রাজ্যের তৃণমূল সরকার প্রতিটি জেলাতে সরকারি মদের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পরবর্তীতে পানশালাও খোলা হবে৷ একই সঙ্গে প্রায় এক হাজার নতুন মদের লাইসেন্স দেবে৷ সংবাদমাধ্যম সূত্রে এমনটাই খবর৷ যেখানে গোটা দেশ জুড়ে মদ নিষিদ্ধ করার দাবি উঠছে সেখানে রাজ্য সরকারের এ হেন পদক্ষেপ সত্যিই বিস্ময়কর৷ বিহার মদ নিষিদ্ধ করেছে৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ পারছে না৷ বরং রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে এই কুযুক্তিতে ঢালাও মদের প্রসারে উদ্যোগী হয়েছে৷ এই প্রবণতা সিপিএম আমলেও ছিল৷ তখন বিরোধীরা এর বিরোধিতা করেছিল৷
জনগণকে মদ খাইয়ে মাতাল না বানিয়ে কি উন্নয়নমূলক কাজ করা যায় না? মদের ক্ষতিকারক দিকটা কমবেশি সবারই জানা৷ মদ যে ব্যক্তি খায় সে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ কিন্তু মদের সামাজিক প্রভাব আরও বেশি ক্ষতিকর৷ হাতের নাগালের মধ্যে মদ পাওয়া গেলে যুবসমাজ সহজেই তাতে আকৃষ্ট হবে৷ নেশায় অভ্যস্ত হবে৷ আজ অবধি যত ধর্ষণ হয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধর্ষক মদ্যপ অবস্থায় ছিল৷ অনেক বাড়িতেই মদের কারণেই অশান্তি নিত্যদিন৷ বাড়ির একমাত্র রোজগার করা ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে দিনের শেষে উপার্জনের সব টাকা দিয়ে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরছে৷ এদিকে বাড়িতে চাল–ডাল নেই৷ প্রবল অশান্তি৷ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে যাওয়ার কারণ হিসেবে মদ উঠে এসেছে৷ বাড়ির ছেলে যখন মদে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে বহু বাবা–মায়ের রাতের ঘুম উড়ে যাচ্ছে৷
প্রতিবাদ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমাজ ধ্বংসাত্মক মদের প্রসার নীতির বিরুদ্ধে৷ তবে সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরই সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা দরকার৷ বর্তমান সরকারের সমর্থক হওয়ার কারণে হয়তো অনেকে প্রতিবাদে আসবে না৷ কিন্তু এতে যে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, ইভ–টিজিং সহ নানা সমস্যায় সমাজ অবক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যাবে তা সমাজের সর্বস্তরকেই দূষিত করবে৷ ভুগতে হবে সবাইকে৷
আব্দুল জলিল সরকার
বক্সিগঞ্জ, হলদিবাড়ি, কোচবিহার
(৭১ বর্ষ ১২ সংখ্যা ২ – ৮ নভেম্বর, ২০১৮)