননি। ১০০ দিনের কাজ না করেও বা যৎসামান্য কাজ দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করা, আবাসন যোজনার টাকা প্রাপকদের সাথে ভাগাভাগি করা কি কোনও ভোটার মেনে নিতে পারেন?

তোলাবাজি, সাধারণ মানুষকে হুমকি দেওয়া, বেআইনি অস্ত্র কারবার রাজ্যে সাধারণ ঘটনা। বিদ্যুতের ১৪ দফা মূল্যবৃদ্ধি, কলকারখানা বন্ধ থাকা ও নতুন শিল্পস্থাপনে ব্যর্থতা, সরকারি কর্মচারীদের ডিএ না দিয়ে তাকে ‘ভিক্ষের দান’ বলে কটাক্ষ করা– কোনও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষই ভাল ভাবে নেননি। তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের প্রচারেও এ রাজ্যে কর্মসংস্থান কিংবা মানুষের রোজগারের সুযোগ বৃদ্ধির দাবি করেনি। তারা সরকারি তহবিল থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী প্রভৃতি অনুদানের প্রচারেই নির্ভর করেছে। অন্য পুঁজিতোষণকারী সরকারের মতোই অসহায় গরিব মানুষের ভোট পেতে এটাই তাদের সম্বল ছিল।

বহু মানুষ শুধুমাত্র বিজেপির জয় রুখে দেবার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসকে পছন্দ না করলেও এমনকি তীব্র সমালোচনা করলেও তাদের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছেন– তারাই বিজেপিকে হারাতে পারবে, এ কথা মনে করে। আবার এ কথাও ভুলে গেলে চলবে না, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির শক্তি অর্জনের পিছনে অন্যতম কারণ হল তৃণমূলের অপশাসনের প্রতি মানুষের ক্ষোভ। শাসক পুঁজিপতি শ্রেণি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভটা যাতে আন্দোলনের পথে চলে যেতে না পারে তার জন্য তাদের আর এক সেবাদাস বিজেপিকে বিকল্প হিসাবে তুলে ধরেছে। এজন্যই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির কোনও সংগঠন না থাকা সত্ত্বেও বৃহৎ পুঁজি নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম তৃণমূলের বিকল্প হিসাবে বিজেপিকে ব্যাপকভাবে তুলে ধরেছে।

অবশ্য পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির গ্রহণযোগ্যতা তৈরির জন্য সিপিএমের ভূমিকার কথা উল্লেখ না করলে চলে না। ২০১৯-এ ‘আগে রাম পরে বাম’ করে তারা ব্যাপক সংখ্যায় বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল। এ বারেও বহু সিপিএম সমর্থক ‘তৃণমূলকে আগে হঠাই’ বলে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম ৩৪ বছর ধরে শাসন চালানো সিপিএমকে যতই তুলে ধরার চেষ্টা করুক না কেন, জনগণ তাদের শাসনকালের ভয়াবহ দিনগুলো আজও ভুলতে পারেনি। ফলে তৃণমূলকে চাই না, কিংবা বিজেপিকে চাই না ভেবেও সিপিএম তাদের বিকল্প হিসাবে মানুষের সামনে উঠে আসেনি। ভোট হয় তৃণমূলে, না হলে বিজেপিতে চলে গেছে।

অন্যদিকে, সিপিএম নেতারা বিকল্প হিসাবে বামপন্থী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে না তুলে কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর হাত ধরেই সহজ পথে বাজিমাত করার আশায় ছিলেন। যদিও শেষপর্যন্ত আইএসএফ-এর সাথে তাঁদের জোট হয়নি। এস ইউ সি আই (সি) ঐক্যবদ্ধ বামপন্থী আন্দোলনের কথা বারবার তুলে ধরলেও সিপিএম নেতারা তাতে কর্ণপাত করেননি। ফলে এস ইউ সি আই (সি) একাই ব্লক স্তরে, জেলা স্তরে বিদ্যুতের সমস্যা নিয়ে, জবকার্ডের সমস্যা নিয়ে, চাষিদের ফসলের দামের সমস্যা সহ মানুষের নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছে। জাতীয় শিক্ষানীতি এ রাজ্যে চালু করার বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে নানা পথে আন্দোলন করেছে। আবার রাজ্যভিত্তিক আইন অমান্য বিক্ষোভ ইত্যাদি চালিয়ে গেছে। আন্দোলন করতে গিয়ে কর্মীরা পুলিশের মারে রক্তাক্ত হয়েছেন, দু’জন তাঁদের চোখ হারিয়েছেন। কিন্তু আন্দোলনটা চলছেই। অন্যদিকে সিপিএম নেতারা মাঝে মাঝে এ সব নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন, দু-একটা মিছিল করেছেন। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা সোসাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেই আন্দোলন হচ্ছে বলে ভেবেছেন। কিন্তু সমস্যা হল তৃণমূল আজ যে সব জনবিরোধী কাজ করছে তার বেশিরভাগই তাঁদের আমলেই শুরু। ফলে তাঁদের কথা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। আর কংগ্রেস-আইএসএফকে আন্দোলনের শক্তি হিসাবে সিপিএম নেতারাও ভাবতে পারেন কি? মানুষ তো ভাবেই না। ফলে তাঁদের জোট একটা নিছক ভোটের জোট ছাড়া কিছু হয়ে ওঠার কথাও ছিল না, হয়ওনি। একমাত্র এস ইউ সি আই (সি) ধারাবাহিকভাবে তৃণমূল ও বিজেপিকে আদর্শগতভাবে মোকাবিলা করে গেছে। যদিও বৃহৎ সংবাদমাধ্যম চেষ্টা করে গেছে এস ইউ সি আই (সি)-র বদলে তৃণমূলের বিকল্প হিসাবে সিপিএম-কংগ্রেস জোটকেই তুলে ধরতে, যাতে বিপ্লবী বামপন্থার শক্তি বৃদ্ধি আটকানো যায়। এর ফল হয়েছে বিপরীত। বিজেপি বিরোধী ভোট তৃণমূলের দিকেই চলে গেছে।

এর সঙ্গে উল্লেখ করা দরকার, ভোট লুঠের কাজে সিপিএমের ছেড়ে রাখা জুতোয় তৃণমূলের পা গলানোকে। আরামবাগ, কেশপুরে সিপিএম যে কায়দায় একসময় বুথে বুথে ১০০০-০ ভোটে বিরোধীদের হারানোর কৌশলের জন্য গর্ব করত, তৃণমূল সেই কৌশলের যোগ্য ছাত্র হয়েছে। এবারে সব কেন্দ্রে তারা তিন-চারজন করে ডামি প্রার্থী দিয়ে রেখেছিল, যাতে তারা ফাঁক পেলেই ছাপ্পায় হাত লাগাতে পারে। সারা রাজ্যেই বিশেষত শেষ তিনটি দফায় বেলা দুটোর পর ব্যাপক ছাপ্পা ভোটের আয়োজন করেছে তৃণমূল। কলকাতা, বিধাননগরের মতো শহর এলাকাতেও বহু বুথেই কোনও পরিচয়পত্র দেখার বালাই শেষ দিকে ছিল না। বিরোধীরা এতই দুর্বল যে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হয়েছে খুব কম জায়গায়। উত্তর কলকাতা ও যাদবপুরের বেশ কিছু বুথে এস ইউ সি আই (সি) এজেন্টরা ছাড়া অন্য দলের এজেন্টরা প্রতিবাদই করেননি। ডায়মন্ডহারবারে কার্যত অন্য দলকে তৃণমূল প্রচার করতেই দেয়নি। ফলতা বিধানসভার ফতেপুরে এস ইউ সি আই (সি)-কে প্রচারই করতে দেয়নি তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। ডায়মন্ডহারবার বিধানসভার বোলসিদ্ধি-কালিনগর অঞ্চলে বদরতলা, বজবজ বিধানসভার বাওয়ালির ২১১ নম্বর বুথ, আত্মারামপুরে ১৭৫ নম্বর বুথে এজেন্ট ফর্ম কেড়ে নিয়েছে তৃণমূল। এছাড়াও এই লোকসভা কেন্দ্রে রেকর্ড ভোটে জেতার তাড়নায় তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনীকে, মোটরবাইক বাহিনীকে কয়েক মাস আগে থেকেই কাজে নামানো হয়েছিল বিরোধী ভোটারদের ভোটমুখী হওয়ার ইচ্ছাটাই মুছে ফেলতে। অনেক বুথে নাকি ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে! সিপিএমের অনিল বসু, নন্দরাণী ডলদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দে্যাপাধ্যায় অনেক বুথেই ভোট পেয়েছেন হাজারের আশেপাশে, সেখানে বিরোধী দুই প্রার্থী দুটি-একটি করে, বাকিরা শূন্য ভোট পেয়েছেন। সব মিলিয়ে বলা যায়, তৃণমূলের কিছু বেশি আসন পাওয়া মানেই তার অপকর্মের কথা মানুষ ভুলে গেছে– এ কথা মনে করার কোনও কারণ নেই।