শুধুই কি অভয়ার বিচার না পাওয়ার কান্না? এই মিছিলে এসে মিশেছে প্রতিটি ছাত্রের কৃষকের শ্রমিকের মহিলার নিত্যদিনের কান্নার বিপরীতে করুণাভিক্ষা নয়, দাবি আদায়ের বলিষ্ঠ আওয়াজ। ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন সরকারি শিক্ষা বাঁচানোর দাবিতে আগামী প্রজন্মকে নবজাগরণের মনীষীদের স্বপ্নের পরিপূরক, আগামী সমাজের যোগ্য পরিচালক করার শিক্ষা আদায়ের অধিকারে।
শ্রমজীবী থেকে বুদ্ধিজীবী– কে নেই এই মিছিলে? প্রতিটি মানুষের দাবি নিয়ে মিছিল এগিয়ে চলেছে। মনে হচ্ছে যেন এ মিছিল পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি মানুষের আকুতি নিয়ে প্রতিটি মানুষের পাওয়া, না পাওয়া, চাওয়া সবকিছু নিয়ে শাসকের সাথে একটা চরম বোঝাপড়া করে নিতে চলেছে।
দেখে মনে হচ্ছে, এ পথ হাঁটায় তাদের যেন কোনও ক্লান্তি নেই, বরং সুখ, বরং আনন্দ। আনন্দের এই প্রতিবাদ উৎসবে প্রিয়জন আসতে পারেনি বলে অনেকে ভিডিও কলে দেখাচ্ছেন মিছিল। কোথায় কল করছেন? জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসে– ওর শরীরটা খারাপ বলে আজ আসতে পারল না, ওকে দেখাচ্ছি। একজন বয়স্ক মহিলা ছবি তুলে দিতে বললেন। তাঁর কথায়– আমি ভাইকে গিয়ে দেখাব কত বড় মিছিল! সম্মিলিত এই জনপ্লাবন যেন কানে কানে জাগরণের বার্তা দিয়ে যায়।
এই জনপ্লাবনের সংবাদ সাংবাদিকরা দিতে চাইলেও মালিকপক্ষ ও সরকারি বাধা-নিষেধের বেড়া টপকে এ খবর তাঁরা প্রকাশ করতে পারবেন না, কিন্তু প্রাণে প্রাণে জাগরণ সৃষ্টিকারী এই মিছিলের বার্তা নিয়ে যে মানুষগুলো ফিরে গেছে আবার তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এলাকায় কর্মক্ষেত্রে তারা একে আরও দ্বিগুণভাবে সঞ্চারিত করবে।
তনুশ্রী বেজ, পশ্চিম মেদিনীপুর