এস ইউ সি আই (কমিউনিস্ট)-এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ১০ মে এক বিবৃতিতে বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দমন করার জন্য ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ সরকার যে আইন এনেছিল, সেই রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত আইনকে (পেনাল কোডের ১২৪এ ধারা) যেভাবে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে সমর্থন জানিয়েছে তাকে আমরা তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের দীর্ঘ সময় ধরে দেশের মানুষ বারবার এই ভয়ঙ্কর আইন বাতিলের দাবি জানালেও কংগ্রেস, বিজেপি কিংবা অন্য কোনও শাসক কেউই তা করেনি। এই আইনে সরকারকে এমন নিরঙ্কুশ স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা দেওয়া আছে যে, তারা যে কোনও বিরোধীকেই শত্রু গণ্য করে তাকে শাস্তি এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত দিতে পারে। রাজ্য এবং কেন্দ্র উভয় স্তরেই সরকারগুলি এই আইনের অপব্যবহার করে চলেছে একটানা। অবশেষে এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে একগুচ্ছ পিটিশন দায়ের হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ আবেদনকারী ও কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিতভাবে মতামত জানাতে বললে কেন্দ্রীয় সরকার লিখিত বক্তব্যে জানায় কোনও আইনের অপব্যবহার তার পুনর্বিবেচনার কারণ হতে পারে না। সরকার আরও জানায়, এই আইন দীর্ঘ দিন ধরে অবস্থান করে তার জায়গা করে নিয়েছে এবং কালের বিচারে তা উত্তীর্ণ। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা আশঙ্কা করেছে সুপ্রিম কোর্ট হয়ত এই আইনকে বাতিল করে দিতে পারে। তাই সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, সরকার নিজেই এই আইনটিকে পুনর্বিচার ও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করতে ইচ্ছুক। ততদিন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট যেন ১২৪এ ধারা নিয়ে শুনানি না চালায়। আসলে সরকার সময় কিনতে চাইছে, যাতে এই মামলার স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটতে পারে।
সরকারের চালাকি এর থেকেই নিশ্চিতভাবে ধরা পড়ে যাচ্ছে। তারা একই সাথে সুপ্রিম কোর্ট এবং জনগণ উভয়কেই ধোঁকা দিতে চাইছে। যে কোনও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর এমনকি সরকারের সঙ্গে সামান্য মতবিরোধকেওগলা টিপে মারতে একের পর এক কালা আইন সরকার আনছে। গণতন্ত্রের একেবারে ন্যূনতম শর্তকেও সরকার শেষ করে দিচ্ছে। আজ প্রয়োজন গণতান্ত্রিক চেতনা ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সমস্ত মানুষ এমনকি বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের এগিয়ে আসা, যাতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে বিজেপি সরকারের এই স্বৈরাচারী পদক্ষেপ রুখে দেওয়া যায় ও এই ভয়ঙ্কর আইন বাতিল করতে বাধ্য করা যায়।