এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১৮ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেন, মার্কিন অর্থনীতি ভয়াবহ আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত, দেশের অভ্যন্তরেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের যুদ্ধবাজ নীতির বিরুদ্ধে আমেরিকান জনগণের তীব্র ক্ষোভ ফেটে পড়ছে। এই অবস্থায় তাদের হাতের পুতুল চরম দুর্নীতিগ্রস্ত এবং জনবিচ্ছিন্ন আফগান সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ব্যর্থ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীরা গোপন বোঝাপড়ার মাধ্যমে এই সময়ের সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল ইসলামি মৌলবাদী শক্তি তালিবানের হাতে আফগানিস্তানের ক্ষমতা তুলে দিয়েছে। একসময় আফগানিস্তানের ক্রমবর্ধমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে ধ্বংস করার জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নিজেই যে তালিবানকে লালন পালন করেছে, আজ নিজেদের সাম্রাজ্যবাদী মতলব হাসিল করতে সেই শক্তিকেই কাজে লাগাচ্ছে। গভীর দুঃখ-ব্যথায় বিশ্বের মানুষ দেখছে, নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে মার্কিন শাসকরা আফগানিস্তানের স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণকে চূড়ান্ত মধ্যযুগীয় এক শক্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে যাদের একমাত্র অস্ত্র বর্বর বলপ্রয়ােগ করে জনগণকে সন্ত্রস্ত করে রাখা।
আমাদের গভীর আশঙ্কা, তালিবানের ক্ষমতা দখল শুধু যে এক নিষ্ঠুর মধ্যযুগীয় ইসলামিক শাসন কায়েম করে আফগান জনগণের সমস্ত গণতান্ত্রিক আশা আকাঙ্ক্ষাকে পিষে মারবে তাই নয়, এর মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বেই ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তিগুলি শক্তিশালী হবে। শক্তিশালী শ্রমিক আন্দোলন, সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী আন্দোলন ও সমাজতান্ত্রিক শিবিরের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে এরা সাম্রাজ্রবাদী-পুঁজিবাদী ফ্যাসিস্ট শাসকদের মদতে দেশে দেশে বৈজ্ঞানিক-গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের চর্চাকে বাধা দেবে যাতে বিপ্লবী আন্দোলনের সম্ভাবনাকে ধ্বংস করা যায়।
আমাদের আশা, আফগানিস্তানের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে সংগঠিত হয়ে উঠে দাঁড়াবে এবং এই প্রতিক্রিয়াশীল জমানাকে রুখে দিয়ে তারা সে দেশে বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে।
বিশ্বের সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, এই সংকটের সময়ে আফগান জনগণের পাশে দাঁড়ান।”