কোথাও এক হাজার, কোথাও তিন হাজার, আবার কোথাও সাড়ে ছয় হাজার টাকা ফি একাদশে ভর্তিতে৷ সরকারি নিয়ম–নীতির কোনও বালাই নেই৷ যে যেমন পারছে তেমনই আদায় করছে৷ ভর্তির ক্ষেত্রে এমনই অবস্থা চলছে রাজ্যের সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে৷ এই যথেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে ১৪ জুন কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শককে (ডিআই) ঘেরাও করে ডি এস ও৷ বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরাও এই বিক্ষোভে সামিল হন৷ সরকারি স্কুলে শিক্ষা অবৈতনিক৷ সেখানে এইভাবে হাজার হাজার টাকা ছাত্রদের থেকে আদায় করা সম্পূর্ণ বেআইনি৷ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা নেওয়ার সরকারি নির্দেশিকা থাকলেও পরবর্তী ক্লাসে ভর্তি ফি–র ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম–নীতি নেই৷ এর ফলে বিভিন্ন স্কুলে বিভিন্ন রকম টাকা আদায় চলছে৷
এই ফি–বৃদ্ধির বিরুদ্ধে স্কুলে স্কুলে ছাত্র–ভিভাবকদের সংগঠিত করে বিক্ষোভ দেখিয়ে ডেপুটেশন দিয়েছে ডিএসও৷ একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অত্যধিক হারে ফি নেওয়া বন্ধ করতে এবং এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করতে ৫ জুন, মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের আগে ডি আই–কে স্মারকলিপি দেওয়া হয়৷ এক সপ্তাহ কেটে গেলেও তিনি কোনও পদক্ষেপ করেননি৷ এর মধ্যে স্কুলগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়৷ ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ে৷ এই অবস্থায় ডিআইকে ঘেরাও করার কর্মসূচি নেয় ডিএসও৷ দীর্ঘক্ষণ ঘেরাওয়ের পর ডিআই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হন৷ ১৮ জুন ডিআই ডিএসও প্রতিনিধিদলকে ডেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নির্ধারিত ফি ঘোষণা করেন– যা ল্যাবরেটরি যুক্ত ক্লাসে ২৯৫ টাকা এবং সাধারণ ক্লাসে ২৫০ টাকা৷ তিনি জানান, যে সব স্কুল বেশি ফি নিয়েছে তাদের সমস্ত হিসেব চেয়ে পাঠানো হয়েছে৷ তা দেখে অতিরিক্ত ফি ফেরত সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ ডি এস ও–র কলকাতা জেলা সম্পাদক কমরেড প্রভাশিস দাস এই জয়ের জন্য ছাত্রদের সংগ্রামী অভিনন্দন জানিয়েছেন৷
(৭০ বর্ষ ৪৪ সংখ্যা ২২ জুন, ২০১৮)