লিগাল সার্ভিস সেন্টারের সভাপতি বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত এবং সম্পাদক আইনজীবী ভবেশ গাঙ্গুলি ২৬ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে এক স্মারকলিপি দিয়ে বিলকিস বানো গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দণ্ডিত ১১ জন দুষ্কৃতীর সাজা মকুব প্রত্যাহার করার আবেদন জানিয়েছেন। তাঁরা স্মারকলিপির কপি কেন্দ্রীয় সরকারের আইনমন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, গুজরাট হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার কাছে পাঠিয়েছেন।
স্মারকলিপিতে তাঁরা বলেছেন, ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময় গণধর্ষণ ও গণহত্যার এই মামলা মুম্বই হাইকোর্টের দৃষ্টিতে অপরাধের ভয়াবহতার দিক থেকে বিরলতম। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত উক্ত ১১ জন অপরাধীকে স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ উপলক্ষে মুক্তিদান চরমতম লজ্জার। আরও লজ্জার যে, শাসক দল তাদের বীরের মর্যাদা দিয়ে মালা পরিয়েছে। এই মামলার বিচারক ইউ ভি সালভি এবং আইনজীবী শোভার স্পষ্ট বক্তব্য–১৯৯২ সালের সাজা মকুব নীতিতে বলা আছে ধর্ষক, সন্ত্রাসবাদী এবং অর্থ পাচারকারীর সাজা মকুব করা যাবে না।
সমস্ত কিছুকে পদদলিত করে গুজরাট সরকারের ‘সাজা মকুব’ কমিটি তাদের যে মুক্তি দিল তা সাধারণভাবে সমস্ত জনগণ, বিশেষভাবে সংখ্যালঘুদের কাছে আতঙ্কের বার্তাবাহী। ইতিমধ্যেই বিলকিস বানোর গ্রাম থেকে সংখ্যালঘুরা পালাতে শুরু করেছেন। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন। লিগাল সার্ভিস সেন্টারের দাবি, অপরাধীদের সাজা মকুবের রায় অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
এআইএমএমএসের প্রতিবাদঃ বিলকিস কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ অপরাধীর মুক্তিদানের প্রতিবাদে অল ইন্ডিয়া মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। পথসভা, মিছিল, স্লোগান স্কোয়াডের মধ্যে দিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। এছাড়াও প্রতিটি জেলায় জেলায় গ্রুপ বৈঠক, আলোচনা সভা, ছোট ছোট মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। এই ঘটনা সাধারণভাবে সকল মহিলা এবং বিশেষভাবে মুসলিম জনগোষ্ঠীর পক্ষে যে বিপজ্জনক তা ব্যাখ্যা করেন নেতৃবৃন্দ। নারীসমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আবেদন জানান তাঁরা।
বাঁকুড়ায় সিপিডিআরএস-এর সভাঃ ২৮ আগস্ট বাঁকুড়া কোর্ট প্রাঙ্গণ সভাগৃহে সিপিডিআরএস-এর জেলা শাখার উদ্যোগে ‘স্বাধীনতার ৭৫ বছর ও মানবাধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক প্রণব কুমার দত্ত। সভার শুরুতে গুজরাটে বিলকিস বানোর গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের অন্যায় ভাবে মুক্ত করার প্রতিবাদে নিন্দা প্রস্তাব পাঠ করেন আইনজীবী সুব্রত দাস মোদক। বক্তব্য রাখেন অশোক কুমার চক্রবর্তী। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন অধ্যাপক অচিন্ত্য মাজি। সংগঠনের উপদেষ্টা ডাঃ সজল বিশ্বাস মানবাধিকার রক্ষা আন্দোলনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে সকল সংবেদনশীল মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।