এস ইউ সি আই (সি)-র সাধারণ সম্পাদক কমরেড প্রভাস ঘোষ ২৫ নভেম্বর এক বিবৃতিতে বলেন, আম্বানি, টাটা, বিড়লা, মাহিন্দ্রাদের মতো বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলির ‘অভিজ্ঞতা, দক্ষতা এবং কর্মকুশলতাকে কাজে লাগানো’র অজুহাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তাদের ব্যাঙ্ক খোলার অনুমতি দিয়েছে। এই নীতি ব্যাঙ্কের সাধারণ গ্রাহক তথা দেশের জনসাধারণের জন্য অশুভ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। নিশ্চিত ভাবেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অনুমোদনে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে শুধুমাত্র শাসক ধনকুবের গোষ্ঠীকেই শক্তিশালী করা হবে। বৃহৎ কর্পোরেট সংস্থাগুলি যারা ব্যাঙ্ক থেকে ২০ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে শোধ করেনি (এনপিএ), এর সুযোগে তারা নিজেদের নতুন ব্যাঙ্কে জনগণের জমা টাকা দিয়েই সেই ঋণ মেটাতে পারবে। এমনিতেই ব্যাঙ্কের বড়কর্তারা স্বীকার করেন যে, বৃহৎ কর্পোরেট গোষ্ঠীতে একবার টাকা ঢালার পর, সে টাকা কোথায় যায়, তার হিসাব মেলা কঠিন। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিতে একের পর এক কেলেঙ্কারি ঘটেই চলেছে। এমনকি এনপিএ-র কারণে হওয়া ক্ষতি পূরণ করতে গ্রাহকদের জমানো টাকা ব্যবহার করার এবং প্রস্তাবিত ‘রেজলিউশন অথরিটি’ ব্যবহার করে পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা চালু হতে চলেছে। জানা গেছে, সাধারণ গ্রাহকদের ক্ষেত্রে টাকা জমা রাখার শর্তগুলি পরিবর্তন করার, এমনকি বাতিল করার সম্পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হবে এই রেজলিউশন অথরিটিকে।
১৯৬৯ সালে ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রীয়করণের সময় যুক্তি তোলা হয়েছিল যে, বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি তাদের সম্পদ ব্যক্তিমালিকদের স্বার্থে কাজে লাগায় এবং ফাটকাবাজ ও মজুতদারদের খাদ্যদ্রব্য, ওষুধ, এমনকি বেবিফুডের কালোবাজারি করার জন্য টাকা ধার দেয়। আজ সেই যুক্তি কি তার কার্যকারিতা হারিয়েছে? বর্তমানে বিশ্বায়নের নির্দেশ মেনে এবং বিপুল এনপিএ-র সংকট ঠেকিয়ে রাখতে, জনসাধারণের সম্পদ নয়ছয় করে তাদের বিপদগ্রস্ত করছে যে শাসক পুঁজিপতি শ্রেণি, তাদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ব্যাপক বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে।
আমরা সরকারের এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করছি এবং এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ জানানোর জন্য জনসাধারণের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।