কেন্দ্রীয় সরকার সম্প্রতি সমস্ত শ্রম আইনের পরিবর্তে চারটি শ্রম কোড চালু করতে চেয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির মতামত চাইলে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী ২১ জুন ট্রেড ইউনিয়নগুলির সভা ডেকে তাদের মতামত চান। ওই সভায় এআইইউটিইউসি সহ উপস্থিত ৯টি সংগঠনই এই কোডের তীব্র প্রতিবাদ করে। এ সভায় এ আই ইউ টি ইউ সি শ্রমমন্ত্রীকে একটি প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে বলা হয়, কেন্দ্রের বিজেপি পরিচালিত মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মালিক শ্রেণির স্বার্থে শ্রমিক-কৃষক-জনসাধারণের স্বার্থবিরোধী নীতি ও পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে। সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বহু সংস্থা বেসরকারিকরণ ও মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। কৃষক স্বার্থ বিরোধী তিনটি কালা কৃষি আইন ও বিদ্যুৎ বিল-২০২০ এনেছে।
এই সময়ই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ৪টি শ্রম কোড এনেছে। যার উদ্দেশ্য হল বিগত ৪৪টি শ্রম আইনের মাধ্যমে শ্রমিকরা যতটুকু অধিকার পেত, মালিক শ্রেণির স্বার্থে তাও কেড়ে নেওয়া। করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অগণতান্ত্রিকভাবে লোকসভা ও রাজ্যসভায় শ্রম কোডগুলি পাশ করানো হয়েছে। এই শ্রম কোডের বিষয়ে ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের মতামত সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। শ্রমিক স্বার্থবিরোধী ৪টি শ্রম কোড বাতিলের দাবিতে দু’বার সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘট সর্বাত্মকভাবে সফল হয়েছে। এই রাজ্য সহ সারা ভারতে কোটি কোটি শ্রমজীবী মানুষ এই ধর্মঘটকে সফল করতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামিল হয়েছিলেন। তবুও বেশিরভাগ শ্রমজীবী মানুষের প্রতিবাদকে উপেক্ষা করে কেন্দ্রীয় সরকার এই শ্রমকোড চালু করতে বদ্ধপরিকর।
শ্রমমন্ত্রীর উদ্দেশে বলা হয়, আমরা জানি, আপনার সরকার শ্রমিক স্বার্থবিরোধী এই ৪টি শ্রম কোডের বিরোধিতা করেছে। তাই আমরা আশা করব, পশ্চিমবঙ্গে এই ৪টি কালা শ্রম কোড কোনও অজুহাতেই যেন চালু না হয় এবং এখনই শ্রম কোড সংক্রান্ত কোনও রুলসও তৈরি না হয়। এখনও বহু রাজ্য সরকার শ্রম কোডের রুলস তৈরি করেনি। আমরা চাই শ্রম কোডের শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী ধারাগুলি পরিবর্তনের জন্য আপনার সরকার বিধানসভায় আইন তৈরি করবে। এই রাজ্যে শ্রমকোড চালু না করার সকল উদ্যোগকে আমরা সর্বতোভাবে সমর্থন ও সাহায্য করব।