বেসরকারি ব্যাঙ্ককেও এখন সরকারি লেনদেনে যুক্ত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এতদিন কয়েকটি বড় ব্যাঙ্ক বাদ দিলে বেসরকারি ব্যাঙ্কের উপর বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা তুলে নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে সমস্ত বেসরকারি ব্যাঙ্ক কর সহ বিভিন্ন রাজস্ব সংগ্রহ, পেনশন দেওয়া, স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে পরিষেবা দেওয়ার মতো সরকারি কাজ করতে পারবে। বিষয়টি রিজার্ভ ব্যাঙ্ককেও জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য হল, এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্ত ব্যাঙ্ক সমানভাবে দেশের অর্থনীতির বিকাশের কাজে লাগতে পারবে। তাঁর মতে, এর ফলে বেসরকারি ব্যাঙ্কের হাতে থাকা উন্নত প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগবে। প্রতিযোগিতা বাড়বে এবং তার সাথে সঙ্গতি রেখে গ্রাহক পরিষেবা উন্নত হবে ।
এই সব এত গালভরা কথার মধ্যে মূল যে বিপদটি লুকিয়ে রয়েছে তা হল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অস্তিত্বকে ধীরে ধীরে গুরুত্বহীন করে কোণঠাসা করে দেওয়া। এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারিকরণ করার নানা অজুহাত তারা খুঁজে বেড়াত। এবারের বাজেটে সরকার দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে বেসরকারিকরণ করবে বলে খোলাখুলি ঘোষণা করেছে। এরপর তাদের সব ধরনের কাজকর্ম বেসরকারি ব্যাঙ্কের হাতে তুলে দেওয়ার রাস্তাও খুলে দেওয়া হচ্ছে। ব্যাঙ্ককর্মীরা জানেন, সমস্ত ক্ষেত্রে না হলেও কিছু সরকারি লেনদেনে ব্যাঙ্কের মুনাফা হয়। কিছু ক্ষেত্রে তা হয় না, বা হলেও তা খুবই সামান্য। যেগুলিতে মুনাফা নেই, আছে কেবল পরিষেবা, বেসরকারি ব্যাঙ্ক সেগুলিতে আগ্রহী হবে না। তাদের লক্ষ্য, লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। এভাবে মোদি সরকার কৌশলে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে বেসরকারিকরণের পথে এক ধাপ এগোল।
গৌরীশঙ্কর দাস
খড়গপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর