অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ২০১৮–’১৯ সালের কেন্দ্রীয় বাজেট সংসদে পেশ করেছেন গত ১ ফেব্রুয়ারি৷ নানা মহলে এই বাজেটের নানা সমালোচনা হলেও একটা বিষয়ে প্রায় সবাই একমত– তা হল এই বাজেট কৃষিমুখী–কৃষকমুখী৷ কোনও কোনও সংবাদপত্র এমন কথাও লিখেছে– ‘ভোটের দায়ে জয় কিষাণ’৷ লিখেছে, ‘কোনও ঝুঁকি না নিয়ে … একেবারে কাঁধে লাঙল তুলে চাষির পাশে দাঁড়িয়ে পড়লেন নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি’৷ ভাবখানা এমন যে এই বাজেটের পর গ্রাম ভারতের কৃষকদের অবস্থার উন্নতি হবে৷ তাঁদের মুখে হাসি ফুটবে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কথিত ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার দিকে এবার দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাবে সরকার৷ কিন্তু বাজেটে কি সত্যিই তেমন কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যার ফলে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটবে?
বাজেটে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা বিশ্লেষণ করার আগে বিচার করে দেখা যাক কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কৃষকদের সমস্যার খানিকটা সুরাহা হতে পারে৷ কৃষকদের চাষের জন্য প্রথমেই দরকার বীজ৷ এই বীজের দাম গত তিন–চার বছরে ৩–৪ গুণ বেড়েছে৷ কোনও কোনও বীজের দাম দশ গুণও হয়েছে৷ বীজের দাম কমানো দরকার, কৃষকদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা দরকার৷ তারপর চাষের জন্য দরকার জল৷ এখনও দেশের অধিকাংশ জমি অসেচ এলাকাভুক্ত৷ সরকারি উদ্যোগে যতটুকু সেচ ব্যবস্থা ছিল তাও দীর্ঘ অবহেলায় দিনের পর দিন কমে যাচ্ছে৷ চাষিরা এখন নিজের উদ্যোগে পাম্প চালিয়ে সেচের ব্যবস্থা করে নিচ্ছেন৷ এই পাম্পগুলোও হয় বিদ্যুৎ চালিত, না হয় ডিজেল চালিত৷ তাই জলের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারি উদ্যোগে সেচের এলাকা বাড়ানো দরকার, চাষের জন্য বিদ্যুৎ ও ডিজেল গরিব, মধ্য ও প্রান্তিক চাষিদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা দরকার৷ এখন রাসায়নিক সার ছাড়া কৃষিকাজ অসম্ভব৷ এই সারের দামও বাড়ছে ভয়ঙ্কর গতিতে৷ তাই সারের দাম কমানো দরকার, কৃষক যাতে অল্প দামে সার পান তার ব্যবস্থা করা দরকার৷ কীটনাশকের কথা তো বাদই দিলাম৷ এর উপর সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই৷ কোম্পানিগুলো ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে, ইচ্ছামতো মুনাফা করে৷ আবার এক্ষেত্রে জাল কীটনাশকে বাজার ছেয়ে গেছে৷ কৃষকরা তাই চান কীটনাশকের উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ চালু হোক, বাজার থেকে জাল কীটনাশক দূর হোক, কীটনাশক সস্তা হোক৷ সবাই বোঝেন, চাষ করতে পুঁজি দরকার৷ সার–বীজ–তেলের দাম যত বাড়বে পুঁজির প্রয়োজন তত বেশি হবে৷ কিন্তু কৃষকের ঘরে পুঁজি কোথায় সরকারি ব্যাঙ্কগুলো মধ্য–নিম্ন–প্রান্তিক কৃষক বা বর্গাদারদের ঋণ দিতে চায় না৷ তারা ঋণ দেয় শিল্পপতিদের, ধনী কৃষকদের৷ তাই চাষিরা পুঁজির জন্য ছুটে যান গ্রামীণ মহাজন ও সুদখোরদের কাছে, মাসিক শতকরা ৬ থেকে ১০ টাকা সুদে টাকা ধার করেন৷ লাভের গুড় নেয় এইসব সুদখোর মহাজনেরা৷ চাষিরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চান৷ চাষিরা চান বীজের দাম কমুক, সারের দাম কমুক, কীটনাশকের দাম কমুক, সরকারি উদ্যোগে সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ হোক, চাষের জন্য বিনামূল্যে বিদ্যুৎ বা ডিজেল দেওয়া হোক, বিনা সুদে বা স্বল্প সুদে তাঁদের টাকা দেওয়া হোক যাতে তাঁরা সহজেই কৃষিকাজ করতে পারেন৷ এর ফলে চাষের খরচ কমবে এবং তাঁদের জীবনে খানিকটা স্বস্তি আসবে৷
কিন্তু এই বাজেটে কি এই মর্মে কোনও পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করা হয়েছে? এই বাজেটে কি ওই সব সমস্যা সমাধানের দিশা দেখানো হয়েছে? এই বাজেটের পর কি সার–বীজ–তেল–জল– পুঁজি অল্প খরচে পাওয়া যাবে? না–তা হবে না৷ এই মর্মে বাজেটে কোনও ঘোষণাই হয়নি বা পরিকল্পনার কথাও পেশ করা হয়নি৷ তা হলে এই বাজেটের পর কী ঘটবে? বাজেটের পরেও সারের দাম, বীজের দাম বাড়তে থাকবে, ঋণ আর সুদের বোঝা বাড়তে থাকবে আর বাড়তে থাকবে আত্মঘাতী কৃষকের সংখ্যা৷ এই সত্য বোঝার জন্য বাজেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন হয় না৷
এ দেশের সাধারণ কৃষকদের নিত্যদিনের অভিজ্ঞতা কী? তা হল, এত কষ্ট করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে ফসল তাঁরা ফলান তার বাজারদর প্রায় নেই বললেই চলে৷ পশ্চিমবঙ্গের পাটচাষি ও আলুচাষিদের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা সবার জানা৷ বাজার দর নেই বলে আলুচাষিরা এ বছর কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু বের করছেন না৷ নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহারের পাট চাষিদের গত বছরের পাটই বিক্রি হয়নি৷ জেসিআই এখন পাট কেনে না বললেই চলে৷ যতটুকু কেনে তারও অধিকাংশ কেনে ফড়ে দালালদের কাছ থেকে৷ গোটা ভারতবর্ষের অবস্থাও একই রকম৷ মহারাষ্ট্রের তুলো চাষির তুলো বিক্রি হয় না, দুধ–চাষিদের দুধ রাস্তায় ফেলে দিতে হয়, অন্ধ্রপ্রদেশের বাদাম চাষিরা বা উত্তরপ্রদেশের পিঁয়াজ চাষিরা দাম না পেয়ে ফসল পচিয়ে জৈব সার তৈরি করেন৷ গত বছরই ফসলের দাম চেয়ে বিক্ষোভ জানাতে গিয়ে মধ্যপ্রদেশের ৬ জন চাষি বিজেপি সরকারের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন৷ স্বাভাবিক কারণেই সারা দেশব্যাপী ফসলের লাভজনক দামের দাবিতে কৃষক আন্দোলন গড়ে উঠছে৷
এই আন্দোলনের চাপে সরকারের অর্থমন্ত্রী জেটলি সাহেব তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, ‘আগামী খরিফ মরসুম থেকে ফসলের খরচের দেড়গুণ এম এস পি (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) ঠিক হবে৷ এই এম এস পি থেকে বাজারদর পড়ে গেলে সেই ফারাকটুকু ভর্তুকি দেওয়া হবে৷ আপাতমধুর এই প্রতিশ্রুতির আড়ালে কেন্দ্রীয় সরকার যে কত বড় সর্বনাশা পরিকল্পনা করছে এ বার সে বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া যাক৷
কেন্দ্রীয় সরকার যদি প্রতিশ্রুতি মতো সরাসরি চাষির থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষিজদ্রব্য কেনে তা হলে এমএসপি এবং বাজারদরের ফারাকটুকু ভর্তুকি দেওয়ার প্রশ্ন উঠবে কেন? চাষি ফসল সরকারকে দেবে, সরকার ন্যূনতম সহায়ক মূল্য অনুযায়ী দাম চাষিকে দেবে৷ এখানে তো ‘বাজার দর’ বা ‘ভর্তুকি’ ইত্যাদির প্রশ্ন ওঠার কথা নয়৷ বাজারদরের প্রশ্ন তখনই উঠতে পারে যখন চাষি ফসল নিয়ে জেটলি সাহেবের ঘোষণা অনুযায়ী বাজারে যাবে এবং কোনও ব্যবসায়ীকে তা বিক্রি করবে৷ তা হলে বিষয়টা এইরকম : ১) সরকার চাষির ফসল কিনবে না, ২) চাষির ফসল কিনবে ব্যবসায়ীরা বা বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা৷ এই কেনার ক্ষেত্রে যদি দাম এমএসপি–র তুলনায় কম হয় তবে দামের সেই পার্থক্য সরকার চাষিকে দিয়ে দেবে৷
প্রশ্ন হল, সরকার যদি চাষির কাছ থেকে খাদ্য সামগ্রী ক্রয় না করে তা হলে সমস্ত খাদ্যপণ্য তো বহুজাতিক কর্পোরেশন ও ব্যবসায়ীদের হাতে চলে যাবে৷ খাদ্যসামগ্রীর উপর ওদের এই সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেশের মধ্যে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে না কি? এর ফল কী হবে? চাষির কাছ থেকে ওরা ইচ্ছামতো দামে কিনবে এবং জনগণকে ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করে বিপুল মুনাফা ঘরে তুলবে৷ চাষিকে সাহায্য করার নামে এইভাবে বিজেপি সরকার সমস্ত কৃষিপণ্য বহুজাতিক কর্পোরেশন ও তার এজেন্টদের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে৷
সরকার কৃষকের ফসল সরাসরি না কিনলে সরকারি সংগ্রহের যে ব্যবস্থা (জেসিআই, সিসিআই ইত্যাদি) এতদিন ধরে গড়ে উঠেছে তার অবলুপ্তি ঘটবে এবং চাষিরা বহুজাতিক কর্পোরেশনের করুণার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে৷ ওরা দলবদ্ধভাবে ফসল ওঠার মরসুমে বাজারদর কমিয়ে দেবে (এখন যেমন মহাজনেরা দেয়) এবং কম দামে চাষিকে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য করবে৷ এখনও তা হয়৷ কিন্তু সরকারের এই নীতির ফলে এই প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে৷ কারণ এখন যে সব কৃষিজ পণ্য সরকার বাজার থেকে সরাসরি কেনে তার বাজারের উপর সামান্য হলেও একটা প্রভাব থাকে৷ তখন কোনও প্রভাবই থাকবে না৷ ব্যবসায়ীদের জন্য থাকবে একেবারে খোলা মাঠ৷ ইচ্ছামতো দাম কমাও, ইচ্ছামতো দামে কেনো, ইচ্ছামতো মুনাফা ঘরে ঢোকাও৷
আসলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অর্থমন্ত্রী দেশের কৃষকদের উদ্দেশে যে সুখবর পরিবেশন করেছেন তা গত বছর থেকেই ওরা মধ্যপ্রদেশে চালু করেছে৷ প্রকল্পের নাম দিয়েছে ‘ভাবান্তর ভুক্তান যোজনা’৷ মধ্যপ্রদেশের কৃষিমন্ত্রী স্বীকার করেছেন– এই প্রকল্পে চাষিদের লাভ হয়নি, লাভ হয়েছে বড় বড় ব্যবসায়ীদের, যারা বিভিন্ন কৃষক মান্ডিগুলো নিয়ন্ত্রণ করে৷ এই ব্যবস্থাই ওরা এখন কৃষক কল্যাণের নামে সারা দেশ জুড়ে চালু করতে চাইছে৷
বাস্তব হল, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষকের ফসল কেনার কোনও ইচ্ছাই সরকারের নেই৷ বিগত বছরগুলোও ন্যূনতম সহায়কমূল্যে কৃষকের কাছ থেকে সরকার ফসল কিনেছে যৎসামান্য৷ হিসাব বলছে গত বছর ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের চেয়ে কম দামে ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ায় দেশব্যাপী কৃষকের ক্ষতি হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা৷ আর এ বছরের বাজেটে ওদের তথাকথিত ‘ভর্তুকি’ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ হয়েছে কত টাকা? মাত্র দুশো কোটি টাকা৷ এই সামান্য টাকায় গোটা দেশে এম এস পি–র চেয়ে কম দামে ফসল বিক্রি করা কৃষকদের ভর্তুকি দেওয়া যাবে? এই টাকায় তো দু–চারটে জেলার চাষিদেরও ভর্তুকি দেওয়া যাবে না৷
আর উৎপাদন মূল্যই বা ঠিক হবে কীভাবে? সরকার পাইকারি বাজারদর অনুযায়ী উৎপাদনের খরচ ঠিক করে৷ কিন্তু কৃষক তো বাজার থেকে পাইকারি দামে কৃষি উপকরণ কেনে না৷ সে কেনে খুচরো দামে– যা পাইকারি দামের চেয়ে অনেক বেশি৷ ফলে পাইকারি দামকে ভিত্তি ধরে হিসাব করার ফলে ধার্য করা দেড়গুণ এমএসপি বাস্তবে চাষির উৎপাদন খরচের সমান বা কম হবে৷ ফলে খরচের তুলনায় ৫০ শতাংশ লাভ দেওয়ার যে কথা স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশে রয়েছে তাকে এইভাবে বুড়ো আঙুল দেখানো হবে৷ তাহলে ঘোষণা করাও হল, কিন্তু পরিসংখ্যানের মারপ্যাঁচে এইভাবে প্রতারণা করাও হল৷ এই হল কেন্দ্রের বর্তমান বিজেপি সরকারের ভূমিকা৷
অর্থমন্ত্রী তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, গত রবি মরসুম থেকেই নাকি তাঁরা উৎপাদন খরচের তুলনায় দেড়গুণ এমএসপি ধার্য করেছেন৷ কিন্তু এই এমএসপি অনুযায়ী কোথায় কৃষকের ফসল কেনা হয়েছে? অর্থমন্ত্রী যতই দাবি করুন, সত্য হল এটাই যে অর্থমন্ত্রীর কথা মতো দেশের কোথাও উৎপাদন খরচের তুলনায় দেড়গুণ দামে কৃষকের ফসল কেনা হয়নি৷ একজন কৃষকও তার দ্বারা লাভবান হননি৷ ফলে এ বছরের ঘোষিত এমএসপি–র কী দুরবস্থা হবে তা সহজেই অনুমান করা যায়৷
আমরা বহু আগে থেকেই বলেছি, কৃষক ও জনসাধারণের কল্যাণের জন্য সরকার একটাই যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে৷ তা হল খাদ্যদ্রব্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর উপর সামগ্রিক রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালু করা৷ সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি লাভজনক দাম দিয়ে কৃষিপণ্য কিনবে এবং ভর্তুকি দিয়ে তা জনসাধারণের মধ্যে বিক্রি করবে৷ অর্থাৎ কৃষিজ পণ্য, বিশেষ করে খাদ্যদ্রব্য লাভজনক দামে কেনার দায়িত্ব গ্রহণ করুক সরকার, এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সে ঢুকতে দেবে না৷ কেন্দ্রীয় সরকার কি এই যুক্তিসঙ্গত পথ গ্রহণ করছে? না, কেন্দ্রীয় সরকার হাঁটছে ঠিক উল্টো পথে, আগের কংগ্রেস সরকারের পথই অনুসরণ করে৷ সে নিজের দায়িত্ব সম্পূর্ণ ঝেড়ে ফেলে দিয়ে অসহায় গরিব কৃষকদের ফেলে দিচ্ছে বহুজাতিক হাঙরদের গ্রাসে৷
আর একটা কথাও এখানে বলা দরকার৷ গ্রাম ভারতের পরিবারগুলোর অর্ধেকেরও বেশি এখন খেতমজুর–গ্রামীণ মজুর৷ তাদের জন্য এই বাজেটপ্রস্তাবে কী ব্যবস্থা রেখেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার? একশো দিনের কাজের কথা বলা হয়েছে–কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হল গত বছর বাজেট বরাদ্দের টাকা পুরোটা খরচ করতে পারেনি৷ এর গুরুত্ব যে ওরা ধীরে ধীরে কমিয়ে দিতে চাইছে সে ওদের আচরণেই স্পষ্ট৷ গ্রামীণ কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ওদের এই নেতিবাচক মনোভাব যে গ্রাম ভারতের অসহায় গরিব মানুষকে আরও সমস্যার মধ্যে ফেলে দেবে এতে কি কোনও সন্দেহ আছে?
কৃষকদের ক্ষতি হয় হোক, কিন্তু এই বাজেট প্রস্তাবে লাভ হবে এম পি–দের৷ দেশের পার্লামেন্টের এম পি–দের মধ্যে ৪২৯ জন কোটিপতি৷ এই কোটিপতি এম পি–দের সাম্মানিক কিন্তু দ্বিগুণ করা হয়েছে৷ তাঁদের অন্যান্য সুযোগ সুবিধাও বাড়ছে৷ ফলে এই বাজেট কাদের জন্য, কী উদ্দেশ্যে তা বুঝতে কি খুব অসুবিধা হয়?
আমাদের দাবি, সরকার প্রান্তিক, গরিব ও মধ্য কৃষকদের সমস্ত কৃষিপণ্য লাভজনক দামে কিনে নিক এবং ভর্তুকি দিয়ে ব্যাপক গরিব জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিক৷ এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তাই লক্ষ লক্ষ কৃষকের সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তোলা একান্তই জরুরি৷ এই কাজটাই করে যাচ্ছে অল ইন্ডিয়া কিষাণ খেতমজদুর সংগঠন (এ আই কে কে এম এস)৷