মধ্যপ্রাচ্যে আবার যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে চায় আমেরিকা

 

ইরানের অন্যতম সেনানায়ক কাসেম সুলেমানিকে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হানায় হত্যা করার তীব্র নিন্দা করে এস ইউ সি আই (সি) সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ৬ জানুয়ারি নিম্নলিখিত বিবৃতি দিয়েছেন,

‘‘ইরাকের মাটিতে ইরানি সেনানায়ককে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হত্যা করার ঘটনা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের দস্যুবৃত্তিকে আবারও উন্মোচিত করল৷ বাগদাদে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে ইরাকের জনগণের বিক্ষোভে উস্কানি দিয়েছেন এই ইরানি সেনানায়ক– এই অজুহাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুকুমেই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে৷ এইভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাই  বিচারক ও দণ্ডদাতা  দুইয়ের ভূমিকা নিয়ে নিলেন৷ স্মরণীয় যে, এভাবেই গণবিধ্বংসী অস্ত্র উৎপাদনের মিথ্যা অভিযোগ তুলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ইরাককে ধ্বংস করেছে, সেখানকার প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন এবং পরবর্তীকালে লিবিয়ার প্রেসিডেন্টকে হত্যা করেছে৷

ইরানি সেনানায়কের এই হত্যার পিছনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সুদূরপ্রসারী ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা রয়েছে–– ১) ওই অঞ্চলে আবার যুদ্ধ উত্তেজনা তৈরি করা, যেজন্য ইতিমধ্যেই সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েন শুরু হয়ে গিয়েছে এবং যুদ্ধ–উত্তেজনায় মদত দিয়ে মার্কিন সামরিক শিল্পকে  চাঙ্গা করা৷ ২) সিরিয়ায় পরাজয়ের পর মার্কিন মদতপুষ্ট যেসব সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিল তাদের আবার শক্তি জুগিয়ে মাথা তুলতে সাহায্য করা৷ ৩) মধ্যপ্রাচ্যের যে জনগণ আজ ভ্রাতৃঘাতী সংঘর্ষের আগুন থেকে বেরিয়ে নিজেদের জীবনের প্রকৃত জ্বলন্ত সমস্যা ও দাবিগুলি নিয়ে নিজ নিজ দেশের পুঁজিবাদী সরকারগুলির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দেলন গড়ে তুলতে চাইছে, তাদের দৃষ্টি আবার ঘুরিয়ে দেওয়া৷

সর্বোপরি, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আমেরিকায় যে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা থেকে জনগণের দৃষ্টি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ–উত্তেজনার প্রতি ঘুরিয়ে দিয়ে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়ার কুখ্যাতি থেকে নির্বাচনী বছরে নিজেকে রক্ষা করাও তাঁর লক্ষ্য৷ আমাদের দল এবং ভারতের সকল শান্তিকামী জনগণের পক্ষ থেকে আমরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের এই দস্যুবৃত্তিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করছি এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিশ্বের সকল সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে প্রতিবাদে সোচ্চার হতে আহ্বান জানাচ্ছি৷

(গণদাবী : ৭২ বর্ষ ২২ সংখ্যা)