স্বাধীনতা আন্দোলনে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার ভূমিকা চিরস্মরণীয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তমলুক এবং আপসহীন ধারার বিপ্লবী আন্দোলন ও ভারতছাড়ো আন্দোলনে ‘স্বাধীন তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার’ গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। জেলা প্রশাসনের কাছে দীর্ঘদিন ধরে তমলুক শহরবাসীর দাবি তমলুকের স্মৃতি বিজড়িত শহিদ ক্ষুদিরাম বসু, মাতঙ্গিনী হাজরা সহ বিপ্লবীদের মূর্তি প্রতিষ্ঠা ও তাঁদের আন্দোলনের ইতিহাস স্কুলপাঠ্য বইতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তমলুক হাসপাতাল মোড়ে ক্ষুদিরাম বসুর ছোট একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি রয়েছে। এখন গ্রিন সিটি প্রকল্পে শহরের সৌন্দর্যায়ন চলছে। হঠাৎ দেখা যায়, কিছু পুতুল ক্ষুদিরাম মূর্তির চারিদিকে কিছু পুতুল বসানো হয়েছে, যা তাঁর বলিষ্ঠতা ও আত্মত্যাগের প্রেরণার সাথে বেমানান। এই ঘটনায় এলাকার ছাত্র যুব মহিলা ব্যবসায়ী শিক্ষক অধ্যাপক সহ পথচলতি মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ডিএসও-ডিওয়াইও-এমএসএস এবং তমলুক পৌর নাগরিক সমিতি এর প্রতিবাদে এলাকায় প্রচার আন্দোলন গড়ে তোলে। পত্রপত্রিকা, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে। ২ সেপ্টেম্বর জেলাশাসক, মহকুমাশাসক, পৌরসভায় তারা মিছিল করে বিক্ষোভ দেখায় এবং স্মারকলিপি প্রদান করে। প্রশাসন তড়িঘড়ি পুতুলগুলো সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় এবং ক্ষুদিরামের একটি পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই জয় গণআন্দোলনের ফলেই সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করে সংগঠনগুলি। এছাড়া তমলুক মানিকতলায় মাতঙ্গিনী হাজরা ও নিমতলাতে সতীশ সামন্তের পূর্ণাবয়ব মূর্তি প্রতিষ্ঠা এবং হাসপাতাল মোড়কে ‘ক্ষুদিরাম বসু মোড়’, মানিকতলা মোড়কে ‘মাতঙ্গিনী হাজরা মোড়’ এবং নিমতলাকে ‘সতীশ সামন্ত মোড়’ নামকরণ করা ও এই স্থানগুলিতে আলোর ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনগুলি।