বীরভূমের পাথর খাদান শ্রমিকদের কাছে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত দৈনিক ৩৭০ টাকা হারে ন্যূনতম মজুরি ও পিএফ–ওভার টাইম–পেনশন, মেডিকেল সুবিধা, সরকারি ছুটির দিনে সবেতন ছুটি ইত্যাদি প্রায় স্বপ্নের বিষয়৷ এ ব্যাপারে বৈধ বা অবৈধ সব খাদান মালিকই এক৷ কিন্তু এর মধ্যেও এ আই ইউ টি ইউ সি অনুমোদিত রাজগাঁও স্টোন কোম্পানি লেবার ইউনিয়ন এই কোম্পানির খাদানে দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সহ সমস্ত সুবিধা আদায় করতে সমর্থ হয়েছে৷ এর ফলে অন্যান্য খাদানের শ্রমিকদের মধ্যেও আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে৷
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বীরভূম জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য এবং রাজগাঁও স্টোন কোম্পানির অন্যতম অংশীদার আসগর আলি ওরফে গাজলু পুলিশ–প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে এই ইউনিয়নকে ভাঙার মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ সে নিজে আরও বেশ কয়েকটি অবৈধ খাদানের মালিক৷ লক্ষ লক্ষ টাকা ছড়িয়েও বেশিরভাগ শ্রমিককে কিনতে ব্যর্থ হয়ে এ আই ইউ টি ইউ সি–র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি কমরেড এ এল গুপ্তা ও খাদান ইউনিয়নের নেতাদের নামে তারা মিথ্যা এফআইআর দায়ের করেছে৷ তার এবং অন্যান্য অবৈধ খাদান মালিকদের ইচ্ছা অনুসারে মুরারই থানার ওসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ২৯ আগস্ট গভীর রাতে ইউনিয়নের সহ সম্পাদক কমরেড আনসারুল হকের বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়৷ কমরেড আনসারুল হককে না পেয়ে তাঁর স্ত্রী ও অন্য মহিলাদের অকথ্য গালিগালাজ, এমনকী শারীরিক নিগ্রহ করে৷
এই হামলার প্রতিবাদে ১ সেপ্টেম্বর জেলার শ্রমিক নেত্রী কমরেড আয়েষা খাতুনের নেতৃত্বে প্রায় আট শতাধিক শ্রমিকের মিছিল মুরারই শহর পরিক্রমার পর থানা অবরোধ করে৷ পুলিশ প্রথম থেকেই হুমকি দিয়ে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা চালিয়ে গেছে৷ অবশেষে শ্রমিকদের দৃঢ়তার সামনে ওসি আলোচনায় বসতে বাধ্য হন৷
এ আই ইউ টি ইউ সি–র রাজ্য সম্পাদক কমরেড দিলীপ ভট্টাচার্য ৩০ আগস্ট শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের সাথে দেখা করে অবিলম্বে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া ও সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান৷ তিনি শ্রমমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, সমস্ত শ্রমিককে ন্যূনতম মজুরি প্রদানে মালিকদের বাধ্য করতে হবে৷
(৭১ বর্ষ ৬ সংখ্যা ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮)