৭ ফেব্রুয়ারি পার্বত্য রাজ্য উত্তরাখণ্ডে আবারও ঘটে গেল এক মর্মান্তিক বিপর্যয়। নন্দাদেবী হিমবাহ ভেঙে আসা জল, কাদা ও পাথরের মারাত্মক আঘাতে ভেঙে গুঁড়িয়ে গেল যোশীমঠ সহ উত্তরাখণ্ডের বিস্তীর্ণ অংশ। অসংখ্য মানুষ নিহত, আহত এবং নিখোঁজ, যার সঠিক সংখ্যা দেয়নি কেন্দ্রীয় এবং উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার। তাঁদের অধিকাংশই গরিব মানুষ। কেউ স্থানীয় গ্রামবাসী অথবা কেউ টানেল নির্মাণের কাজে ভিন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিক।
প্রকৃতির কোনও ঘটনা বা দুর্ঘটনা এমনি এমনি বিনা কারণে হয় না, হয় সুনির্দিষ্ট কার্য-কারণ সম্পর্কের ভিত্তিতে। উত্তরাখণ্ডে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন তাতে স্পষ্ট, সরকার এবং তার মদতপুষ্ট জলবিদ্যুৎ কোম্পানিগুলির বেপরোয়া আচরণই এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী। উচ্চ হিমালয়ের হিমবাহ অঞ্চলে ডিনামাইট ফাটিয়ে বড় বড় পাথর ভেঙে চওড়া রাস্তা নির্মাণ, নদীবাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য হিমবাহের বরফ কেটে ভিতর পর্যন্ত লোহার স্তম্ভ ঢুকিয়ে দেওয়া, যথেচ্ছ পরিমাণে গাছ কেটে ফেলা, বাঁধ দিয়ে টানেল কেটে অবৈজ্ঞানিক ভাবে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা ইত্যাদি যত ধরনের পরিবেশ ধ্বংসকারী সর্বনাশা কাজ করা যেতে পারে, তারা তা করেই চলেছে।
আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন গরম গরম বত্তৃতা দিচ্ছেন, ঠিক তখনই উত্তরাখণ্ডের এই বিপর্যয় দেখিয়ে দিয়েছে, হিমালয়ের মতো অত্যন্ত সংবেদনশীল পরিবেশযুক্ত এলাকা নিয়েও সরকারের আদৌ কোনও মাথা ব্যথা নেই। উন্নয়নের নামে মুষ্টিমেয় পুঁজিমালিকের লাভের জন্য পুঁজিবাদী রাষ্টে্রর কর্ণধাররা মানুষের জীবন-জীবিকা তো বটেই সামগ্রিকভাবে বাস্তুতন্ত্রকে কতটা বিপন্ন করে তুলতে পারে, তা আবার দেখিয়ে দিল এই বিপর্যয়।
যোশীমঠের কাছে রইনি গ্রাম পরিবেশ আন্দোলনের পরিচিত নাম। ১৯৭৩-‘৭৪ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার এবং ঠিকাদারদের হাত থেকে জঙ্গল বাঁচাতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। এই অন্দোলন ‘চিপকো’ আন্দোলন নামে সারা বিশ্বে পরিচিত। এই গ্রামের বাসিন্দারা দু’বছর আগে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন, যাতে ওই গ্রামের কাছে ঋষিগঙ্গার উপর ড্যাম এবং টানেল কেটে জলবিদ্যুতের প্রকল্প করা না হয়। আইন অনুযায়ী, এই ধরনের কাজ শুরু করার আগে এলাকায় জনশুনানি এবং পরিবেশে তার প্রভাব সম্পর্কিত বিস্তৃত সমীক্ষা (এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট) হওয়ার কথা। কিন্তু সরকার এ সব আইনের তোয়াক্কা করেনি। উত্তরাখণ্ডের দীর্ঘদিনের পরিবেশকর্মী বিমল ভাই সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছানুসারে তৈরি ৯০০ কিমি দীর্ঘ ‘চারধাম অল ওয়েদার রোড’-ই হল এলাকার প্রধান বিপদ। এই রাস্তা বানাতে গিয়ে হিমবাহ এলাকার ভিতর পর্যন্ত পাথর ফাটানো হয়েছে, নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে, অগণিত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, ভারি বরফের আস্তরণময় পর্বতের ভিত কাঁপিয়ে ‘চৌড়ি সড়ক’ নির্মাণ করা হয়েছে। তার ফল অত্যন্ত ভয়াবহ বলে বিশেষজ্ঞরা বহুবার বলেছেন। কিন্তু সরকার এ সব সতর্কবাণীর কোনও মূল্য দেয়নি। তা ছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে যুদ্ধ উত্তেজনা জিইয়ে রেখে ভারতীয় পুঁজিপতিদের অস্ত্র ব্যবসার সুযোগ করে দিতে এই এলাকায় যুদ্ধ সরঞ্জাম সহ যান-চলাচল বৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্বার্থে হিন্দুত্বের পালে হাওয়া দিতে চারধাম তীর্থ যাত্রা করা– এ সবের মধ্য দিয়ে প্রকৃতির উপর যথেচ্ছ অত্যাচার চালানো হয়েছে।
রইনির এক গ্রাম মুখিয়া অভিজয় নেগির মতে, ২০০৫ সাল থেকে ঋষিগঙ্গা নদীখাতে মেশিন বসিয়ে বড় বড় পাথর ভাঙা শুরু হয়। সেই সঙ্গে ছিল নিয়মিত ব্লাস্টিং। ফলে বন থকে ভয়ে পশুরা গ্রামে ঢুকতে শুরু করে। প্রশাসনের কাছে গ্রামের বাসিন্দারা বারবার তাদের আশঙ্কা ও অসুবিধার কথা জানালেও প্রশাসন কিছু করেনি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মন্দাকিনীর বিধ্বংসী ধ্বংসলীলা ঘটে যায়। এই বিপর্যয়ের পরে যে হাইপাওয়ার কমিটি গঠিত হয়েছিল সেই কমিটি বলেছিল, হিমালয়ের ২০০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় কোনও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা উচিত নয়। নির্মীয়মাণ ২৪টি প্রকল্পের মধ্যে ২৩টিকে বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করে তারা।
কিন্তু সেই সুপারিশ থেকে যায় ফাইলবন্দি। আবার, নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলির আবর্জনা নিয়মিত না সরানোর ফলে মন্দাকিনী নদীর খাতগুলি স্ফীত হয়ে উঠতে থাকে এবং বর্ষায় জলস্ফীতির সম্ভাবনা দেখা দেয়। রইনির বাসিন্দারা হাইকোর্টে আবেদন জানালে আদালত ২০১৯ সালে নির্দেশ দেয় নদীখাতের সমস্ত আবর্জনা সরিয়ে ফেলতে হবে। হাইকোর্ট আরও বলেছিল, বিশেষ অনুমতি ছাড়া রইনি গ্রামের আশেপাশে নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের কোথাও বিস্ফোরণ ঘটানো যাবে না। বারে বারে উত্তরাখণ্ডের সাধারণ মানুষ সরকারের তথাকথিত ‘উন্নয়ন’ পরিকল্পনার প্রকৃত স্বরূপটা বুঝে তাকে রুখবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সরকার কান দেয়নি। এই ঘটনাগুলি থেকে দেখা যাচ্ছে সরকার বড় বড় বিদ্যুৎ কোম্পানির মালিক ধনকুবেরদের লাভ নিশ্চিত করতে আদালতের রায়কেও কোনও গুরুত্বই দিল না।
‘দিভেচা সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’-এর ২০১৮ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী হিমালয়ে উত্তর-পশ্চিমাংশের তাপমাত্রা ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ০.৬৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড যা সমগ্র বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির থেকেও বেশি। হিমালয়ের মতো পর্বতমালা যার গঠনকার্য আজও চলছে, যার হিমবাহের উপর দেশের নদী প্রবাহ থেকে জলবায়ু অনেকাংশে নির্ভরশীল সেখানে উন্নয়নের নামে এই ধরনের কাজ কতটা বিপর্যয়কর হতে পারে তা সরকারের মন্ত্রী-আমলাদের অজানা নয়। কিন্তু পরিবেশ রক্ষার থেকেও জলবিদ্যুৎ কোম্পানির লাভ বাড়ানো, যথেচ্ছ সড়ক নির্মাণ করে মন্ত্রী-আমলা-ঠিকাদারদের কাটমানির বন্দোবস্ত, পাহাড়ের ভূপ্রাকৃতিক চরিত্রকে কোনও গুরুত্ব না দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে শহর নির্মাণ, ট্যুরিজম ব্যবসা প্রভৃতি সরকারের কাছে অনেক বড়। ওই অঞ্চলে বসবাসকারী কয়েক কোটি মানুষের জীবন বিপন্ন করে, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে, পরিবেশের পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক নিয়ন্ত্রণকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বারে বারে সরকার ওই এলাকায় উন্নয়নের নামে অপউন্নয়ন করেছে। যার ফলে ঘটেছে একের পর এক বিপর্যয়, ঘটছে প্রাণহানি বিপুল ক্ষয়ক্ষতি।
পরিবেশ রক্ষা করার ন্যূনতম দায়বদ্ধতা যে বিজেপি সরকারের নেই তা এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটেই স্পষ্ট। বাজেটে পরিবেশ দফতরকে দেওয়া হয়েছে ২৮৭০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.৫ শতাংশ কম। ৩৫ লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যাকশন প্ল্যান’-এর জন্য বরাদ্দ মাত্র ৩০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, এই প্ল্যানের জন্য শুধু পশ্চিমবঙ্গেই দরকার ৩৬০০ কোটি টাকা। বাজেট পেশ করার সময়ে ‘অতিমারি’ কারণের কথা বারে বারে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ২০২০ সালে তো অতিমারি ছিল না। তখন জলবায়ু খাতে দেওয়া হয়েছিল মাত্র ৪০ কোটি টাকা, যা প্রায় এবারের কাছাকাছি। দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ জলবায়ু খাতে বরাদ্দ করেছে ২০ হাজার কোটি টাকা, মালদ্বীপের মতো ছোট দেশ প্রতিরক্ষার তুলনায় পরিবেশের জন্য বেশি বরাদ্দ করেছে। তাহলে এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভারত সরকার উদাসীন কেন?
পরিবেশ বিষয়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থা যেমন ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক’, ‘ওয়াইল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া’ ও ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ফরেস্ট্রি রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন’ প্রভৃতির জন্য বরাদ্দ বাজেটে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এরা প্রয়োজনীয় তহবিল বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে সংগ্রহ করবে। এতেই স্পষ্ট, এই সংস্থাগুলি আগামী দিনে মালিকদের বিরুদ্ধে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতিকর দিক নিয়ে কোনও সত্য কথা বলতে পারবে না। এরা টাকা দিয়ে সহজেই এনওসি সংগ্রহ করবে এবং পরিবেশ ধ্বংস করবে।
সকলেই জানেন, সরকার বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে ক্রমাগত বেসরকারি হাতে বেচে দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ অভিযানে তাপ বিদ্যুৎ প্রকল্পকে আরও বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে যা ব্যাপকভাবে কয়লা পোড়ানো ব্যতিরেকে সম্ভব নয় এবং যা অবশ্যই পরিবেশের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। একইভাবে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সুনিয়ন্ত্রিত পরিকল্পনা না হলে পরিবেশ ও বাস্তুতন্তে্রর উপর তা বিপর্যয়কারী প্রভাব ফেলতে পারে। তৃতীয়ত, ‘পানীয় জল’কে বেশি বেশি করে বেসরকারি হাতে দেওয়ারই পরিকল্পনা আছে সরকারের। ইতিমধ্যেই বোতলজাত পানীয় জলের ব্যবসাদার বহুজাতিক কোম্পানিগুলি যেভাবে জলস্তরের ক্ষতি করছে, শহর গ্রামের জল সরবরাহ যেভাবে ক্রমাগত বেসরকারি হাতে চলে যাচ্ছে, তাতে আরও বিপন্ন হবে পরিবেশ।
বাজেটে ১১ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি জাতীয় সড়ক তৈরি করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিগত কয়েক বছরে দেশ জুড়ে প্রচুর পরিমাণে বড় রাস্তা ও নদীবাঁধ নির্মাণের মধ্য দিয়ে হিমালয় পার্বত্য এলাকা, পশ্চিমঘাট, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র তথা পরিবেশকে যেভাবে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছে, তা বহু বিপর্যয়ের ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে। উন্নয়নের নামে যথেচ্ছ রাস্তা বানানোর জন্য বিপুল অর্থ বরাদ্দ পরিকাঠামো-কোম্পানিগুলিকে বিপুল লাভ দেবে। কিন্তু সহজে লাভের জন্য তারা পরিবেশবান্ধব রাস্তার দিকে যে যাবে না, অতীতের বহু ঘটনা তার সাক্ষী।
কোভিড অতিমারি দেখিয়েছে, পরিবেশকে যথেচ্ছ ধ্বংস করলে, প্রকৃতিকে লুঠ করলে তার বিষময় প্রভাব গোটা মানবজাতিকে বিপন্ন করে। এই পরিস্থিতিতে প্রাকৃতিক পরিবেশের পুনরুদ্ধার ঘটানোই যখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তখন কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা হতাশাজনক। পুঁজিবাদী সরকারের থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না। দেশের জল-জঙ্গল-জমি-খনিজ থেকে শুরু করে সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদকে লুঠ করাই পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের ধর্ম। সরকার তারই রক্ষক। তাই পরিবেশ ধ্বংস হোক– মুনাফা যাতে অটুট থাকে, এটাই আজকের দিনের সব পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দেশের সরকারের ধর্ম।
পুঁজিবাদের কাছে ‘পরিবেশ’ একটা পণ্য। ফলে সর্বোচ্চ মুনাফার লক্ষ্যে পরিবেশকেও ব্যবহার করতে চায় তারা। বর্তমান বিজেপির মতো, ১৯৯১ সালে কংগ্রেস নেতা মনমোহন সিং অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন উদার অর্থনীতির প্রবক্তা হিসাবে বলেছিলেন, আগে মুনাফা, পরে পরিবেশ। বুর্জোয়া সরকারগুলির এই ভূমিকায় বিপর্যয়ের পর় বিপর্যয় ঘটেই চলেছে। রইনি গ্রামের গৌরা দেবীর মতো মহিলারা ১৯৭৩ সালে বন্দুকের সামনে রুখে দাঁড়িয়ে যে ইতিহাস গড়েছিলেন, সেই তেজই আজ ভরসা। সেই তেজে গড়ে ওঠা গণআন্দোলনগুলিই পরিবেশ রক্ষার গ্যারান্টি।
পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদ উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ও পরিবেশের ধ্বংস করে চলে অবিরাম। বিভিন্ন দেশে অধিকার রক্ষার নামেও সাম্রাজ্যবাদীরা পরিবেশ ধ্বংস করে। তখন তা রূপ নেয় আগ্রাসী যুদ্ধের। আজ জল-স্থল, বিভিন্ন দেশ, নদী-সমুদ্র, বন-জঙ্গল, খনি, আকাশ সবই মুনাফার গ্রাসে, ব্যবসায়িক আগ্রাসনের শিকার। শাসকরা ভুলিয়ে দিতে চায়, অস্বীকার করে, মানুষও প্রকৃতির অংশ ও সৃষ্টি। প্রকৃতি ধ্বংস হলে মানুষও ক্ষতি এড়িয়ে যেতে পারে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে মুনাফার চক্র থেকে মুক্ত করে প্রয়োগ, প্রকৃতিকে নিয়মানুযায়ী ব্যবহার করতে শেখায়, ধ্বংস করতে নয়। গণআন্দোলনগুলিকে সেই লক্ষ্যে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের পরিপূরক চেতনার ভিত্তিতেই পরিচালিত করতে হবে। পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষার আন্দোলন আজ পুঁজিবাদ-সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে শ্রেণি সংগ্রামেরও অংশ।