‘মেহনতি জনগণের প্যারি কমিউন সর্বকালের এক নতুন সমাজের গৌরবোজ্জ্বল অগ্রদূত হিসাবে উদযাপিত হবে। কমিউনের শহিদদের মেহনতি জনগণ তাদের মহান হৃদয়ে সযত্নে স্থান দিয়েছে। ইতিহাস ইতিমধ্যেই কমিউন ধ্বংসকারীদের শূলদণ্ডে বিদ্ধ করেছে। ধর্মযাজকদের হাজার প্রার্থনাও সেই শূলযন্ত্রণা উপশমে বিন্দুমাত্র সাহায্য করতে পারবে না।’ –কার্ল মার্কস
‘শুরুতেই কমিউন একটা কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। তা হল, শ্রমিক শ্রেণি ক্ষমতা দখল করে পুরনো রাষ্ট্রযন্ত্র দিয়ে কাজ চালাতে পারবে না। সবেমাত্র অর্জিত প্রাধান্য যদি না হারাতে হয়, তবে শ্রমিক শ্রেণিকে তার বিরুদ্ধে পূর্বে ব্যবহৃত সমস্ত দমন যন্ত্রকে ধ্বংস করতে হবে, অন্য দিকে তার নিজের ডেপুটিদের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। এ কথা ঘোষণা করতে হবে,– তাদের যে কোনও মুহূর্তে ফিরিয়ে আনা (রিকল) হতে পারে। এর অন্যথা হতে পারে না।’ –ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস
দুনিয়ার প্রথম শ্রমিক অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল ১৮৭১ সালের মার্চ মাসে। প্যারিসের শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শ্রমিক শ্রেণির সরকার ‘প্যারি কমিউন’। ফরাসি শাসক শ্রেণি সেদিন এই অভ্যুত্থান দমন করতে রক্তের স্রোত বইয়ে দিয়েছিল। সরকারি মতেই কমপক্ষে ৬ হাজার শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছিল। বেসরকারি মতে তা আরও কয়েক গুণ বেশি। ১৮ মার্চ থেকে ২৮ মে এই স্বল্পস্থায়ী ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে শ্রমিক শ্রেণি অর্জন করেছিল বিপুল অভিজ্ঞতার সম্ভার। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের দিশারি মহান কার্ল মার্কস এবং ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস এই আপাত ব্যর্থ অভ্যুত্থানের থেকে প্রাপ্ত শ্রমিক শ্রেণির প্রয়োজনীয় শিক্ষাকে তুলে ধরেছিলেন অসাধারণ প্রজ্ঞায়। সেই প্যারি কমিউনের ১৫০ বছর এই ২০২১ সালের ২৮ মে। সেই উপলক্ষে গণদাবীর আগামী সংখ্যা থেকে প্রকাশিত হবে প্যারি কমিউন সংক্রান্ত ধরাবাহিক একটি লেখা।