‘মি–টু’ আন্দোলন সম্পর্কে ২৫ অক্টোবর বাঙ্গালোরে এক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হল এ আই এম এস এস–এর উদ্যোগে৷ ‘আমিও নির্যাতনের শিকার’– এই ঘোষণা নির্যাতিত, অসহায় নারীদের এক বলিষ্ঠ প্রতিবাদ৷ নানা কারণে যারা নির্যাতনের প্রতিবাদে মুখ খুলতে পারেননি, মি–টু আন্দোলন তাদের অবরুদ্ধ বেদনার মুখ খুলে দিয়েছে৷
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক কমরেড শোভা বলেন, দু’বছর আগে আমেরিকায় এক কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা ‘মি–টু’ আন্দোলন শুরু করেন৷ আজ তার ঢেউ এসে পড়েছে ভারতেও৷ রাজ্য সভানেত্রী বি আর অর্পণার কথায়, ‘এই আন্দোলন নারীদের অব্যক্ত যন্ত্রণা চেপে না রেখে প্রতিকারের দাবি তুলে ধরার প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে৷’ প্রবীণ আইনজীবী, নারী আন্দোলনের কর্মী হেমলতা মহীষী বলেন, যে মহিলারা এভাবে সোচ্চার হয়েছেন তাঁদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত৷ কর্ণাটকের ‘প্রজাবনী’ পত্রিকার এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রবীন্দ্র ভাটের কথায়, এই আন্দোলনে সমস্ত অংশের মহিলাদের অংশগ্রহণ দরকার, বিশেষ করে কল–কারখানার শ্রমজীবী মহিলাদের, যারা কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার শিকার৷ ডাঃ সুধা কামাথ বলেন, যৌন হেনস্থা ক্যানসারের মতো ছড়াচ্ছে৷ সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, পোশাক শিল্পে, এমনকী কৃষি ক্ষেত্রে নারীরা যৌন নির্যাতনের শিকার৷
এস ইউ সি আই (সি)–র রাজ্য সম্পাদক কমরেড কে উমা বলেন, কর্মক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ নারী হেনস্থার শিকার৷ ‘মি–টু’ আন্দোলন নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলের যে বলিষ্ঠ দাবি তুলে ধরেছে তাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে৷ এই আন্দোলনকে পুরুষবিদ্বেষী রূপে নয়, পরিচালিত হতে হবে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার বিরুদ্ধে৷ নারীর মুক্তি প্রয়োজন শুধু পুরুষের আধিপত্য থেকে নয় পুঁজিবাদী শোষণ থেকেও, যে শোষণ উচ্ছেদের সংগ্রামে নারী–পুরুষ সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে৷
(৭১ বর্ষ ১২ সংখ্যা ২ – ৮ নভেম্বর, ২০১৮)