‘‘পুঁজিবাদী বৃহদায়তন উৎপাদনের যুগ, আর এই উৎপাদন ব্যবস্থায় শ্রমিক শ্রেণিই প্রধান ভূমিকা পালন করতে থাকে এবং উৎপাদনের প্রধান কাজগুলির দায়িত্ব তাদের হাতেই চলে আসে। এই উৎপাদন ব্যবস্থায় শ্রমিক ছাড়া একদিনও উৎপাদন চলতে পারে না (এখানে সাধারণ ধর্মঘটের কথা স্মরণ করা যায়) এবং এই ব্যবস্থায় উৎপাদনে পুঁজিপতিদের প্রয়োজনীয়তা দূরে থাক, তারা বরং উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এ থেকে কী বোঝা যায়? বোঝা যায়, হয় সমস্ত সমাজজীবন সামগ্রিকভাবে ভেঙে পড়বে, না হয় শ্রমিক শ্রেণি আজ হোক কাল হোক অনিবার্যভাবেই এই আধুনিক উৎপাদনের কর্তৃত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেবে এবং তারাই হবে এর একমাত্র মালিক– সমাজতান্ত্রিক মালিক।
আধুনিক শিল্প সংকট পুঁজিবাদী সম্পত্তির মৃত্যুঘণ্টা বাজাচ্ছে। এই সংকট আজ সরাসরি এই প্রশ্ন উত্থাপন করেছে– পুঁজিবাদ না সমাজতন্ত্র? আর এই সংকটই এই প্রশ্নের উত্তর কী হবে তা চূড়ান্তভাবে দেখিয়ে দিয়েছে এবং পুঁজিপতিদের পরগাছা চরিত্র উদঘাটিত করে সমাজতন্তে্রর বিজয়কে অনিবার্য করে তুলেছে।
‘সর্বহারা সমাজতন্ত্র অনিবার্য’– মার্ক্সের এই সিদ্ধান্তের এই হল আর একটা ইতিহাস প্রদত্ত প্রমাণ।
সর্বহারা সমাজতন্ত্র কোনও ভাবাবেগের উপর প্রতিষ্ঠিত নয়, এই সমাজতন্ত্র কোনও বিমূর্ত ‘ন্যায়’ বা সর্বহারা শ্রেণির প্রতি ভালবাসা থেকেও আসেনি। উপরে বর্ণিত বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর এই সর্বহারা সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত।”
(নৈরাজ্যবাদ না সমাজতন্ত্র, জে ভি স্ট্যালিন)