ভোটে জিতলে জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিন বিরোধী দলগুলির কাছে চিঠি শিক্ষাবিদদের
২৯ ফেব্রুয়ারি দেশের প্রায় সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলের কাছে চিঠি দিল অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশন কমিটি। চিঠিতে বলা হয়েছে, জনবিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি প্রতিরোধ করতে আপনারা সর্বশক্তি নিয়োগ করুন এবং আপনাদের নির্বাচনী ইস্তেহারে ঘোষণা করুন– যদি ক্ষমতায় আসেন তা হলে আপনাদের দল এই শিক্ষানীতি প্রত্যাহার করতে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করবে। কংগ্রেস, বিএসপি, সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি, আম আদমি পার্টি, সিপিআই, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন, বিজু জনতা দল, ডিএমকে, টিডিপি, এসইউসিআই(কমিউনিস্ট), ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, শিরোমণি অকালি দল, জেডিইউ, আরজেডি, এসপি, ভারতীয় ট্রাইবাল পার্টি, ভয়েস অফ পিপলস পার্টি-মেঘালয় প্রমুখ দলকে তাদের অফিসে বা ই-মেইল করে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি কমিটির পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে ও সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে বিজেপি সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ কেবল চূড়ান্ত জনবিরোধী এবং গরিব মানুষের শিক্ষার স্বার্থবিরোধীই নয়, এই শিক্ষানীতি দেশের ঐক্য ও সংহতিকে বিপর্যস্ত করবে, সম্পদশালী ও সম্পদহীন মানুষের মধ্যে বিভাজনকে আরও বৃদ্ধি করবে এবং দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এই শিক্ষানীতির মাধ্যমে বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ এবং কর্পোরেট সংস্থার হাতে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকেই তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা পাকা করা হয়েছে। সংবিধানের যুগ্ম তালিকায় শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত হলেও এ বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলির সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারকেও চূড়ান্তভাবে লঙ্ঘন করা হয়েছে।
কমিটির দাবি, সমস্ত রকম সরকারি প্রভাব ও হস্তক্ষেপ মুক্ত একটি নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। তাতে দেশের স্বনামধন্য শিক্ষাবিদদের সদস্য করতে হবে, যাতে সব রকম পক্ষপাতিত্ব ও বিদ্বেষমুক্ত হয়ে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত সংগ্রহ করে জনস্বার্থমুখী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা যায়। মুখ্যমন্ত্রীদের দেওয়া চিঠিতে কমিটি দাবি করেছে, জাতীয় শিক্ষানীতি যেন তাঁরা রাজ্যে চালু না করেন এবং তাঁরা যেন নিজেদের রাজ্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে আলাদা কমিশন গঠন করে বিকল্প জনস্বার্থবাহী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন।
কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে প্রেরিত স্মারকলিপিতে দেশের প্রথম সারির পাঁচ শতাধিক শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবী স্বাক্ষর করেছেন। যাঁদের মধ্যে অন্যতম ইরফান হাবিব, প্রকাশ এন শাহ, ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়, রাম পুনিয়ানি, চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী, তরুণ নস্কর প্রমুখ।