কিছুদিন আগে বেলমুড়ি রেলওয়ে কোয়ার্টার্সের রাস্তার দু’ধারে রেলওয়ে এক্সটেশন প্রোজেক্টের অজুহাতে ঠিকাদার সংস্থা হঠাৎ বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলে। গত তিন বছর ধরে এই এলাকায় ‘দ্য গ্লোবাল গ্রিনফোর্স’ নামে একটি পরিবেশ সংগঠন রাস্তার দু’ধার এবং রেল সীমানা বরাবর দেবদারু, বট, অশ্বত্থ, অর্জুন, পাকুড়, আম, জাম, মেহগনি, আমলকি, তেঁতুল, শিশু সহ বিভিন্ন গাছ রোপণ করে বড় করে তুলছে। অথচ ঠিকাদার সংস্থাটি এইসব গাছ নিজেদের তৈরি দেখিয়ে বিল করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। এবার তারা গ্রিনফোর্স-এর উদ্যোগে লাগানো কিছু গাছের সাথে বহু পুরনো গাছও বিনা কারণে নষ্ট করে দিয়েছে।
কারখানা দূষণে জর্জরিত বেলমুড়ি এলাকায় শতবর্ষ প্রাচীন কিছু হেরিটেজ গাছ রয়েছে। আছে বহু বড় গাছ। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা জানিয়েছে, এই গাছগুলিকেও কেটে ফেলা হবে। গ্রিনফোর্সের সম্পাদক লেনিন বসুর নেতৃত্বে এলাকার মানুষ এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, ব্যাপক পরিবেশ দূষণের এই যুগে যখন যন্ত্রের সাহায্যে গাছ স্থানান্তর পৃথিবী জুড়ে প্রচলিত, তখন এ ভাবে গাছ ধ্বংস করা গর্হিত অপরাধ ছাড়া কিছু নয়। এই অন্যায় রুখতে গ্রিনফোর্সের স্থানীয় সদস্যরা সক্রিয় হন এবং হাওড়া জিএম-এর কাছে সংস্থার বিভিন্ন শাখা থেকে মেইল করে গাছ রক্ষার আবেদন জানানো হয়। রেলওয়ে মন্ত্রকের টুইটার হ্যান্ডেলেও টুইট করা হয়। চন্দননগর পরিবেশ অ্যাকাডেমি থেকে রেল দপ্তরের অ্যাডিশনাল ডেভেলপমেন্ট অফিসারের কাছে আবেদন জানানো হয়। জানানো হয় বনদপ্তরকেও। ২৩ ডিসেম্বর হাওড়া ডিআরএম অফিসে গ্রিনফোর্সের পোলবা-দাদপুর, ধনিয়াখালি শাখার সভাপতি অর্ক মালিক, বৈদ্যবাটি শাখার আহ্বায়ক হেমন্ত বেলেল, উত্তরপাড়া-ডানকুনি শাখার সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সহসম্পাদক কাকলি দত্তবসুকে নিয়ে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল হেরিটেজ গাছগুলির সংরক্ষণ সহ গ্রিনফোর্স রোপিত গাছগুলির সুরক্ষা অথবা স্থানান্তরের দাবিতে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে চিফ প্রোজেক্ট ম্যানেজারের কাছে ডেপুটেশন দেন। কপি পাঠানো হয়েছে হাওড়া বর্ধমান কর্ড লাইনের প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনকেও। দাবি আদায় না হলে এলাকার মানুষকে নিয়ে গাছগুলির সুরক্ষার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি নেওয়া হবে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।