মহান নভেম্বর বিপ্লব প্রমাণ করেছে মজুর-চাষির সংঘবদ্ধ শক্তি পুঁজিবাদী রাষ্ট্রকে উচ্ছেদ করতে পারে

 

(মহান নভেম্বর বিপ্লববার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৭৪ সালের ৮ নভেম্বর কলকাতার শহিদ মিনারে মহান নেতা কমরেড শিবদাস ঘোষের ভাষণের একটি অংশ প্রকাশ করা হল)

… নভেম্বর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের বহু শিক্ষা রয়েছে। আমাদের বুঝতে হবে, আন্দোলনের মূল রাজনৈতিক লাইন সঠিক না হলে হাজার লড়ালড়ির মধ্যেও যেমন অতীতে হয়েছে, তেমনি ভবিষ্যতেও শোষিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনগুলি বারবার ব্যর্থ হবে। যাঁরা বলেন, বিপ্লবের শক্তি এ দেশে নেই, বিপ্লব করবার মনপ্রাণ বা তেজ এ দেশে নেই, এ দেশের যুবকরা প্রাণ দিতে জানে না, লড়তে জানে না, এ দেশের চাষি-মজুর লড়তে এবং লড়াইয়ে সর্বস্ব দিতে জানে না– তাঁরা ইতিহাসকে অস্বীকার করেন। এ কথা সত্য নয়। এ দেশের চাষি-মজুর, খেটেখাওয়া মানুষ, অগণিত মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেরা এবং যুবকরা বারবার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ‘অত্যাচারীর বিরুদ্ধে লড়তে হবে, বিপ্লব করতে হবে’–শুধু এই স্লোগানটা কেউ যদি তুলে দিতে পেরেছে সময়মতো এবং তাদের শক্তি থেকেছে খানিকটা এই সমস্ত কর্মকাণ্ড গড়ে তোলবার, তা হলে বারবার দেশে দেখেছি লড়াইয়ের বন্যা এসেছে। শুধু ‘বিপ্লব করতে হবে’–এই একটা কাল্পনিক ধারণাকে নিয়ে, শুধু এইটুকুকে সম্বল করে যুবকরা বারবার ময়দানে এসেছে, প্রাণ দিয়েছে, লড়েছে। কী বিপ্লব, কোথায় বিপ্লব, কী ভাবে হবে, কার নেতৃত্বে হবে, রাস্তা কী– এতসব কিছু নিয়ে তারা মাথাই ঘামায়নি।

এই রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুত্থান কথাটার মানে হচ্ছে, কমিটিগুলো গঠন করে সংগঠিতভাবে বিপ্লবী সংগ্রাম পরিচালনার মধ্য দিয়ে অজ্ঞ মজুর-চাষি লেখাপড়া না জানলেও অনেক কর্মক্ষমতা ও সংগঠন প্রতিভা–অর্থাৎ সংগঠন চালানো, নানা দিকে নজর দেওয়া প্রভৃতি বহু গুণের অধিকারী হয়ে স্তরে স্তরে গড়ে ওঠে। কাজেই বিপ্লবী সংগ্রামের মধ্য দিয়েই জনতার রাজনৈতিক শক্তির জন্ম হয় এবং সেই শক্তি পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে পারে। ফলে মজুর-চাষি রাষ্ট্রক্ষমতা চালাতে পারবে না–এই ধারণাটাও যে ভ্রান্ত, নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তা প্রমাণ হয়ে গেল।

কাজেই লড়তে চায় না আমাদের দেশের ছেলেরা, লড়তে চায় না চাষি-মজুররা– তারা রাশিয়ার শ্রমিকদের মতো, চিনের শ্রমিক-চাষির মতো, ভিয়েতনামের চাষিদের মতো লড়াকু নয়, মরণপণ করে তারা বিপ্লব করতে পারে না, কেউ যদি তাদের জন্য ফাঁকিতে বিপ্লব করে দেয় তা হলে তারা বিপ্লবটা চায়, না হলে তারা স্বভাবতই শান্তিপ্রিয়, তারা এত ঝঞ্ঝাট এবং লড়াই করতে চায় না– এসব কথাও ঠিক নয়। আসল গন্ডগোল হচ্ছে অন্য জায়গায়। আসল গন্ডগোলটা হচ্ছে, তারা পথ পায়নি, তাদের রাস্তা ঠিক হয়নি। আর রাস্তা যদি ঠিক না হয়– আন্দোলনের কলাকৌশল নির্ধারণের ক্ষেত্রে, আন্দোলনের লক্ষ্য স্থির করার ব্যাপারে, বিপ্লবের স্তর নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যদি ধারণা সঠিক না থাকে– অর্থাৎ আন্দোলনের মূল রাজনৈতিক লাইন এবং উদ্দেশ্য যদি ভ্রান্ত হয় তা হলে লড়াই করবার যত তেজ এবং কোরবানি করবার যত শক্তিই মানুষের থাকুক, সমস্ত আত্মত্যাগ এবং কোরবানি বিফলে যায়। শুধু কি এই আত্মত্যাগ এবং কোরবানি তখনকার মতই বিফলে যায়? না, এই বিফলতাকে কেন্দ্র করে নিরাশা এবং হতাশা জনমনকে ছেয়ে ফেলে। লড়াই এবং আন্দোলন করা সম্পর্কেই তাদের মনে প্রশ্ন দেখা দেয়। তারা ভাবতে থাকে, ‘এই তো লড়লাম। এত প্রাণ দিলাম, এত ক্ষয়ক্ষতি সহ্য করলাম। কিন্তু তাতে কী হল?’ বামপন্থী কর্মীদের তারা প্রশ্ন করতে শুরু করে, ‘আন্দোলনে তো আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম, কিন্তু কিছুই তো হল না। এ দেশে কিছু হবে না। ও আপনাদের সকলকেই দেখা গেছে, আপনারা সব দল সমান। কোনও পার্টিকে দিয়ে কিছু হবে না।’ এইরকম সব মনোভাবনা আন্দোলনের বিফলতাকে কেন্দ্র করে তাদের মনকে ছেয়ে ফেলতে থাকে।

এমনকি এর দ্বারা একটা সাধারণ কথা পর্যন্ত তারা গোলমাল করে ফেলে– যেটা বর্তমানে খুব প্রবল। এ বিষয়টা আমি একটু বলে নিতে চাই। তাদের কথায় আমি না হয় ধরেই নিলাম যে, আমাদের কারওর দ্বারাই কিছু হবে না। কিন্তু হবে না বলে কী করবেন? আমাদের সকলকে দেখে নেওয়া হয়েছে বলে কি এইভাবেই তাদের জীবনযাপন করা চলবে? না, চলতে পারবে? পেট মানবে? জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, চাকরির স্থিরতা নেই, জমি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, বেকার সমস্যা বাড়ছে, পরিবার ভাঙছে, সংসারে শান্তি নেই, স্নেহ-প্রীতি-মমতা সব উবে যাচ্ছে, চোখের সামনে ছেলেপিলেগুলো দিনের পর দিন অমানুষ হয়ে যাচ্ছে, নিজেরাও অমানুষ হয়ে যাচ্ছেন এবং তা যে যাচ্ছেন তাও তাঁরা নিজেরা টের পাচ্ছেন– তা হলে চলবে এভাবে? না, এ ভাবে বেশিদিন চলে না। তাই কী দেখা যায়? মাঝে মাঝে তাদের সুপ্ত মনুষ্যত্ব জেগে ওঠে। আর মনুষ্যত্বের খেয়াল যদি কেউ নাও করে পেটের খেয়াল, দেহের খেয়াল তাদের করতেই হয়। কারণ পেট বড় বালাই। বুদ্ধি না থাকলে, রুচি-সংস্কৃতির পর্দা উঁচু না থাকলে মনুষ্যত্বের খেয়াল হয়তো অনেকেই করেন না। কিন্তু পেটের খেয়াল সকলকেই করতে হয়। ফলে মার খেয়ে আবার তাঁদের উঠে দাঁড়াতে হয়। কিন্তু উঠে দাঁড়িয়ে তখন আবার তাঁরা পাগলের মতন, না হয় বাচ্চা ছেলের মতন হাত-পা ছোঁড়েন। কারণ আন্দোলনগুলোর সামনে প্রয়োজনীয় সংগঠন কোথায়? সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব কোথায়? এইভাবে পাঁচ বছর, সাত বছর, আট বছর, দশ বছর বাদে-বাদেই দেশে এক-একটা লড়াইয়ের ঢেউ আসছে। আর এই প্রত্যেকটি লড়াইয়ে পরাজয়ের পর তাদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে হতাশা। মনে হচ্ছে কিছুই হবে না। সেই মানুষগুলোই কিছুদিন বাদে অস্থির হয়ে আবার একটা কিছু করার জন্য চারিদিক থেকে শোরগোল শুরু করেন। তা হলে লড়াই দরকার এবং লড়াইয়ের ময়দানে তাঁদের আসতেও হবে। আজ না এলে দু’বছর বাদে আসতে হবে, দু’বছর বাদে না এলে পাঁচ বছর বাদে আসতে হবে। কিন্তু এসে আবার সেই বাচ্চা ছেলের মতো তাঁরা লাফাবেন, যে কোনও একটা রাস্তা ধরে ঝাঁপিয়ে পড়বেন এবং যে কোনও একটা স্লোগান আওড়াতে আওড়াতে তাঁরা মনে করবেন বিপ্লব করছেন এবং তার জন্য প্রাণ দেবেন। আবার মার খাবেন। আবার বিপথগামী হবেন। তাই প্রতিটি আন্দোলনের সামনে নভেম্বর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের এই মূল শিক্ষাটাকে আমাদের মনে রাখতে হবে। …

… আদর্শ এবং রাজনৈতিক লাইন ভুল হলে কোনও একসময়ে যদি কেউ প্রচুর শক্তির অধিকারীও হয় শেষপর্যন্ত সেই শক্তি তার থাকবে না। এই ‘আদর্শ’ কথাটা আবার অনেক ব্যাপ্ত। আন্দোলনের নীতি-নৈতিকতা, রুচি-সংস্কৃতি সমস্ত প্রশ্ন এই আদর্শ কথাটার মধ্যে জড়িয়ে আছে। আমাদের দেশের আন্দোলনের মধ্যে এই যে একটা ধারা চলেছে– আমরা লড়ব, স্লোগান দেব–কিন্তু আমাদের মুখে কোনও লাগামের দরকার নেই, রুচি-সংস্কৃতির দরকার নেই, শালীনতার সঙ্গে, ভদ্র আচার-আচরণের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্কের দরকার নেই–এটা মারাত্মক ক্ষতি করছে। আন্দোলনের মধ্যে যাঁরা এ ধরনের আচরণ করছেন তাঁরা মনে করছেন, আমাদের যেমন খুশি আমরা কথা বলব, বয়স্ক মানুষকে যেমন মনে করব গালাগালি করব, তাদের সঙ্গে যে কোনও ভাষায় কথা বলব, স্লোগান দিতে দিতে কোমর দুলিয়ে যা হয় অঙ্গভঙ্গি করব,–কিন্তু স্লোগানটা যখন বিপ্লবেরই দিচ্ছি তখন বিপ্লবটা হয়ে যাবে। তাদের মনে রাখা দরকার যে, তা হয় না, হতে পারে না। মানুষ খেতে পাচ্ছে না বলে স্লোগান দেখে হয়তো আন্দোলনে খানিকটা আসে, কিন্তু কোমর দোলা দেখে আতঙ্কিত হয়। আন্দোলনের কর্মীদের অশ্লীল কথাবার্তা শুনে আতঙ্কিত হয়। তাদের স্বার্থপরতা দেখে তারা কুঁকড়ে যায়। ফলে তাদের মধ্যে আন্দোলনের উদ্দেশ্য সম্পর্কেই অবিশ্বাস এবং সংশয় দেখা দেয়।

… আজ অবস্থা যতই খারাপ হোক, একটা কথা আপনাদের সবসময় মনে রাখতে হবে– যে কথাটা বুদ্ধিমান লোকদের, দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদীদের বা বিজ্ঞান সাধকদের কেবলমাত্র জানা ছিল এবং মানুষ যুক্তি দিয়ে বুঝলেও মন দিয়ে গ্রহণ করতে পারত না। তারা ভাবত, প্রতিক্রিয়াশীলদের, বুর্জোয়াদের এই যে জগদ্দল পাথরের মতো বিরাট রাষ্ট্রশক্তি– যার এত মিলিটারি, এত ক্ষমতা, এত টাকা-পয়সা–তার বিরুদ্ধে কি নিরন্ন, অজ্ঞ, নিরক্ষর জনসাধারণ কখনও সংঘবদ্ধ হয়ে এমন রাজনৈতিক শক্তির জন্ম দিতে পারে বা দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব, যার ফলে সেই শক্তি ভেঙে পড়বে এবং বিপ্লব সফল হবে? নভেম্বর বিপ্লব দুনিয়ায় প্রথম এই কথাটাকে আর তত্ত্বে না বুঝিয়ে বাস্তবে প্রমাণ করে দিয়ে গেল– হ্যাঁ সম্ভব।

… রাশিয়ার অজ্ঞ মজুর-চাষি বলশেভিক পার্টির নেতৃত্বে ক্ষমতা দখল করে একদল আমলাকেও তাদের অধীনে আনতে সক্ষম হল। কারণ তাদের বিপ্লবটা ভোটের মারফত ক্ষমতা দখল ছিল না, বা শুধু মিটিং-প্রসেশন করে কিছু লাঠালাঠি করা বা ঢিল-পাটকেল ছোঁড়াও ছিল না। তাদের বিপ্লব সংগঠিত হয়েছিল একটা বিরাট কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে জনতার রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুত্থান ঘটানোর মাধ্যমে। এই রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুত্থান কথাটার মানে হচ্ছে, কমিটিগুলো গঠন করে সংগঠিতভাবে বিপ্লবী সংগ্রাম পরিচালনার মধ্য দিয়ে অজ্ঞ মজুর-চাষি লেখাপড়া না জানলেও অনেক কর্মক্ষমতা ও সংগঠন প্রতিভা– অর্থাৎ সংগঠন চালানো, নানা দিকে নজর দেওয়া প্রভৃতি বহু গুণের অধিকারী হয়ে স্তরে স্তরে গড়ে ওঠে। কাজেই বিপ্লবী সংগ্রামের মধ্য দিয়েই জনতার রাজনৈতিক শক্তির জন্ম হয় এবং সেই শক্তি পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থার দায়িত্ব নিতে পারে। ফলে মজুর-চাষি রাষ্ট্রক্ষমতা চালাতে পারবে না– এই ধারণাটাও যে ভ্রান্ত, নভেম্বর বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তা প্রমাণ হয়ে গেল। হয়ে যাওয়ার পর এর দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে ইউরোপের, চিনের, ভিয়েতনামের মজুর-চাষিরা নিজেদের রাজত্ব কায়েম করার জন্য এগিয়ে চলল।

নভেম্বর বিপ্লবের এই শিক্ষাগুলো মনে রাখার সঙ্গে সঙ্গে যে কথাটা আপনাদের মনে রাখতে হবে, তা হচ্ছে, বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। বুর্জোয়ারা শক্তিশালী বলে, তাদের হাতে প্রবল রাষ্ট্রক্ষমতা রয়েছে বলে চিরকাল তারা জগদ্দল পাথরের মতনই আমাদের ঘাড়ের উপর বসে থাকবে– এমন ঘটলে বুর্জোয়াদের হয়ত ভাল হত এবং এ ভেবে তারা খুশিও হতে পারে, কিন্তু এরকম ঘটে না। তবে এই পরিবর্তন কতদিনে ঘটবে, এটা নির্ভর করছে আপনাদের ওপর।

যথার্থ বিপ্লবী আদর্শ এবং লাইন গ্রহণ করে, যথার্থ বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হয়ে স্তরে স্তরে গণআন্দোলনগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে পরিচালনার মারফত জনগণের রাজনৈতিক শক্তির অভ্যুত্থান, অর্থাৎ সোভিয়েটের মতন বিপ্লবী কাউন্সিল এবং গণকমিটিগুলো গড়ে তুলতে কতদিন আপনারা নেবেন তার ওপর নির্ভর করছে কত তাড়াতাড়ি বিপ্লব হবে। আপনারা মনে রাখবেন, এ কাজ ফাঁকি দিয়ে হবে না, মাঠে-ঘাটে শুধু চিৎকার করেও হবে না বা ভোটের বাক্সে কেরামতি-কারসাজি দেখিয়েও হবে না। বিপ্লব তখনই আপনারা করতে সক্ষম হবেন যখন সঠিক মূল বিপ্লবী রাজনৈতিক লাইন ও আদর্শের ভিত্তিতে এবং সঠিক বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে জনতার নিজস্ব রাজনৈতিক শক্তির জন্ম আপনারা দিতে পারবেন। ভোটেও যে আপনারা লড়েন এবং অর্থনৈতিক দাবিদাওয়া নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন যেগুলো আপনারা গড়ে তোলেন– সেগুলোকেও এই অর্থে লড়াই হিসাবে যদি আপনারা দেখেন এবং মূল বিপ্লবী আন্দোলনের পরিপূরক অর্থে সেগুলোকে গড়ে তুলতে পারেন– তবেই মনে রাখবেন, এগুলোর সার্থকতা আছে। তা ছাড়া এক ইঞ্চিও বেশি এর কার্যকারিতা নেই। আর, এইটা যদি আপনারা ধরতে সক্ষম হন তা হলে সাথে সাথে এটাও আপনাদের বুঝতে হবে, যে গণআন্দোলনগুলো আপনারা গড়ে তুলছেন এর আগে যাওয়া আছে, পিছু হঠা আছে, জয় আছে, পরাজয় আছে, মার খাওয়া আছে– কারণ এর আঁকাবাঁকা পথ আছে। কিন্তু মূল কথা হচ্ছে, এই গণআন্দোলনগুলোর আদর্শ, নীতি, মূল রাজনৈতিক লাইন, বিপ্লবের স্তর নির্ণয় আপনারা ঠিক করেছেন কি না– অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদীদের জায়গায় বুর্জোয়াশ্রেণি যে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন এবং এই বুর্জোয়াশ্রেণিকে রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করাই যে বিপ্লবের প্রধান কার্যক্রম– এটা আপনারা ধরতে সক্ষম হয়েছেন কি না।