গত দু’বছর ধরে মুর্শিদাবাদে সামশেরগঞ্জ ব্লকের ধানঘরা, শিবপুর, ধুসরিপাড়া, ঘনেশ্যামপুর, প্রতাপগঞ্জ, সাতঘরিয়া, চাচন্ড, দিঘরী, ধুলিয়ান সহ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েকশো পরিবার গঙ্গার ভয়াল ভাঙনে বিধ্বস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত। ইতিমধ্যে শতাধিক বাড়ির গঙ্গায় তলিয়ে গেছে। যেভাবে নদীর তাণ্ডবলীলা চলছে, তাতে ফরাক্কা, সামশেরগঞ্জ, সুতি সহ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার অসংখ্য জনপদ মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভাঙনে শুধু নদীর পাড় নয়, মানুষের জীবন ভাঙছে, ভাঙছে মানুষের বাঁচার স্বপ্ন। এসইউসিআই(সি) মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির সদস্য কমরেড মির্জা নাসিরউদ্দিন ও কমরেড সামিরুদ্দিন-এর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল ২২ আগস্ট ভাঙন-বিধ্বস্ত এলাকা পর্যবেক্ষণ করে দুর্গত মানুষদের খোঁজ-খবর নেন (ছবি)।
প্রতিনিধিরা জানান, বিজ্ঞানের এত অগ্রগতি সত্তে্বও কেন্দ্র রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় নদীভাঙন রোধে কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। মানুষের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার অভাবেই আজ হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে সমস্ত মানুষকে সংগঠিত করে বন্যা-ভাঙন প্রতিরোধ কমিটি তৈরি করে দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান তাঁরা।
তাঁদের দাবি, ১) বন্যা-ভাঙন বিপর্যয় রোধে নদী-বিশেষজ্ঞ, ভূতত্ত্ববিদ, ইঞ্জিনিয়ার ও ওয়াকিবহাল মহলের সমন্বয়ে একটি সার্বিক নদী পরিকল্পনা রচনা করে বন্যা-ভাঙনের কারণ অনুসন্ধান ও বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করতে হবে। এর মধ্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলবে না। ২) অবিলম্বে নদীপ্রবাহে বাধা সৃষ্টিকারী চর ও অন্যান্য বিষয়গুলি পরিকল্পনামাফিক অপসারণ করে জলনিকাশি ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করতে হবে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। জমি চাষযোগ্য করতে সরকারি খরচে বালি অপসারণ করতে হবে। ৩) যত্রতত্র ইটভাটা করে নদীখাত দখল বন্ধ করতে হবে। ৪) নদী-ভাঙন রোধে শুখা মরসুমে ধুলিয়ান থেকে নিমতিতা পর্যন্ত শক্ত বাঁধ ও পাড় নির্মাণ করে জনপদ রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ৫) ভাঙনের কারণে গৃহহীন মানুষকে বাসস্থান ও অর্থনৈতিক পুনর্বাসন দিতে হবে।