বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্যের একের পর এক বিতর্কিত পদক্ষেপ যেভাবে বিশ্বভারতীর ঐতিহ্যের ওপর আঘাত হানছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে চিঠি দিল এস ইউ সি আই (সি)। আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ২৭ ডিসেম্বর লেখা এক চিঠিতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সম্পাদক কমরেড চণ্ডীদাস ভট্টাচার্য লিখেছেন, সম্প্রতি সম্মাননীয় অধ্যাপক নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি বেআইনি ভাবে দখল করে রাখার অভিযোগ তুলেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এই অশুভ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর অভিযোগ এবং উপাচার্যের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান ঐতিহ্যবিরোধী সাম্প্রতিক আরও কিছু বিতর্কিত কার্যকলাপ, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও আশ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দা ও দেশের মানুষকে পীড়িত, ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন করেছে।
চিঠিতে তিনি বলেন, এ কথা সকলেরই জানা যে, অধ্যাপক অমর্ত্য সেন শাসক দল বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কিছু গুরুতর আদর্শগত প্রশ্ন তুলেছিলেন, যা তাদের অস্বস্তিতে ফেলেছে। সম্ভবত তারই পাল্টা হিসাবে শাসক দলের চূড়ান্ত অনুগত ও আজ্ঞাবহ বর্তমান উত্তরপাচার্য এই ধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।
উপাচার্যের নেতৃত্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কীভাবে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে এবং বিরোধিতার মুখে পড়ে বয়ান বদল করেছে, বিস্তারিত ভাবে তা উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। কমরেড ভট্টাচার্য চিঠিতে আরও বলেন, শিক্ষার সঙ্গে সামান্যতম সংশ্লিষ্ট না হওয়া সত্তে্বও শান্তিনিকেতনে দলীয় কর্মসূচিতে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বিশ্বভারতীতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন উপাচার্য যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের সঙ্গে একেবারেই মানানসই নয়। শুধু তাই নয়, সফরে এসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যবহৃত, তাঁর স্মৃতিজড়িত ও সংরক্ষিত চেয়ার, আজ পর্যন্ত যেটিতে বসার ধৃষ্টতা আর কেউ দেখাননি, সেটিতে অমিত শাহকে উপবেশন করতে দেখে দেশের সর্বস্তরের মানুষ বেদনাহত ও হতবাক হয়ে গেছে।
চিঠিতে উপাচার্যের নেতৃত্বাধীন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই ধরনের জঘন্য কার্যকলাপ বন্ধ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহৎ আদর্শ ও বিশ্বভারতীর মহান ঐতিহ্য রক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে আচার্য প্রধানমন্ত্রীকে।