কৃষক ও খেতমজুর জীবনের জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানের কোনও উদ্যোগই নেই কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলির। এর বিরুদ্ধে দেশ জুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে এ আই কে কে এম এস। তারই অঙ্গ হিসাবে এ রাজ্যের জেলাশাসক দপ্তরগুলিতে ১৮ ডিসেম্বর বিক্ষোভ দেখালেন হাজার হাজার কৃষক-খেতমজুর। দাবিপত্রও জমা দেন তাঁরা। জেলা শহরগুলি মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে ওঠে। তাঁদের দাবি– নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু করতে হবে এবং ফসলের এমএসপি আইনসঙ্গত করে সরকারকে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি উৎপাদন খরচের কমপক্ষে দেড় গুণ দামে ফসল কেনার ব্যবস্থা করতে হবে, কৃষি শ্রমিকের সারা বছরের কাজ ও পর্যাপ্ত মজুরির ব্যবস্থা করতে হবে, বিশেষ করে জব কার্ডধারী শ্রমিকদের বছরে কমপক্ষে ২০০ দিনের কাজ এবং ৬০০ টাকা দৈনিক মজুরির ব্যবস্থা করতে হবে, অবিলম্বে নয়া বিদ্যুৎ বিল বাতিল করতে হবে এবং স্মার্ট মিটার চালু করা চলবে না। ক্ষুব্ধ কৃষকদের আরও দাবি সমস্ত কৃষিঋণ মকুব করতে হবে, ষাটোর্ধ্ব কৃষক ও খেতমজুরদের মাসিক ১০ হাজার টাকা পেনশন দিতে হবে, খরা বন্যা প্রতিরোধে উপযুক্ত কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফসলের ক্ষতিপূরণের জন্য উপযুক্ত কার্যকরী ফসল বিমা ব্যবস্থা চালু করতে হবে, আবাস যোজনায় দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে, সারের কালোবাজারি বন্ধ করে স্বল্পমূল্যে সার, কীটনাশক, বীজ সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করতে হবে, চাষের কাজে বিনা পয়সায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে।
আধিকারিকরা দাবির ন্যায্যতা স্বীকার করে তাদের পক্ষে যা করা সম্ভব তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু এই মৌখিক প্রতিশ্রুতির কোনও মূল্য নেই। দিল্লির কৃষক আন্দোলনে দেশের প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের দাবি মেনে নেওয়ার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা পালন করেননি। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড গোপাল বিশ্বাস বলেন, কৃষক-খেতমজুরের আন্দোলন গড়ে তুলে সরকারকে দাবি মেনে নিতে বাধ্য করা ছাড়া বিকল্প রাস্তা নেই। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় গ্রামে গ্রামে সংগ্রামের হাতিয়ার শত শত গ্রাম কমিটি গঠিত হয়েছে। তারা বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ঐতিহাসিক কৃষক ও খেতমজুর সমাবেশের কথা ঘোষণা করা হয়েছে।