রাজ্যের সংকটাপন্ন শিক্ষাব্যবস্থার হাল ফেরাতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দ্রুততার সঙ্গে কার্যকর করার দাবিতে এআইডিএসও-র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি মণিশঙ্কর পট্টনায়ক এবং রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় ৯ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে লেখা একটি চিঠিতে বলেন, দীর্ঘ ধারাবাহিক ছাত্র আন্দোলনের ফলে এবং প্রবল জনমতের চাপে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল চালু করতে চাইলেও পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষা দপ্তর পাশ-ফেল চালুর প্রশ্নে রাজ্যের অবস্থান এখনও পরিষ্কার করেনি। পাশ-ফেল না থাকার জন্য শিক্ষাব্যবস্থার ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছে। এর ফলে একটা বিরাট অংশের ছাত্র-ছাত্রী কিছুই শিখছে না, ভয়ানক ভাবে ড্রপ আউট বাড়ছে, সরকারি স্কুল বন্ধ হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে বেসরকারি স্কুলের প্রসার। জনমতের রায় মেনে এই রাজ্যে প্রথম শ্রেণি থেকেই অবিলম্বে পাশ-ফেল চালুর ঘোষণার দাবি করেন তাঁরা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যে প্রায় ৮২০৭টি স্কুল এই রাজ্যে বন্ধ হতে চলেছে। শিক্ষামন্ত্রী কথিত স্কুল সংযুক্তির নীতি চালু হলে রাজ্যের আরও কয়েক হাজার স্কুল বন্ধ হবে। যখন জনসংখ্যা বাড়ছে, ছাত্রসংখ্যা বাড়ছে, তখন ছাত্রের অভাবে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার যুক্তি আসলে শিক্ষার পরিকাঠামোহীনতার, শিক্ষকের অভাবের ও সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থার করুণ চিত্রকেই তুলে ধরছে। এই নীতি বাতিল করে সমস্ত স্কুলছুট ছাত্রদের স্কুলে ফেরানোর জন্য সরকারি উদ্যোগের দাবি জানিয়েছে সংগঠন।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিক স্তর থেকে সেমিস্টার সিস্টেম আপাতত চালু না হওয়ার কথা বলা হলেও উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুলস্তরে সেমিস্টার সিস্টেম চালু থাকল। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে সেমিস্টার ব্যবস্থায় বহু ছাত্র-ছাত্রী কোনও কিছু না শিখেই বছরের পর বছর পাশ করে যাচ্ছে। কোনও বিষয়ের সামগ্রিক জ্ঞান গড়ে উঠছে না। শিক্ষাব্যবস্থার সব স্তরেই সেমিস্টার বন্ধ করা ও মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের বোর্ড পরীক্ষা চালু রাখার দাবি করেছেন তাঁরা। চিঠিতে স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সব স্তরে শূন্য শিক্ষক পদ পূরণের দাবি তোলা হয়েছে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে বেশ কিছু স্কুলে সরকার নির্ধারিত ফি-এর বদলে অনেক বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে স্কুলের কম্পোজিট গ্রান্ট বাড়ানো, পরিকাঠামো খাতে টাকা বাড়ানো, স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে সংগঠন।