এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)–এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২২ অক্টোবর এক বিবৃতিতে বলেন, রাজস্থানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ‘ক্রিমিনাল ল’জ (রাজস্থান অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০১৭’ নামে যে চরম অগণতান্ত্রিক বিধানসভায় পেশ করেছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা করছি৷ এই বিল অনুযায়ী, দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কর্মরত বা প্রাক্তন বিচারপতি, ম্যাজিস্ট্রেট কিংবা আমলাদের নাম প্রকাশ করাটাই হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ– আদালতে তাদের নামে মামলা করার অনুমতি পাওয়া তো দূরের কথা৷
এই পদক্ষেপ শুধু জনগণের সত্য জানার অধিকার খর্ব করার মারাত্মক অপচেষ্টা তাই নয়, এ হল প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতার উপরেও সরাসরি আঘাত৷ পাশাপাশি, পুঁজিবাদী সরকার ও ক্ষমতাসীন বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলের প্রতি বিচারবিভাগ সহ সরকারি আমলাদের অন্ধ আনুগত্য আদায়ের ভয়ানক ষড়যন্ত্র৷ ফলে স্বৈরাচারী সরকারকে সন্তুষ্ট করার অত্যুগ্র বাসনায় তাদের সমস্ত ইচ্ছা ও নির্দেশ বিনা বাক্যব্যয়ে মেনে নেবেন তাঁরা এবং এভাবে গোটা সরকারি প্রশাসনিক ব্যবস্থাটিই কার্যত প্রহসনে পর্যবসিত হবে৷ রাজস্থান সরকারের এই পদক্ষেপ– সেবাদাস সরকারের মাধ্যমে বুর্জোয়া রাষ্ট্রের হাতে ধীরে ধীরে স্বৈরাচারী রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা এবং সরকারের বেআইনি দুষ্ক্র্ম যা সাম্রাজ্যবাদী–পুঁজিবা দুনিয়ায় সর্বব্যাপ্ত, তাকে আড়াল করা– স্পষ্টতই প্রশাসনিক ফ্যাসিবাদের সূচনা৷ সাম্রাজ্যবাদ–পুঁজিবা আজ শুধু দুর্নীতি ও নানা বেআইনি দুষ্কর্মের জন্ম দিচ্ছে তাই নয়, এগুলির উপরে ভর করেই এই ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে আছে৷ এসব আড়াল করতে প্রতিদিন তাকে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতে হচ্ছে যাতে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করে রাষ্ট্রের হাতে চরম ক্ষমতা তুলে দিতে গণতন্ত্রের ভেকের আড়ালে ফ্যাসিবাদ কায়েম করা যায়৷
সুতরাং, ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে এই কালা অর্ডিন্যান্স প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা না গেলে গোটা দেশকেই ধীরে ধীরে পূর্ণ ফ্যাসিবাদের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে৷ তাই, শুধু রাজস্থান নয়, গোটা দেশের খেটে খাওয়া মানুষকে আমরা আবেদন জানাচ্ছি, সরকারের এই পদক্ষেপ বিনা বাধায় মেনে না নিয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে উপযুক্ত আন্দোলন গড়ে তুলে শাসক পুঁজিপতি শ্রেণি ও তার সরকারের এই হীন ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করুন৷