কর্ণাটকের মাইসোরে নানজাগুর শিল্পাঞ্চলে রেড অ্যান্ড টেলর নামের বহুজাতিক বস্ত্র কোম্পানিতে ৮০০-র বেশি শ্রমিক কাজ করেন। এই কারখানার শ্রমিকরা গত ছয় মাস ধরে তাদের বকেয়া গ্র্যাচুইটির দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে তা দিতে অস্বীকার করে। কারখানায় অন্যান্য বামপন্থী ট্রেড ইউনিয়ন যথেষ্ট শক্তিশালী হলেও তাদের ভূমিকা আপসমুখী। ফলে মোহভঙ্গ হয়ে শ্রমিকরা এআইইউটিইউসি-র নেতৃত্বে নতুন ইউনিয়ন গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। জানতে পেরে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ইউনিয়ন গঠনে নানা ভাবে বাধা দেয়। তা সত্ত্বেও ৯৫ শতাংশ শ্রমিক ভোট দিয়ে এআইইউটিইউসি অনুমোদিত শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করে।
পর দিন নির্বাচিত ৬ শ্রমিক নেতা জানতে পারেন কোনও কারণ ছাড়াই তাঁদের ছাঁটাই করা হয়েছে। শর্ত দেওয়া হয়, ইউনিয়ন থেকে পদত্যাগ করলে তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু শ্রমিকরা তা ঘৃণায় প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালাতে থাকেন। কর্তৃপক্ষ ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া বানচাল করার হুমকি দেয়, ইউনিয়নের অন্য নেতাদের আলাদা করে ডেকে নানা প্রলোভন দেখায়। কিন্তু সে সমস্তই ব্যর্থ হয় শ্রমিক ঐক্যের কাছে। এআইইউটিইউসি-র জেলা সম্পাদক কমরেড চন্দ্রশেখর মেটি ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ছাঁটাই নেতারা সহ ১০ জন শ্রমিক নেতাকে সাসপেন্ড ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এই অনৈতিক সাসপেনশন অর্ডার প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়। কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয় অবৈধ ও অনৈতিক নির্দেশ প্রত্যাহার করতে।
কর্তৃপক্ষ এর পরেও জাত-পাত ও অন্যান্য সেন্টিমেন্ট তুলে ইউনিয়নের মধ্যে বিভাজন আনার হীন চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু সব ব্যর্থ হয়। এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত দফায় দফায় শ্রম দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে আলোচনা চললেও কারখানা কর্তৃপক্ষ ছাঁটাই ৬ শ্রমিক নেতাকে এখনও পুনর্বহাল করেনি। কর্তৃপক্ষ চায় দালাল ইউনিয়ন থাকুক, তারা সরাসরি শ্রমিকদের এআইইউটিইউসি ছেড়ে অন্য ট্রেড ইউনিয়ন করার পরামর্শ দেয়। এতে এআইইউটিইউসি সম্পর্কে শ্রমিকদের মধ্যে আস্থা আরও বেড়ে যায়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এবং শ্রমিকদের কারখানা চত্বরে ঢুকতে বাধা দেয়। তারা কারখানা পুরোপুরি বন্ধের হুমকি দেয়। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ এবং তাদের দাবিতে অটল হয়ে এআইইউটিইউসি-র নেতৃত্বে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।